স্টাফ রিপোর্টার:
মানিকগঞ্জে বিএনপির নেতা-কর্মীদের বিতরণ করা ‘ডামি’ নির্বাচন বর্জন ও অসহযোগ আন্দোলনের ডাকের লিফলেট নেওয়ায় এক পোশাক ব্যবসায়ীকে আটক করে পুলিশ। এর প্রতিবাদে প্রায় এক ঘণ্টা দোকানপাট বন্ধ রাখেন তৈরি পোশাক-ব্যবসায়ীরা। পরে ওই ব্যবসায়ীকে ছেড়ে দেয় পুলিশ। আজ শনিবার (২৩ ডিসেম্বর) দুপুরে মানিকগঞ্জ শহীদ রফিক সড়কের ডলি প্লাজা মার্কেটে এই ঘটনা ঘটে।
মানিকগঞ্জ বিএনপি নেতা ও সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ী সূত্রে জানা গেছে, ‘ডামি’ নির্বাচন বর্জন ও অসহযোগ আন্দোলনের ডাক দেয় বিএনপি গত বুধবার ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির পক্ষ থেকে দলটির এই ডাক দেন জ্যেষ্ঠ যুগ্ন মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। দলের কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে গত বৃহস্পতিবার থেকে মানিকগঞ্জের বিভিন্ন এলাকায় ৭ জানুয়ারি ‘ডামি’ নির্বাচন বর্জন ও অসহযোগ আন্দোলনে বিভিন্ন লেখা সম্বলিত লিফলেট বিতরণ করে আসছেন জেলা বিএনপি ও এর অঙ্গসংগঠনের নেতা-কর্মীরা।
এর ধারাবাহিকতায় আজ শনিবার বেলা ১১টার দিকে জেলা শহরের জেলা বিএনপির কার্যালয়ের অদূরে শহীদ রফিক সড়কের পাশে বিভিন্ন ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে এই লিফলেট বিতরণ করেন বিএনপির অঙ্গসংগঠনের নেতা-কর্মীরা। বেলা সাড়ে ১১টার দিকে ডলি প্লাজা নামের একটি বিপণীবিতানের তৈরিপোশাক-ব্যবসায়ী মশিউর রহমান ওরফে সুমনকে লিফলেট দেন নেতা-কর্মীরা। লিফলেট বিতরণের ভিডিও চিত্র সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে পোস্ট করেন নেতা-কর্মীরা। পরে এ বিষয়টি জেলা পুলিশ প্রশাসনের নজরে আসে। এর পর বেলা সোয়া একটার দিকে সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. হাবিল হোসেনসহ ছয়-সাত পুলিশ সদস্য ডলি প্লাজা বিপণিবিতানে গিয়ে নিজ ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান থেকে ব্যবসায়ী মশিউর রহমানকে আটক করে থানায় নিয়ে যান।
এ ঘটনার প্রতিবাদে বেলা দেড়টার দিকে দোকান বন্ধ করেন তৈরিপোশাক-ব্যবসায়ীরা। এর পর তাঁরা সদর থানায় যান। পরে বেলা আড়াইটার দিকে পুলিশ তাঁকে থানা থেকে ছেড়ে দেয়।
এ ব্যাপারে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি মানিকগঞ্জ তৈরিপোশাক দোকান মালিক সমিতির সভাপতি খোন্দকার মিরাজুল ইসলাম। তিনি বলেন, এ ব্যাপারে কিছু বলতে পারবো না।’
আজ বেলা তিনটার দিকে সরেজমিনে গিয়ে ভূক্তভোগী ব্যবসায়ী মশিউর রহমানের ‘বিথী ফ্যাশন’ নামের তৈরিপোশাকের দোকান বন্ধ পাওয়া যায়।নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক পোশাকব্যবসায়ী বলেন, বিএনপির নেতা-কর্মীদের দেওয়া লিফলেট নেওয়া এবং নেতা-কর্মীরা তা ফেসবুকে পোস্ট দেওয়ায় ব্যবসায়ী মশিউর রহমানকে আটক করে থানায় নিয়ে যায় পুলিশ।
ভূক্তভোগী পোশাকব্যবসায়ী মশিউর রহমান বলেন, ‘আকস্মিকভাবে বিএনপির কয়েকজন কর্মী এসে ব্যবসায়ীদের মাঝে লিফলেট বিতরণ করেন। আমাকেও একটি লিফলেট দেওয়ার সময় মোবাইলে তা ভিডিও করেন। পরে পুলিশ এসে আমাকে থানায় নিয়ে যায়। জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ আমাকে ছেড়ে দেয়।
এ ঘটনায় জেলা ছাত্রদলের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক জিহাদ বলেন, কেন্দ্র ঘোষিত আমাদের শান্তিপূর্ন কর্মসূচী এই তামাশার নির্বাচন নির্বাচনে সাধারণ ভোটাদের নিরুসাহিত করতে ভোট কেন্দ্রে না যাওয়ার আহবান জানানো হয়। আমাদের হাত থেকে এই লিফলেট নেওয়ায় ব্যবসায়ীদের হয়রানি ও গ্রেফতারের ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান।
এঘটনায় জেলা বিএনপির সভাপতি আফরোজা খান রিতা ও সাধারণ সম্পাদক এস এ জিন্নাহ কবীর নিন্দা জানান।
সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. হাবিল হোসেন বলেন, একটি বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ওই ব্যবসায়ীকে থানা নেওয়া হয়েছিল। পরে তাঁকে ছেড়ে দেওয়া হয়। বিএনপির নেতা-কর্মীদের লিফলেট নেওয়ায় তাঁকে আটক করা হয়েছিল কিনা- এমন প্রশ্নের জবাবে ওসি হাবিল হোসনে বলেন, ‘না লিফলেটের বিষয়ে নয়, অন্য একটি বিষয়ে তাঁকে থানায় নেওয়া হয়েছিল।’
—