আমার নিউজ ডেক্স :
মানিকগঞ্জের কৃতী শিক্ষক ও খানবাহাদুর আওলাদ হোসেন খান কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ মীর মোখসেদুল আলম আর নেই। বৃহস্পতিবার (২৩ মে) দুপুরে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়েছে মানিকগঞ্জ সদর হাসপাতালে তার মৃত্যু হয় (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)।
মীর মোখসেদুল আলম বেশ কিছুদিন ধরে ডায়াবেটিস, হৃদরোগ ও কিডনির সমস্যায় ভুগছিলেন বলে জানিয়েছেন পরিবারের সদস্যরা। মৃত্যুতে তিনি স্ত্রী, এক ছেলে, এক মেয়েসহ অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন।
মীর মোখসেদুল আলম জেলা শহরের খানবাহাদুর আওলাদ হোসেন খান কলেজের ইংরেজি বিভাগের অধ্যাপক ও সদ্য সাবেক অধ্যক্ষ। তিনি জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ১১ ব্যাচের ইংরেজি বিভাগের কৃতী শিক্ষার্থী ছিলেন। দুই সন্তানের জনক তিনি। তার মেয়ে মীর উসমুম আলম মোহনা কানাডার একটি বিশ^বিদ্যালয়ে পিএইচডি গবেষণা করছেন। তার ছেলে মীর সামিউল আলম সোপান্ত চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ইংরেজি বিভাগে স্নাতকোত্তর শ্রেণিতে পড়ছেন।
শিক্ষক পরিবারের সদস্য মীর মকসুদুল আলমের স্ত্রী সালমা আক্তার শিলু জেলার সুরেন্দ্র কুমার সরকারি উচ্চবিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক। তার ছোটভাই মীর মাসুদুল আলম চয়ন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক। এছাড়া তার ছোটবোন রেহানা পারভীন ঢাকার দোহার উপজেলার উত্তর বাহ্রা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক। তাদের আরেক বোন রোকসানা পারভীন কয়েক বছর আগে প্রয়াত হন।
মীর মোখসেদুল বাংলাদেশ কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি (বাকবিশিস) ও শিশুকিশোর সংগঠন খেলাঘর আসর-এর জেলা সভাপতি ছিলেন। ছাত্রজীবনী তিনি বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়নের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন, পরে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) মানিজগঞ্জ জেলার সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেছেন। মানিকগঞ্জ শহরের শহিদ রফিস সড়কে ‘বইঘর’ নামে একটি লাইব্রেরি ছিল তারা।
বৃহস্পতিবার বাদ আসর মীর মোখসেদুলের সাবেক কর্মস্থল খানবাহাদুর আওলাদ হোসেন খান কলেজ প্রাঙ্গণে তার প্রথম জানাজা হয়। পরে তার নিজ গ্রাম মানিকগঞ্জ সদর উপজেলার বেতিলা গ্রামে দ্বিতীয় জানাজা শেষে দাফন করা হবে বলে জানা গেছে। মোখসেদুল আলমের ছোটবোন রোকসানা পারভীনের স্বামী স্কুল শিক্ষক শাহাদৎ হোসেন সাঁইজী এসব তথ্য নিশ্চিত করেন।
মীর মোখসেদুলের বন্ধু ব্যবসায়ী আজহার উদ্দীন তার ফেসবুক ওয়ালে লেখেন, ‘আমার জীবন থেকে মহাপ্রস্থানের পথে চলে গেলেন আরেকটি সোনার মানুষ, তিনি আক্ষরিক অর্থেই ছিলেন এক সোনার মানুষ। আর পাবো না তাঁরে। এমন জীবনবাদী মানুষ, এমন প্রজ্ঞাবিচারি রসবোধসম্পন্ন মানুষ আমার জীবনে বিরল। তিনি নিজেই ছিলেন নিভৃতচারী এক বিরলপ্রজ মানুষ। তাঁর মতো নির্লোভ-নির্মোহ মানুষ এ সংসারে খুঁজে পাওয়া ভার। কী যে এক সুকুমারকৃত মানুষ ছিলেন তিনি, তা বলা আমার পক্ষে অসাধ্য। তিনি ছিলেন গভীর রসবোধসম্পন্ন এক কথক। যাকে বলে শৈল্পিক কথক।
আমার নিউজ ডেক্স/ আ:/মানিক: