মাধ্যমিক শিক্ষা জাতীয়করণের দাবীতে মানিকগঞ্জে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছে বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতি (বিটিএ)। আজ সোমবার দুপুরে মানিকগঞ্জ জেলা শহরের প্রেসক্লাব চত্ত্বরে আয়োজিত মানববন্ধন কর্মসূচিতে অংশ নেন জেলার বিভিন্ন উপজেলার মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে কর্মরত শিক্ষকেরা।

বক্তব্য রাখেন সংগঠনটির জেলা শাখার সভাপতি কাশিনাথ সরকার, সাধারণ সম্পাদক মজিবুর রহমান, সাংগঠনিক সম্পাদক আরশেদ আলী, নির্বাহী সদস্য ও ইব্রাহিমপুর ঈশ্বরচন্দ্র উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আলতাফ হোসেন খান, সদর উপজেলা শাখার সভাপতি দীনবন্ধু রায় ও সাধারণ সম্পাদক নূরু মিয়া।

সাধারণ সম্পাদক মজিবুর রহমান মাষ্টার বলেন, ‘শিক্ষাক্ষেত্রে সরকারি ও বেসরকারি অনেক বৈষম্য রয়েছে। বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকগণ মাত্র ২৫% উৎসব ভাতা, এক হাজার টাকা বাড়ি ভাড়া ৫০০ টাকা চিকিৎসা ভাতা পান। অবসরে যাবার পর অবসর সুবিধা ও কল্যাণ ট্রাস্টের টাকা পেতে বছরের পর বছর অপেক্ষা করতে হয়। ফলে অনেক শিক্ষক-কর্মচারী টাকা পাওয়ার পূর্বেই অর্থাভাবে বিনা চিকিৎসায় মারা গেছেন যা অত্যন্ত দুঃখজনক। তাছাড়াও, কোন প্রকার বাড়তি সুবিধা ব্যতিরেকেই অবসর সুবিধা ও কল্যাণ ট্রাস্ট খাতে শিক্ষক-কর্মচারীদের বেতন থেকে অতিরিক্ত ৪% কর্তন করা হচ্ছে। নানাকারণে স্বীকৃতিপ্রাপ্ত অনেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এখনও এমপিওভূক্ত হতে পারেনি। বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধান শিক্ষকের বেতন স্কেল সরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের চেয়ে একধাপ নীচে প্রদান করা হয়। আর, সহকারি প্রধান শিক্ষকদের উচ্চতর স্কেল প্রদান না করার ফলে উচ্চতর স্কেলপ্রাপ্ত সিনিয়র শিক্ষকদের বেতন স্কেল ও সহকারি প্রধান শিক্ষকদের বেতন স্কেল সমান হওয়ায় সহকারি প্রধান শিক্ষকদের মধ্যে দীর্ঘদিনের অসন্তোষ রয়েছে। ‘

সভাপতি কাশিনাথ সরকার বলেন, ‘এমপিওভুক্ত বেসরকারি শিক্ষক-কর্মচারীদের বদলীর কোন সুযোগ নেই। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের চাকুরীর বয়স ৬৫ বছর করা হলেও স্কুল কলেজের শিক্ষক-কর্মচারীদের চাকুরীর বয়স সীমা এখনও ৬০ বছরই রয়েছে। জাতীয় শিক্ষানীতি-২০১০ এ শিক্ষক নিয়োগ কমিশন গঠনের কথা বলা হলেও এখনও তা গঠন করা হয়নি। শিক্ষা প্রশাসনের কোন স্তরেই এমপিওভূক্ত শিক্ষকদের পদায়নের কোন সুযোগ রাখা হয়নি। প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতির ন্যুনতম শিক্ষাগত যোগ্যতা স্নাতক পাস করা হলেও মাধ্যমিক স্তরে ম্যানেজিং কমিটি/গভর্নিং বডির সদস্যদের ন্যুনতম শিক্ষাগত যোগ্যতা নির্ধারিত না থাকায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান পরিচালনায় নানাবিধ সমস্যা তৈরি হচ্ছে। ২০১০ সালে সময়োপযোগী একটি শিক্ষানীতি অনুমোদিত হলেও তা এখনও অনেকাংশেই বাস্তবায়িত হয়নি। ‘

নির্বাহী সদস্য আলতাব হোসেন খান বলেন, ‘বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যখন বিরোধী দলীয় নেতা ছিলেন, তখন তিনি বলেছিলেন সরকারি-বেসরকারি শিক্ষকদের বিদ্যমান বৈষম্য তিনি নিরসনের ব্যবস্থা করবেন। কিন্তু আজও এসব বৈষম্য দুর হয়নি।’

বক্তারা অবিলম্বে সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের বিদ্যমান বৈষম্য দূর করতে প্রধান মন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেন। পরে, প্রধান মন্ত্রী বরাবর একটি স্মারকলিপি দেন তারা।