জাহিদুল হক চন্দন :
মানিকগঞ্জ পৌরসভার জায়গায় আনন্দ বাজার নামে দোকান ভাড়া দিয়ে প্রতি মাসে লাখ লাখ টাকা তুলছেন দুই কাউন্সিলর। অনুসন্ধান বলছে, পৌরসভায় নামমাত্র টাকা জমা হলেও বাকি টাকা ওই ওয়ার্ডের কাউন্সিলর শায়েখ শিবলী ও রাজিয়া সুলতানা নিজেদের পকেটস্থ করছেন।
সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, সকাল থেকে রাত অবধি আনন্দ বাজারে ক্রেতা বিক্রেতার সমাগম। আনন্দ বাজারের গেটে ক্রেতাদের জটলা। শহীদ রফিক সড়কের সাথে প্রধান ফটক হওয়ায় সব সময় এ গেটে যানজট লেগেই থাকে। আয়োজকদের দাবি, পৌরসভার মেয়র ও কাউন্সিলরদের অনুমতি নিয়ে অস্থায়ী মেলা বসানো হয়েছে। তবে স্থানীয় ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, পৌর মেয়র ও কাউন্সিলরদের সঙ্গে সমঝোতা করে অবৈধভাবে মেলা বসানো হয়েছে। এতে শহরের ব্যবসায়ীরা ক্ষতির শিকার হচ্ছেন। এভাবে পৌরসভার জায়গায় মেলার নামে দোকান ভাড়া দিয়ে টাকা আদায় নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন শহরের ব্যবসায়ীরা।
এদিকে রোববার (৩১ মার্চ) বেলা আড়াইটার দিকে পৌরসভার বাজার পরিদর্শক গোবিন্দ নারায়ন সাহার কাছে দোকান ভাড়ার বিষয়ে তথ্য চাইতে গেলে তার কাছে কোন তথ্য নেই জানিয়ে পৌর নির্বাহী কর্মকর্তার সাথে কথা বলার পরামর্শ দেন। পরে পৌর নির্বাহী কর্মকর্তা বজলুর রহমানের সাথে কথা হলে তিনি এ বিষয়ে তথ্য দিতে অপারগতা প্রকাশ করে মেয়রের কাছ থেকে তথ্য নেওয়ার পরামর্শ দেন। মেয়র কার্যালয়ে না থাকায় এ বিষয়ে জানতে তাকে ফোন করা হলেও রিসিভ করেননি।
জানা গেছে, শহরের শহীদ রফিক সড়কে অবস্থিত মানিকগঞ্জ পৌরসভার পুরোনো জায়গায় সারা বছর ব্যাপি চলে ‘আনন্দ বাজার’ নামের অস্থায়ী মেলা। মেলায় নানা পণ্যের ১১টি দোকান বসেছে। পৌর মেয়র রমজান আলীর সুপারিশে ব্যবসায়ীদের বিদ্যুৎসংযোগ দেওয়া হয়েছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক মেলার কয়েকজন ভ্রাম্যমাণ ব্যবসায়ী বলেন, পৌর কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে অস্থায়ীভাবে দোকান করতে অনুমতি পেয়েছেন তাঁরা। প্রতি মাসে ১১ টি দোকান থেকে দেড় লাখ টাকা পৌরসভাকে দেওয়া হয়।
তৃপ্তি প্লাজা মার্কেটের ব্যবসায়ীরা বলেন, তাঁরা লাখ লাখ টাকা অগ্রিম দিয়ে দোকান ভাড়া নেন। মাস শেষে ভাড়া পরিশোধ করেন, বছর শেষে পৌর ট্যাক্সও দেন। দেশের বেচাকেনা আগের মতো ভালো হয় না। এর মধ্যে মেলা বসিয়ে ভ্রাম্যমাণ ব্যবসায়ীরা মাসের পর মাস বেচাকেনা করলে স্থানীয় ব্যবসায়ীরা ক্ষতিগ্রস্ত হবেন।
পৌরসভার কাউন্সিলর শায়েখ শিবলী ও সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর রাজিয়া সুলতানা এ বিষয়ে কোন মন্তব্য করতে রাজি হননি। তবে রাজিয়া সুলতানা এ বিষয়ে কাউন্সিলর রাজার সাথে কথা বলার পরামর্শ দেন।
পৌর কাউন্সিলর আব্দুর রাজ্জাক রাজা বলেন, ওই ওয়ার্ডের কাউন্সিলর আমি নই। বিষয়টি সম্পর্কে শিবলী ও রাজিয়া কাউন্সিলর ভালো বলতে পারবেন। কত টাকা ভাড়া আদায় হয় এ তথ্য পৌর নির্বাহী কর্মকর্তা দিতে পারবেন। তবে রেজুলেশন করে আনন্দ বাজারে দোকান ভাড়া দেওয়া হয়েছে বলে তিনি নিশ্চিত করেন তিনি।