নিউজ ডেস্ক:
দেশের কৃষিখাতের চাহিদা মেটাতে রাষ্ট্রীয় চুক্তির আওতায় মরক্কো থেকে প্রথম লটের ৪০ হাজার মেট্রিক টন ডিএপি সার আমদানির উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। প্রতি মেট্রিক টনের দাম ৬১০ ডলার হিসেবে এই সার আমদানিতে ব্যয় হবে দুই কোটি ৪৪ লাখ ডলার বা ২৬২ কোটি ১২ লাখ ৯২ হাজার টাকা।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ফসল উৎপাদনে ডাই-অ্যামোনিয়া ফসফেট (ডিএপি) সার একটি গুরুত্বপূর্ণ উপকরণ। দেশের কৃষি উৎপাদনে ডিএপি সারের চহিদা মেটানোর লক্ষ্যে বিএডিসি’র মাধ্যমে মরক্কোর রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান ওসিপি থেকে রাষ্ট্রীয় চুক্তির আওতায় ২০১০-২০১১ অর্থ বছর থেকে ডিএপি সার আমদানি করা হচ্ছে। নিরাপত্তা মজুদসহ বাংলাদেশে ডিএপি সারের বাৎসরিক চাহিদা প্রায় ১৯ লাখ মেট্রিক টন।
এরমধ্যে বিএডিসি রাষ্ট্রীয় চুক্তির মাধ্যমে প্রায় ১ লাখ মেট্রিক টন ডিএপি সার সরবরাহ করে থাকে। তাছাড়া, বিসিআইসি প্রায় ১ লাখ মেট্রিক টন ডিএপি সার উৎপাদন করে থাকে। চাহিদার অবশিষ্ট প্রায় ৭ লাখ মিট্রিক টন ডিএপি বেসরকারি পর্যায়ের মাধ্যমে সরবরাহ করা হয়। বিএডিসি’র মাধ্যমে মরক্কো থেকে রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে চুক্তির মাধ্যমে ডিএপি সার আমদানির বিষয়ে অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির অনুমোদন রয়েছে।
সূত্র জানায়, বিএডিসি এবং ওসিপি, মরক্কোর মধ্যে ইতিপূর্বে সম্পাদিত চুক্তির কার্যক্রম সম্পন্ন হওয়ায় বিদ্যমান চুক্তির শর্তগুলো অভিন্ন রেখে ২০২২ সালের ২৩ অক্টোবর চুক্তি নবায়ন করা হয়। বিএডিসি ওই চুক্তির আওতায় মরক্কো থেকে ৪০ হাজার মেটিক টনের ১৩টি লটে মোট ৫ লাখ ২০ হাজার মেট্রিক টন ডিএপি সার আমদানি করবে। রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে সরাসরি ডিএপি সার ক্রয়ের জন্য ওসিপি, মরক্কো ও বিএডিসি’র মধ্যে স্বাক্ষরিত চুক্তির মূল্য নির্ধারণ পদ্ধতি অনুযায়ী এই সার আমদানি করা হবে।
সূত্র জানায়, ওসিপি, মরক্কো’র সঙ্গে বিএডিসি’র সম্পাদিত চুক্তি অনুযায়ী সারের আন্তর্জাতিক বাজার দর সংক্রান্ত দুটি প্রকাশনা আরগুস ফসফেট ও ফার্টিকন এ প্রকাশিত এফওবি দরের গড় থেকে ১০ ডলার বিয়োগ করে আমদানিতব্য সারের মূল্য নির্ধারণ করা হয়। মরক্কো থেকে প্রথম লটের ডিএপি সার আমদানির জাহাজীকরণের সময়সীমা ২০২৩ সালের ১-৫ এপ্রিল সময়কালে নির্ধারণ করে প্রাইস অফার চাওয়ার প্রেক্ষিতে চুক্তির মূল্য নির্ধারণ পদ্ধতি অনুযায়ী ওসিপি প্রতি মেট্রিক টনের জন্য ৬১০ ডলার দরপ্রস্তাব করে।
সূত্র জানায়, মরক্কো থেকে প্রথম লটের ৪০ হাজার মেট্রিক টন ডিএপি সার আমদানিতে প্রতি মেট্রিক টন সারের দাম ৬১০ ডলার হিসাবে মোট ব্যয় হবে দুই কোটি ৪৪ লাখ ডলার। সোনালী ব্যাংকের ১৪ মার্চ তারিখের বিনিময় হার অনুযায়ী প্রতি ডলার ১০৭.৪৩ টাকা হিসাবে ২৬২ কোটি ১২ লাখ ৯২ হাজার টাকা ব্যয় হবে।
এর আগে সর্বশেষ ২০২২ সালের নভেম্বর মাসে ডিএপি সার আমদানি করা হয়। সে সময় প্রতি মেট্রিক টন ডিএপি সারের দাম ছিল ৭১০ ডলার। সে হিসেবে নতুন চুক্তিতে প্রতি মেট্রিক টন ডিএপি সার আমদানি করতে ১০০ ডলার কমে পাওয়া যাচ্ছে।
এ সংক্রান্ত একটি ক্রয় প্রস্তাবে অনুমোদনের জন্য অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির পরবর্তী সভায় উপস্থাপন করা হবে বলে জানা গেছে।