1. hasanchy52@gmail.com : admin :
  2. amarnews16@gmail.com : Akram Hossain : Akram Hossain
বৃহস্পতিবার, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ১২:৩১ পূর্বাহ্ন

হরিরামপুরে শর্ত লঙ্ঘন করে বালু তুলছেন ইজারাদার, নদীভাঙনের আশঙ্কা

  • প্রকাশের সময় : শনিবার, ১০ ফেব্রুয়ারী, ২০২৪
  • ১৩৮ বার দেখা হয়েছে

শুভংকর পোদ্দার, স্টাফ রিপোর্টার, হরিরামপুর,

মানিকগঞ্জের হরিরামপুর উপজেলার পদ্মা নদীর লেছড়াগঞ্জ বালুমহালের নির্ধারিত সীমানার বাইরে কয়েক কিলোমিটার দূরে থেকে বালু তোলা হচ্ছে। নির্ধারিত সীমানার বাইরে থেকে বালু উত্তোলন নিষিদ্ধ হলেও ভোর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত সাতটি ড্রেজার দিয়ে বালু তুলছেন ঠিকাদার। অবৈধভাবে এমন বালু উত্তোলনের ফলে নদীভাঙনের আশঙ্কা করছেন গোপীনাথপুর ও কাঞ্চনপুর ইউনিয়নের নদীপাড়ের মানুষ। দুই মাসেরও বেশি সময় ধরে এমন চললেও কোনো ব্যবস্থা নেয়নি প্রশাসন।

সরজমিনে দেখা যায়, এম বি মা-বাবার দোয়া ড্রেজিং প্রকল্প-৩, নূরে মদিনা ড্রেজিং প্রকল্প, এমভি হাফিজা ড্রেজিং, তিন্নি লোড ড্রেজিংসহ সাতটি ড্রেজার দিয়ে চলছে বালু উত্তোলন। উপজেলার রামকৃষ্ণপুর ও উজানপাড়া এলাকায় পানি উন্নয়ন বোর্ডের জিও ব্যাগে বালু সরবরাহ করা হচ্ছে। এছাড়া, বাল্কহেডের মাধ্যমে ফরিদপুরসহ বিভিন্ন এলাকায় চলে যাচ্ছে উত্তোলনকৃত বালু।

জানা যায়, হরিরামপুরে এবছরই প্রথম বালুমহাল ইজারা দেওয়া হয়েছে। গতবছরের ৬ এপ্রিল ১৪৩০ বাংলা সালের জন্য হরিরামপুরের লেছড়াগঞ্জসহ সাতটি বালুমহাল ইজারার বিজ্ঞপ্তি দেয় জেলা প্রশাসন। এতে সর্বোচ্চ দরদাতা হিসেবে লেছড়াগঞ্জ বালুমহালের ইজারা পায় মেসার্স দেওয়ান কর্পোরেশন। লেছড়াগঞ্জ মৌজার দিয়ারা জরিপ ১ নম্বর খতিয়ানের ৩০০১ দাগের ৩২.৪৭ একর জমি ইজারাভূক্ত।

গোপীনাথপুর ও কাঞ্চনপুর ইউনিয়নের নদীপাড়ের কয়েকজন জানান, যে জায়গা থেকে এখন বালু উত্তোলন করা হচ্ছে সেটি কাঞ্চনপুর ইউনিয়নের গৌরীবরদিয়া মৌজা এলাকায় পড়েছে। প্রায় দুই মাসেরও বেশি সময় ধরে এখান থেকে বালু তোলা হচ্ছে৷ বর্ষা মৌসুমে প্রতিবছরই এই এলাকার মানুষজন নদী ভাঙনের শিকার হয়। এভাবে বালু তোলা হলে কিছুদিন পরে নদীভাঙন দেখা দিতে পারে।

তবে, গোপীনাথপুর ইউনিয়নের ১ নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য জাহাঙ্গীর আলম জানু বলেন, যে জায়গা থেকে বালু তোলা হচ্ছে তা গোপীনাথপুর ইউনিয়নের কদমতলা এলাকায় পড়েছে। ওই এলাকাটি অনেক আগে নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে।

বালুমহাল ইজারা বিজ্ঞপ্তিতে নিয়মাবলির ২০ ও ২১ নম্বরে উল্লেখ আছে, ইজারা গ্রহণকৃত এলাকা ব্যতিত অন্য কোন এলাকা হতে ইজারাদার বালু উত্তোলন করতে পারবেন না। উল্লিখিত শর্ত ভঙ্গের জন্য ইজারাদার দায়ী থাকবে এবং তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা যাবে৷

এ বিষয়ে কাঞ্চনপুর ইউপি চেয়ারম্যান গাজী বনি ইসলাম রূপক বলেন, গোপীনাথপুর ও আমার কাঞ্চনপুর ইউনিয়নের সীমানা এলাকায় এক কিলোমিটার বাঁধের কাজ চলছে। বালু কোথা থেকে তোলা হচ্ছে তা জানি না৷ খোঁজ নিয়ে দেখছি।

সরজমিনে ড্রেজারে গেলে ড্রেজারগুলো বালুমহালের ড্রেজার বলে জানান শ্রমিকরা। শুভ নামের এক শ্রমিক বলেন, এগুলো বালুমহালের ড্রেজার৷

গোপীনাথপুর ও কাঞ্চনপুর ইউনিয়নের এক কিলেমিটার বাঁধের কাজের জন্য নদী থেকে বাল্কহেডে করে এনে আনলোড ড্রেজার দিয়ে পাড়ে বালু স্তুপ করে রাখা হচ্ছে। সেখানে কথা হয় কাজের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের ইনচার্জ মো. জসিমের সঙ্গে। তিনি বলেন, এক কিলোমিটার কাজের জন্য প্রায় ২৫ লাখ ঘনফুট বালু প্রয়োজন। প্রতি ঘনফুট বালু আমরা দুই টাকা ৩০ পয়সা করে বালুমহাল থেকে কিনছি।

ইজারাদারের পক্ষে পাউবোর কাজে বালু সরবরাহের দেখাশোনার দায়িত্বে থাকা উজ্জ্বল দেওয়ান বলেন, বালুমহালের নির্ধারিত জায়গায় চর জেগেছে। তাই বাইরে থেকে বালু তোলা হচ্ছে। আপনি ইজারাদারের সাথে কথা বলেন।

বালুমহালের ইজারাদার মো. আলমগীর হোসেন বলেন, আমি তো ওখানে থাকি না ভাই। ওইখানে নিয়ন্ত্রণ অন্যজনে করে। আমার একটু জানতে হবে। আপনি বললেন, বিষয়টি আমি দেখবো।

মানিকগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মাঈন উদ্দিন বলেন, বিষয়টি এখনি স্থানীয় প্রশাসনকে জানাচ্ছি। আগামী বছরের জন্য বালুমহাল ইজারা দিতে হাইড্রোগ্রাফিক সার্ভের জন্য ডিসি অফিস থেকে চিঠি দেওয়া হয়েছে। আমি এবার বালুমহাল ইজারা না দেওয়ার জন্য সুপারিশ করবো।

হরিরামপুর সহকারী কমিশনার (ভূমি) তাপসী রাবেয়া বলেন, বিষয়টি জানা ছিলো না। আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে।

মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে জেলা প্রশাসক রেহেনা আকতার বলেন, বিষয়টি আমরা দেখছি।

শেয়ার করুন

এ বিভাগের আরও খবর
© All rights reserved © 2014 Amar News
Site Customized By Hasan Chowdhury