স্টাফ রিপোর্টার:
মানিকগঞ্জে বেসরকারী ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারে মোবাইল কোর্ট পরিচালনার সময় সংবাদ প্রকাশের উদ্দেশ্যে ছবি তুলতে গেলে সাংবাদিককে বাধা দেয়ার অভিযোগ উঠেছে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট (সাধারণ শাখা) সাবিহা সুলতানা ডলির বিরুদ্ধে।
রোববার (০৪ ফেব্রুয়ারী) বিকেলে মানিকগঞ্জের ওয়ারলেস গেট এলাকায় পালস ক্লিনিক্যাল ল্যাবরেটরিতে মোবাইল কোর্ট পরিচালনার সময় জাতীয় দৈনিক যায়যায়দিন পত্রিকার মানিকগঞ্জ জেলা প্রতিনিধি আসিফ খান মনিরকে ছবি তুলতে বাধা দেন তিনি।
সাংবাদিক আসিফ খান মনির জানান, বেসরকারি হাসপাতালে মোবাইল কোর্ট পরিচালিত হবে জানতে পেরে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা টিমের একজন প্রতিনিধির সাথে যোগাযোগ করি, তিনি আমাকে একটি বেসরকারি ক্লিনিকে যেতে বলেন। এরপর সেখানে গিয়ে সংবাদ প্রকাশের উদ্দেশ্যে মোবাইল কোর্ট পরিচালনার সময় আমার মুঠোফোনে দুই থেকে তিনটি ছবি ধারণ করি। সে সময় নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সাবিহা সুলতানা ডলি আমার পরিচয় জিজ্ঞাসা করেন। তখন আমি সাংবাদিক পরিচয় দেই। এরপরও তিনি উপস্থিত পুলিশ সদস্যদের আমার মুঠোফোন নিয়ে নেওয়ার ও ছবিগুলো ডিলিট করার নির্দেশ দেন। এরপর পুলিশ সদস্যরা আমার মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নিয়ে ছবিগুলো ডিলিট করে দেন। ছবি তোলায় নিষেধাজ্ঞার কারণ জানতে চাইলে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সাবিহা সুলতানা ডলি আমাকে বলেন, ছবি তুলতে হলে ডিসি স্যারের লিখিত অনুমতি নিয়ে আসেন।
বিষয়টি নিয়ে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সাবিহা সুলতানা ডলির মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ছবি তোলার আগে এডিএম স্যার অথবা জেলা ম্যাজিস্ট্রেট স্যারের অনুমতি নিয়ে আসলে ছবি তোলা এলাও করব। পুলিশ সদস্যদের দিয়ে সাংবাদিকের মোবাইল ফোন কেড়ে নিয়ে ছবি ডিলিট করার বিষয়ে জানতে চাইলে কোন উত্তর না দিয়েই তিনি ফোনের লাইন কেটে দেন।
তবে মানিকগঞ্জের জেলা প্রশাসক ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেট রেহানা আকতার বলেন, মোবাইল কোর্ট পরিচালনার সময়ে সাংবাদিকদের ছবি তুলার ক্ষেত্রে কোনো নিষেধাজ্ঞা নেই, অনুমতিরও প্রয়োজন নেই। যিনি সাংবাদিকদের ছবি তুলতে নিষেধ করেছেন তার সাথে যোগাযোগ করে বিষয়টি দেখছি।
মোবাইল কোর্টে সাংবাদিকদের ছবি তুলতে বাধা দেওয়ার বিষয়ে নিন্দা জানিয়ে মানিকগঞ্জ প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক অতীন্দ্র চক্রবর্তী বিপ্লব বলেন, মোবাইল কোর্ট একটি স্বচ্ছ প্রক্রিয়া, এখানে ছবি তুলার ক্ষেত্রে কোন নিষেধাজ্ঞা নেই। সাংবাদিকদের ছবি তুলতে যারা বাধা সৃষ্টি করেছে তাদেরকে জবাবদিহিতার আওতায় আনা প্রয়োজন।
এদিকে প্রাইভেট ক্লিনিকে মোবাইল কোর্ট পরিচালনায় সাংবাদিকদের বাঁধার ক্ষেত্রে জেলা সিভিল সার্জন মোয়াজ্জেম আলী খান বলেন, আজকের অভিযানের বিষয়টি সবাইকে জানানোর জন্য সাংবাদিকদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়। আমি যেহেতু ঘটনাস্থলে ছিলাম না,সাংবাদিকদের বাঁধা দেওয়ার বিষয়টি আমার জানা নেই। তবে আমি যেটা জানি মোবাইল কোর্ট পরিচালনার ক্ষেত্রে সাংবাদিকরা উপস্থিত থাকবে এবং পুরো বিষয়টি জাতির সামনে নিউজের মাধ্যমে তুলে ধরবে। এমন ঘটনা কেন ঘটলো আমার জানা নেই। আমার মনে হয় এখানে সাংবাদিকদের সঙ্গে কোন ঘ্যাপ থাকতে পারে।
উল্লেখ, কোন কোন বেসরকারি হাসপাতালে কি কি অপরাধে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করা হয়েছে এবং কত টাকা জরিমানা করা হয়েছে সে বিষয়ে তথ্য দিতেও অস্বীকৃতি জানান নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সাবিহা সুলতানা ডলি।##