ক্রাইম রিপোর্টার. দীপক সূত্রধর:
মানিকগঞ্জ সদর উপজেলার ভাড়ারিয়া ইউনিয়নে সরকারি নিয়ম-নীতি অনুসরণ না করেই খাল ভরাট করে চলছে রাস্তা নির্মাণের কাজ। প্রায় ১৪-১৫ দিন কাজ চালিয়ে অর্ধেক কাজ সম্পন্ন হবার পর ৩-৪ দিন যাবৎ কাজ স্থগিত রাখা হয়েছে বলে জানান এলাকাবাসী।
রবিবার (১১ জুন) দুপুরে সরেজমিনে দেখা যায় এবং এলাকাবাসীর তথ্য অনুযায়ী ভাড়ারিয়া ইউনিয়নের মোঃ শফি উদ্দিন মাস্টারের বাড়ি হতে হাসান মিয়ার বাড়ি পর্যন্ত ৫নং ও ৬নং ওয়ার্ডের মাঝে থাকা একটি খাল ভরাটের এমপি কোঠা প্রকল্পের একটি কাজ। যাহা খালের মধ্যে মাটি ভরাট করে রাস্তা নির্মাণ করছেন স্থানীয় ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি ও ঠিকাদার আনন্দ কুমার সাহা।
এলাকাবাসী সাংবাদিকদের উপস্থিতি জানতে পেরে ভিড় করেন। এসময় স্থানীয় শরিক বাবু বলেন, আমরা ছোট বেলা থেকেই বাড়ির পাশ দিয়ে খাল দেখে আসছি। এই খাল দিয়ে এখন আর পানি বের হয় না। এই খালটি এখন মরে গেছে। এই খাল ছাড়াও পানি বের হবার আরও অনেক খাল আছে।তবে এই খাল ভরাট করে রাস্তা করলে প্রায় ৪০০-৫০০ মানুষের সুবিধা হয়।কারণ একটা লাশ বের করতে গেলেও মহল্লার উপর দিয়া বের করতে হয়! তাই এই খালটি আমাদের তেমন প্রয়োজন নেই।
এসময় নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক বাসিন্দা বলেন, খালটির উপর দিয়া রাস্তা করলে সুবিধা হয় ঠিকই। কিন্ত বর্ষার সময় পানি নিষ্কাশন সমস্যা হবে।এছাড়াও যে ভাবে মাটি ভরাট করা হচ্ছে এতে দুই দিকে বৃষ্টির পানি জমে আরো সমস্যা হবে।রাস্তার পাশাপাশি আমাদের পানি বের করার জন্য খাল থাকাও জরুরি।
স্থানীয় মোঃ শফি উদ্দিন মাস্টার বলেন,এই রাস্তা হওয়া এটা আমাদের দীর্ঘদিনের দাবি।কারণ ৪০০-৫০০ লোকজন অন্যের বাড়ির উপর দিয়ে যাতায়াত করে।দরকারি প্রয়োজনে কোন গাড়ি যাইতে পারে না। এই খাল ভরাট করলে সমস্যা তো থাকবেই কিছু!তবে আমি মনে করি উপকার-ই বেশি হবে।
এ বিষয়ে ভাড়ারিয়া ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল জলিলের সাথে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে তাকে পাওয়া যায়নি।
খাল ভরাটের কাজে ঠিকাদার ও ভাড়ারিয়া ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি আনন্দ কুমার সাহা বলেন, এই কাজে হাত দেবার আগে আমি জানতাম না যে এই জমি হালট নাকি খাল! আসলে মানুষের সুবিধার জন্য কাজটি হাতে নিয়েছি।এই খালটি রাস্তা হলে অনেক মানুষের চলাচলের সুবিধা হবে,এই ভেবেই এখানে আমার কাজ করা।মানুষের জন্য এম.পি মমতাজকে অনেক রিকোয়েস্ট করার পর এই কাজটি আমাকে দিয়েছেন। এই কাজের বরাদ্ধ পাওয়া গেছে প্রায় সাড়ে চার লাখ টাকা। ইতিমধ্যে অর্ধেকের বেশি কাজ শেষ হয়েছে।
এ বিষয়ে সদর উপজেলারনির্বাহী অফিসার (ইউএনও) জ্যোতিশ্বর পাল বলেন, কোন অবস্থাতেই খাল ভরাট করে কোন কাজ করা যাবে না। এর আগেও এমন ধরনের কাজ পেয়েছি সেগুলো আমরা বন্ধ করে দিয়েছি। তবে জনস্বার্থে এ বিষয়ে আমরা খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।