1. hasanchy52@gmail.com : admin :
  2. amarnews16@gmail.com : Akram Hossain : Akram Hossain
শুক্রবার, ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ০৩:৪০ পূর্বাহ্ন

বিশ্ব পানি দিবস উপলক্ষ্যে ধলেশ্বরী নদী বাঁচাও আন্দোলন কমিটির আলোচনা ও মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত

  • প্রকাশের সময় : বুধবার, ২২ মার্চ, ২০২৩
  • ১৭৪ বার দেখা হয়েছে

রাশেদা আক্তারঃ

“জল ও জীবিকা, জলের অপচয় রোধ, পানির উৎসকে বাঁচিয়ে রাখা” প্রতিপাদ্য বিষয়কে সামনে রেখে আজ ২২ মার্চ ২০২৩ বিশ্ব পানি দিবস উপলক্ষ্যে ধলেশ্বরী নদী বাঁচাও আন্দোলন কমিটি মানিকগঞ্জ এর আয়োজনে এবং বারসিক এর সহযোগিতায় স্যাক কার্যালয়ে আলোচনা ও মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়।

মতবিনিময় সভার সভাপতিত্ব করেন ধলেশ্বরী নদী বাঁচাও আন্দোলন কমিটির যুগ্ম আহবায়ক ও ডেইলী স্টার এবং আর টিভি প্রতিনিধি জাহাঙ্গীর আলম বিশ্বাস। সভায় ধলেশ্বরী নদী বাঁচাও আন্দোলন কমিটির সদস্য ও নদী পাড়ের জনগণ অংশগ্রহণ করেন।

বারসিক এর আঞ্চলিক সমন্বয়কারী বিমল রায়ের সঞ্চালনায় আলোচনার শুরুতেই ধলেশ^রী নদী বাঁচাও আন্দোলন কমিটির আহবায়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা আজহারুল ইসলাম আরজু ভাইয়ের স্মরণে দাঁড়িয়ে ১ মিনিট নিরবতা পালনের মধ্য দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়।

সভায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন ধলেশ্বরী নদী বাঁচাও আনেদালন কমিটির সদস্য সচিব আ: হামিদ চান্দু। তিনি বলেন, ধলেশ্বরী নদী বাঁচাও আন্দোলন কমিটি গঠন করা হয়েছিল বীর মুক্তিযোদ্ধা আজহারুল ইসলাম আরজু ভাইয়ের নেতৃত্বে।  আজ আজহার ভাই আমাদের মাঝে নেই। আন্দোলনের বড় অর্জন ধলেশ্বরী নদী খনন হয়েছে। আমরা যারা এই কমিটির সদস্য হিসেবে আছি সবাই মিলে এই আন্দোলনকে সামনে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া। সকলে মিলে কাজ করা।”

সমাজকর্মী ইকবাল খান বলেন, আমরা অনেক সময় অনেক কাজ করি। না বুঝেই কাজ করি। ফলে কোনো কাজই আর করা হয়ে উঠে না। তাই আমাদের জেনে বুঝে কাজ করা উচিত। মানিকগঞ্জের সকল খাল, নদী রক্ষার দাবী জানাই।”

সিংগাইর উপজেলার বলধারা ইউনিয়নের নূরানী গঙ্গা নদীর পাড়ের কৃষানী সেলিনা বেগম বলেন, নদীতে এখন পানি নাই। নদীতে ধুলা উড়ে। আমরা নূরানী গঙ্গা নদী খননের জন্য জেলা প্রশাসকের কাছে স্মারকলিপি দিয়েছি। আপনারা নদী খনন নিয়ে কাজ করেন। আমরা আপনাদের সাথে আছি।”

সদর উপজেলার জাগীর ইউনিয়নের ধলেশ্বরী নদী পাড়ের লুৎফর রহমান বলেন, পানি এমন একটা জিনিস যা ছাড়া জীবন বাঁচে না। অথচ আমরা এর মূল্য বুঝি না। বিভিন্ন মিল-কারখানার বর্জ্য  ফেলে পানি দূষিত করছে। নদীতে গোসল করা যায় না, গরু ঝাপানো যায় না, কাপড় কাঁচা যায় যায় না। এখন নদীতে মাছ নাই। নদীকে রক্ষা করা সবার দায়িত্ব। আমাদের বদঅভ্যাস আছে নদীতে ময়লা ফেলার। বদঅভ্যাস ত্যাগ করতে হবে। আসুন আমরা সবাই মিলে নদী রক্ষায় কাজ করি।”

