ঘরের মাঠে বাংলাদেশ দল কেমন তা ক্রিকেট খেলুড়ে দেশগুলোর অজানা নয়। আর তা যদি হয় নিজেদের প্রিয় ফরম্যাট ওয়ানডে, তাহলেতো কথাই নেই। গত ডিসেম্বরে সিরিজ হারিয়েছে ভারতকে, এবার সামনে ইংল্যান্ড। মাঠে নামার আগে তামিম ইকবালদের সমীহ করছে ইংলিশরা। সঙ্গে এটিও মনে করিয়ে দিয়েছে, ‘ইংল্যান্ড কিন্তু বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন।’
সিরিজ শুরুর আগের দিন মঙ্গলবার বিকেলে সংবাদ সম্মেলনে অলরাউন্ডার মঈন আলী এমন মন্তব্য করেন। মন্তব্য নয় আসলে এটি যেন তামিম ইকবাল-সাকিব আল হাসানদের প্রতি বার্তা। অর্থ্যাৎ ঘরের মাঠে তোমরা যতই শক্তিমান হও না কেন, আমরা এই ফরম্যাটের বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন। হেলা ফেলায় নেওয়া যাবে না।
‘কে ফেভারিট বিষয়টা এতো গুরুত্বপূর্ণ না। নিজেদের কন্ডিশনে বাংলাদেশ বরাবরই ভালো। আমরা শেষ ১০ ম্যাচে ৮টা হেরেছি। কিন্তু আমরা বিশ্বচ্যাম্পিয়ন। লম্বা সময়ে আমরা আমাদের সেরা দলটা পাইনি। কিন্তু এখন উড আছে, জোফরা আছে। উইল জ্যাকসও দলে জয়েন করেছে।’ —বলছিলেন মঈন।
প্রসঙ্গটি উঠে আসে ইংল্যান্ডের সাম্প্রতিক পারফরম্যান্স নিয়ে। ওয়ানডেতে শেষ ১০ ম্যাচের ৮টিতেই হেরেছে সফরকারীরা। ১টি ম্যাচের ফল হয়নি আর মাত্র ১টিতে জয় তাদের। সিরিজ হেরেছে ভারত, অস্ট্রেলিয়া ও দক্ষিণ আফ্রিকার সঙ্গে।
বাংলাদেশের মাটিতে ইংলিশদের প্রধান বাধা হতে পারে মন্থর উইকেট। সাকিবদের ঘূর্ণিই তাদের প্রধান প্রতিপক্ষ। মাত্র কয়দিন আগেই বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে (বিপিএল) খেলে যাওয়া মঈন সেটি ভালো করেই জানেন। সে অনুযায়ী ব্রিটিশরা নিজেদের প্রস্তুতও করছেন অনুশীলনে।
মঈন বলেন, ‘আপনি যখন উপমহাদেশে খেলতে আসবেন, এমনটা ভেবেই আসতে হবে যে ভালো স্পিন বোলিংয়ের বিপক্ষে পরীক্ষা দিতে হবে। বাংলাদেশ দল হিসেবে খুব ভালো, বিগত কয়েক বছরে দল হিসেবে তারা অনেক উন্নতি করেছে। শুধু স্পিনাররাই না তাদের পেসাররাও মানসম্মত। আমরা আমাদের সেরা প্রস্তুতি নিয়েই খেলতে নামব। নেটে বাঁহাতি স্পিনার ও ডানহাতি অফ স্পিনারদের বিপক্ষে অনুশীলন করেছি, আমরা তাদের শক্তি সম্পর্কে অবগত। সেভাবেই প্রস্ততি নিয়েছি।’
অনুশীলনে ইংলিশদের নেট বোলারদের বিপক্ষে বেশ সময় দিতে দেখা গেছে। বিশেষ করে যারা বাঁহাতি স্পিনার আছেন তাদের বিপক্ষেই ব্যাট হাতে নিজেদের ঝালিয়ে নিয়েছেন ফিল সল্টরা। কারণ, সাকিবের সঙ্গে তাইজুল যদি খেলে তাহলে এই দুই বাঁহাতি স্পিনার বিপদে ফেলতে পারে বাটলারদের। সেই অনুযায়ী অনুশীলন সেশনে বাঁহাতিদের মোকাবেলা করার কৌশল রপ্ত করেন বেশ সময় ধরে।
অন্যদিকে মন্থর উইকেট হলেও বাংলাদেশকে তারা পেস আক্রমণ দিয়েও আঘাত করতে চায়। মঈনের সঙ্গে দলে আছেন আদিল রশিদ-রেহান আহমেদের মতো স্পিনার। আর গতির ঝড় তুলতে প্রস্তুত জোফরা আর্চার কিংবা মার্ক উডরা।
তাইতো মঈন বলছেন, ‘আমাদের দলে ৩ জন স্পিনার আছে। তবে বাংলাদেশ বলে যে শুধু ৩ জন স্পিনার এনেছি তা নয়। পেসারদের ক্ষেত্রে আমরা তাদের সবখানে নিয়ে যাই। কারণ, তারা গতিময় বোলিং করে। যেকোন উইকেটে ফাস্ট বোলিং দলের জন্য বিলাসিতা। অনেক সময় এমন উইকেটে ফাস্ট বোলিং খেলতেও অসুবিধা হয় প্রতিপক্ষের। কারণ, ওরা শুধু ফাস্ট বোলার না, খুব ভালো মানের ফাস্ট বোলার। এটাই বড় পার্থক্য গড়ে দেয়।