স্টাফ রিপোর্টার:
মানিকগঞ্জ শহরে এক মাংস ব্যবসায়ীর (কসাই) কাছে দুই লাখ টাকা চাঁদা দাবির অভিযোগে স্থানীয় লোকজন দুই কথিত সাংবাদিককে আটক করেন স্থানীয় লোকজন। পরে খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে র্যাবের কাছে তাঁদেরকে সোপর্দ করা হয়।
আজ (১২ সেপ্টেম্বর) মঙ্গলবার সকালে মানিকগঞ্জ বাসস্ট্যান্ড এলাকার অদূরে ভুল জয়রা এলাকায় এই ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় ওই মাংসব্যবসায়ী তাঁদের বিরুদ্ধে র্যাব-৪ এর সিপিসি-৩ মানিকগঞ্জে ক্যাম্পে চাঁদা দাবির লিখিত অভিযোগ করেছেন। তাঁরা দীর্ঘদিন ধরে জেলার বিভিন্ন স্থানে সংবাদ প্রকাশের হুমকি দিয়ে চাঁদবাজিসহ বিভিন্ন প্রতারণামূলক কার্যক্রম করে আসছিল এই চক্রটি।
আটক দুই সাংবাদিক হলেন, দৈনিক ক্রাইম তালাশ পত্রিকার বিশেষ প্রতিবেদক (স্পেশাল করেসপনডেন্ট) ও গণমুক্তির সিঙ্গাইর উপজেলা প্রতিনিধি ও জেলা জাতীয় সাংবাদিক সংস্থার সাধারণ সম্পাদক হারুন অর রশিদ এবং দৈনিক খবরের আলো প্রত্রিকার মানিকগঞ্জের রিপোর্টার বজলুর রহমান। দুইজন জনতার হাতে আটক করতে পারলেও মূল হোতা জেলা জাতীয় সাংবাদিক সংস্থার সভাপতি,জেলা আওয়ামী মটর শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি, জাতীয় শব্দ মিছিল পত্রিকা,দৈনিক গণমুক্তি, দৈনিক গণকন্ঠ ও শিক্ষানবীশ আইনজীবী আবুল হোসেন জনতার উপস্থিতি টের পেয়ে মোটরসাইকেল চালিয়ে পালিয়ে যায় বলে জানান বাদী আবুল কাশেম। এই আবুল হাশেম বিরুদ্ধে জেলার বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে চাঁদাবাজি জানা গেছে। দীর্ঘদিন ধরে তাঁরা জেলার বিভিন্ন স্থানে সংবাদ প্রকাশের হুমকি দিয়ে চাঁদাবাজিসহ বিভিন্ন প্রতারণামূলক কার্যক্রম করে আসছেন।
এবিষয়ে আবুল হোসেন পালিয়ে যাওয়ার বিষয় অস্বীকার করে তিনি বলেন জেলা জাতীয় সাংবাদিক সংস্থা ইতিমধ্যে বিলুপ্ত করা হয়েছে। আমি এখন তাদের নিয়ে চলি না। আমি আমার মতো চলি। আমার বিষয়ে চাঁদাবাজির বিষয় ষড়যন্ত্র।
র্যাব কর্মকর্তা এবং স্থানীয় লোকজন জানান, আজ ভোর চারটার দিকে মানিকগঞ্জ বাসস্ট্যান্ড এলাকার অদূরে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের পাশে ভুল জয়রা এলাকায় মাংসবিক্রেতা আবুল কাশেমের মাংসের দোকানে যান হারুন অর রশিদ ও বজলুর রহমান। পরে অসুস্থ গরু জবাই করেছেন বলে মাংস ব্যবসায়ী কাশেমকে বলেন তাঁরা। এ সময় মাংসব্যবসায়ী গরু জবাইয়ের বৈধ সনদ (প্রাণিসম্পদ কার্যালয়ের প্রত্যায়নপত্র) আছে বলে জানান। এর পর ওই দুই সাংবাদিক মাংসব্যবসায়ী কাশেমের কাছে দুই লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন। অন্যথায় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরে অভিযোগ করে মাংসব্যবসায়ীকে সাত বছরের কারাদণ্ড দেওয়ার ব্যবস্থা করবেন হুমকি দেন।
এর পর সেখানকার অন্যান্য মাংসব্যবসায়ী এবং স্থানীয় লোকজন হারুন অর রশিদ ও বজলুরকে আটক করে মাংসের দোকানে বাঁশের সঙ্গে রশি দিয়ে বেঁধে রাখেন। এর পর মাংসব্যবসায়ীরা ঘটনাটি র্যাবের মানিকগঞ্জ ক্যাম্পে জানান। এর পর সকাল সাড়ে সাতটার দিকে ঘটনাস্থলে র্যাব-৪ এর সিপিসি-৩ মানিকগঞ্জে ক্যাম্পের কমান্ডার লেফটেন্যান্ট কমান্ডার মো. আরিফ হোসেনসহ র্যাব সদস্যরা ঘটনাস্থলে যান। সেখানে সদর থানার পুলিশ সদস্যও যান। পরে উত্তেজিত মাংসব্যবসায়ীরা আটক দুই ব্যক্তিকে র্যাবের কাছে সোপর্দ করেন।
আজ সকাল সাতটার দিকে সরেজমিনে দেখা যায়, মাংসবিক্রির একটি দোকানে বাঁশের খুঁটির সঙ্গে ওই দুই সাংবাদিককে রশি দিয়ে বেঁধে রাখা হয়েছে। এ সময় মাংস ব্যবসায়ীরা বলেন, কয়েক দিন পর পর এসে কথিত ওই দুই সাংবাদিক তাঁদের কাছে চাঁদা দাবি করে আসছিলেন।
র্যাব কর্মকর্তা মো. আরিফ হোসেন বলেন, এ ঘটনায় চাঁদা দাবি এবং প্রতারণার অভিযোগে কথিত ওই দুই সাংবাদিকের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ করেছেন। আটক ব্যক্তিদের সদর থানায় পাঠানোর প্রস্তুতি চলছে।