প্রথমআলো প্রতিনিধি আব্দুল মোমিন বলেন, আগামীতে যদি কোনো বিশ্ব যুদ্ধ হয় সেটা হবে এই পানি নিয়েই। ঢাকা আরিচা মহ সড়কে গেলে মরুভূমির মত মনে হয়। নদী নাই, গাছ নাই। পরিবেশ রক্ষায় বৃক্ষরোপনের দাবী জানাচ্ছি। ধলেশ্বরী নদী আন্দোলন এটা বিফলে যায়নি। আন্দোলনের ফলে নদী খনন হয়েছে। মানিকগঞ্জের উত্তর সেওতার ভিতর দিয়ে যে খাল ছিল তা ভরাট হয়ে যাচ্ছে। যদিও এটি ব্যক্তি মালিকানাধীন। কিন্তু আইনে আছে চলমান খাল ভরাট করা যাবে না। এটা রক্ষার উদ্যোগ নেওয়া দরকার। তরুণ প্রজন্মকে উদ্ধোদ্ধ করা, সম্পৃক্ত করা এই আন্দোলনে। এই ধলেশ্বরী নদী বাঁচাও আন্দোলনের মাধ্যমে সরকারী অফিসে একটা ধাক্কা খায়। তার উদাহরণ ধলেশ্বরী নদী খনন। এই আন্দোলনের শুরু থেকেই সাথে ছিলাম, সাথে থাকবো।”

সমাজকর্মী আ: সালাম বলেন, এই আন্দোলনের সাথে জড়িত আছি। এখান থেকে আমরা আশার আলো দেখি। যদি এই কমিটির সদস্য হিসেবে যুক্ত হওয়ার সুযোগ থাকে তাহলে সদস্য হিসেবে যুক্ত হতে চাই।”

সুজনের সভাপতি ইকবাল হোসেন কচি বলেন, সব কাজেই পানি লাগে। পানি ছাড়া কোনো কিছুই টিকতে পারে না। পানির প্রবাহ সচল রাখার জন্য কাজ করা উচিত। জনগণের স্বার্থ আছেই বলেই আমরা এই আন্দোলন করছি। শহরের খাল মানিকগঞ্জের মানুষের প্রাণ। এটা রক্ষা করা জরুরী।”

বীর মুক্তিযোদ্ধা ইঞ্জনিয়ার শহীদুল ইসলাম ফারুক বলেন, পানি না থাকলে নদী বাঁচবে না। এখন বন্যা হয় না। আমরা দেখেছি তিল্লীর মুখ কেটেছে। কিন্তু যেভাবে কেটেছে তাতে নদীতে পানি থাকবে না। নদী ভরাট হয়ে যাবে। পুরো নদী কাটা দরকার। এখন ধলেশ্বরী নদী দিয়ে হেঁটে যাওয়া যায়। নদী এখন খুঁজতে হয় কোথায় ছিল। নদী বাঁচানোর জন্য আরও সংগঠন নিয়ে আন্দোলন শক্তিশালী করতে হবে। প্রতি বছর নদী কাটতে হবে। একবছর কাটলে হবে না।”

সমাজকর্মী এ্যাড: দীপক কুমার ঘোষ বলেন, সামাজিক আন্দোলন কখনো সংবিধান মেনে হয়না। কমিটির পূর্ণাঙ্গ তালিকা করা যায় কিনা তা বিবেচনা করা। শুধু ধলেশ্বরী নদী নয় মানিকগঞ্জের সবগুলো নদী রক্ষা করা হবে। নদী বাঁচাও” নামে এমন একটি কমিটি করা যায় কিনা যা মানিকগঞ্জের সব নদী রক্ষায় কাজ করবে।”

আলোচনা সভার সভাপতি, ধলেশ্বরী নদী বাঁচাও আন্দোলন কমিটির যুগ্ম আহবায়ক জাহাঙ্গীর আলম বিশ্বাস বলেন, আজহার ভাই আমাদের মাথার উপর ছায়ার মত ছিলেন। আমাদের কমিটি শক্তিশালী করা প্রয়োজন। প্রতি দিনই কোনো না কোনো নদী মরে যাচ্ছে। খাল-বিল, নদী-নালার পানি প্রবাহ না থাকলে পানি নিয়ে হাহাকার উঠবে। খাল দূষণ, নদী দূষণ বন্ধ হচ্ছে না। ধলেশ্বরী নদী আন্দোলন প্রয়োজন ছিল আমরা করেছি। এটা জনগণের দাবী ছিল। আমরা আগামীতেও নদী রক্ষায় সকলে একসাথে কাজ করবো।”

আলোচনা সভা শেষে ধলেশ্বরী নদীসহ মানিকগঞ্জের সকল নদী ও খালের নাব্যতা রক্ষায় নিয়মিত খনন কার্যক্রম অব্যাহত রাখার দাবীতে জেলা প্রশাসক ও নির্বাহী প্রকৌশলি, বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড, মানিকগঞ্জ বরাবর স্মারকলিপি জমা দেওয়া হয়।

উল্লেখ্য ১৯৯৩ সালে জাতিসংঘের সাধারণ সভায় ২২ মার্চ বিশ্ব পানি দিবস হিসেবে ঘোষণা করা হয়। ১৯৯২ সালে ব্রাজিলের রিও ডি জেনেরোতে জাতিসংঘ পরিবেশ ও উন্নয়ন সম্মেলনের এজেন্ডা ২১-এ প্রথম পানি দিবস পালনের আনুষ্ঠানিক প্রস্তাবটি উত্থাপিত হয়। ১৯৯৩ সালে প্রথম বিশ্বে পানি দিবস পালিত হয়।

শেয়ার করুন

এ বিভাগের আরও খবর
© All rights reserved © 2014 Amar News
Site Customized By Hasan Chowdhury