স্টাফ রিপোর্টার:
মানিকগঞ্জ জেলা সেচ্ছাসেবক লীগের সাধারন সম্পাদক রেস্টুরেন্ট বন্ধ করে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি এম এ সিফাত কোরাইশী সুমনের বিরুদ্ধে। তবে অভিযোগ অস্বীকার করেছেন ঐ ছাত্রলীগ নেতা।
গত তিন মাস আগে চালু হয় ‘পানসী’ নামের ওই রেস্টুরেন্ট। এটির মালিক মানিকগঞ্জ জেলা সেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক আবুল বাশার।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সদর উপজেলার দিঘী ইউনিয়নে মানিকগঞ্জ কর্নেল মালেক মেডিকেল কলেজ অ্যান্ড হসপিটালের সামনে ২০২৩ সালের ১০ নভেম্বর আনুষ্ঠানিকভাবে ‘পানসী’ নামের ওই চাইনিজ রেস্টুরেন্ট চালু করা হয়। এরপর থেকে সব ঠিকঠাক মতো চলছিল। গত ২৭ জানুয়ারি রেস্টুরেন্টের মালিক আবুল বাশারের অনুরোধে চাইনিজ রেস্টুরেন্ট পরিদর্শনে যান মানিকগঞ্জ-২ আসনের সংসদ সদস্য দেওয়ান জাহিদ আহম্মেদ টুলু।
এ সময়ে জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি সিফাত কোরাইশী সুমনসহ তাঁর অনুসারীরা উপস্থিত ছিলেন। কিন্তু গত ২৮ জানুয়ারি দুপুরে সুমনসহ তাঁর আট–দশজন অনুসারী গিয়ে ‘উপরের নির্দেশের’ কথা জানিয়ে রেস্টুরেন্টটি বন্ধ রাখতে বলেন। এরপর থেকে রেস্টুরেন্টটি বন্ধ রয়েছে।আজ বুধবার বেলা ১২টায় রেস্টুরেন্টটিতে গিয়ে দেখা যায়, চাইনিজ রেস্টুরেন্টটি মূল দরজা বন্ধ রয়েছে। তবে ভেতরে একজন শেফ, একজন সহকারী সেফ, দুজন সহকারী, একজন ডিশ ওয়াশ ম্যান ও একজন ওয়েটার বসে আছেন। রেস্টুরেন্টের কোনো কার্যক্রম দেখা যায়নি।
সরেজমিনে রেস্টোরেন্টে গিয়ে রেস্টুরেন্টের কার্যক্রম বন্ধ থাকতে দেখা যায়।
এ সময় কথা হয় রেস্টুরেন্টের প্রধান শেফ কবীর হোসেনের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘গত চার দিন ধরে রেস্টুরেন্টটি বন্ধ রয়েছে। চলমান একটি রেস্টুরেন্ট বন্ধ থাকায় প্রতিদিন মালিকের ১০ হাজার টাকার আর্থিক ক্ষতি হচ্ছে।’
কারা বন্ধ করেছে এমন প্রশ্নের জবাবে কবীর হোসেন বলেন, ‘এ বিষয়ে আমি কিছু বলতে পারব না। আপনারা মালিকপক্ষের সঙ্গে কথা বলুন।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ওই রেস্টুরেন্টের মালিক এবং জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক আবুল বাশার বলেন, ‘গত রোববার (২৮ জানুয়ারি) দুপুরে জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি সিফাত কোরাইশী সুমন তাঁর আট–দশজন অনুসারী নিয়ে ওপরের নির্দেশনার কথা বলে রেস্টুরেন্টটি বন্ধ রাখতে বলেন। তাদের ভয়ে আমার রেস্টুরেন্টের ম্যানেজারের দায়িত্বে থাকা মালিকপক্ষের একজন মনিরুল হাসান প্রিন্স চাইনিজ রেস্টুরেন্টটি বন্ধ রাখেন। এরপর বিষয়টি জানার জন্য সুমনের মোবাইল নম্বরে একাধিকবার কল দিলেও রিসিভ করেননি।’
আবুল বাশার আরও বলেন, ‘আমার রেস্টুরেন্টের ট্রেড লাইসেন্সসহ সব ধরণের কাগজ আপডেট আছে। আমার ধারণা রেস্টুরেন্টে এমপি টুলু আসছিলেন বলে তারা বন্ধ করে দিয়েছেন। বন্ধ করার সময়ে সুমন স্থানীয় সংসদ সদস্য জাহিদ মালেকের কথা বলেছেন। সুমন হুমকি দিয়ে বলেন–এই মুহূর্তে রেস্টুরেন্ট বন্ধ না হলে ইউএনও পাঠিয়ে পাঁচ-দশ লাখ টাকা জরিমানা করা হবে। এ বিষয়ে আমি আইনের আশ্রয় নিব।’
তবে অভিযোগ অস্বীকার করে জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি এ এম সিফাত কোরাইশী সুমন বলেন, ‘এ বিষয়ে আমি কিছু জানি না। এই অভিযোগ সম্পূর্ণ ভুয়া, এটি অবান্তর প্রশ্ন। তবে শুনেছি পানসী রেস্টুরেন্টের কোনো কাগজপত্র নেই। ভোক্তা অধিকারের অভিযানের ভয়ে তারা নিজেরাই তাদের রেস্টুরেন্ট বন্ধ রেখেছেন।’
এ বিষয়ে সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. হাবিল হোসেন বলেন, ‘বিষয়টি আমার জানা নেই। এ বিষয়ে কেউ অভিযোগ করেনি। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’