মাদারীপুর প্রতিনিধি:
মাদারীপুরে ভুল চিকিৎসায় মান্নান মোল্লা (৬৫) নামে এক ব্যক্তির মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। মঙ্গলবার (১১ জুলাই) সকাল সাড়ে ৬টার দিকে জেলার সদর হাসপাতালে এ ঘটনা ঘটে। নিহত মান্নান মোল্লা সদর উপজেলার পেয়ারপুর ইউনিয়নের পশ্চিম পেয়ারপুর এলাকার বাসিন্দা।
জানা গেছে, গতকাল সোমবার রাতে প্রচণ্ড পেটে ব্যথা নিয়ে মাদারীপুর জেলা সদর হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসেন পশ্চিম পেয়ারপুর এলাকার মান্নান মোল্লা। হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসা কর্মকর্তা শিহাব চৌধুরী ওই রোগীর চিকিৎসা দেন। দিবাগত রাত সাড়ে ৩টার দিকে ওই রোগীর ব্যথা কমানোর জন্য তার শরীরে ঘুমের ইনজেকশন পুশ করেন সদর হাসপাতালের সেবিকা কেয়া আক্তার। ইনজেকশন পুশ করার কিছুক্ষণ পরেই রোগীর খারাপ লাগা শুরু হলে ঘুমিয়ে পড়েন তিনি এবং ওই অবস্থায় রোগীর মৃত্যু হয় বলে অভিযোগ ওঠে।
মান্নান মোল্লার ছেলে মোহাম্মদ আলী মোল্লা বলেন, আব্বার পেটে ব্যথা ছিল। ডাক্তার তাকে দেখে স্যালাইন দিয়েছিল। ব্যথা না কমায় নার্সকে ডেকে আনলে নার্স একটা ইনজেকশন পুশ করেন। এরপরই আব্বার বুকের মধ্যে জ্বালাপোড়া শুরু হয়। পরে দেখি আব্বায় আর কথা কয় না। ডাক্তারের ভুল চিকিৎসায় আমার আব্বা মারা গেছে।
ছোট মেয়ে লিমা বেগম বলেন, আমার আব্বার সঠিক চিকিৎসা দেয় নাই ডাক্তার। আব্বার ব্যথা বেশি শুরু হলে একটা ইনজেকশন দিয়া গেছে ডাক্তার। এর পরেই আমার আব্বায় মারা যায়। আমার আব্বারে ওরা মাইরা ফালাইছে। আমরা এর বিচার চাই।
আরেক মেয়ে রহিমা বেগম বলেন, সামান্য পেটের ব্যথায় কি কেউ মরে? সুঁই দেওয়ার পরেই আমার আব্বায় মারা গেছে। যে সুঁই দিছে হের কারণেই আমার বাপের মৃত্যু হইছে।
হাসপাতালের চিকিৎসা কর্মকর্তা শাহীন চৌধুরী বলেন, ওই রোগী এর আগেও আরেকটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছিল। সেখানে উন্নতি না হওয়ায় সদর হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে এসেছিল। তার ব্যথা কমানোর জন্য ইনজেকশন দেওয়া হয়েছিল। পরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় হৃদরোগে আক্রান্ত হলে তার মৃত্যু হয়।
তিনি আরও বলেন, তাকে শুধু মাত্র অ্যান্টিবায়োটিক, পেইন কিলার ও গ্যাসের ইনজেকশন দেওয়া হয়েছিল, এর বাইরে কিছুই নয়। সেক্ষেত্রে ভুল চিকিৎসায় মৃত্যুর অভিযোগ সঠিক নয়।
মাদারীপুর জেলা সিভিল সার্জন ডা. মুনীর আহমেদ খান বলেন, ডাক্তারের ভুল চিকিৎসায় রোগীর মৃত্যুর বিষয়ে লিখিত অভিযোগ দিলে বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হবে। তদন্তে ডাক্তারের গাফলতির সত্যতা পাওয়া গেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
মাদারীপুর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনোয়ার হোসেন চৌধুরী বলেন, আমরা বিষয়টি জানতে পেরেছি। ভুক্তভোগী পরিবারের লিখিত অভিযোগ পেলে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।