আমার নিউজ ডেস্কঃ
বাংলাদেশের একেবারে দক্ষিণে বঙ্গোপসাগরের উত্তর-পূর্বাংশে অবস্থিত ৮ বর্গ কিলোমটারের প্রবাল দ্বীপটিই সেন্ট মার্টিন। কক্সবাজারের টেকনাফ থেকে প্রায় ৯ কিলোমিটার দক্ষিণে নাফ নদীর মোহনায় এর অবস্থান। যা মিয়ানমারের উপকূল থেকে পশ্চিম দিকে মাত্র ৮ কিলোমিটার দূরে। প্রচুর নারকেল পাওয়া যায় বলে দ্বীপটিকে নারিকেল জিঞ্জিরাও বলা হয়।
বাংলাদেশ পর্যটন করপোরেশনের ওয়েবসাইটে বলা হয়েছে, খ্রিস্টান সাধু মার্টিনের নাম অনুসারে দ্বীপটির নাম সেন্ট মার্টিন করা হয়েছে। দ্বীপটি নিয়ে দীর্ঘদিন গবেষণা করেছেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্ভিদ বিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক শেখ বখতিয়ার উদ্দিন ও অধ্যাপক মোস্তফা কামাল পাশা।
অধ্যাপক শেখ বখতিয়ার বলেন, বঙ্গোপসাগরের দ্বীপটিকে যখন ব্রিটিশ ভারতের অন্তর্ভুক্ত করা হয়, তখন চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক মার্টিনের নাম অনুসারে এর নামকরণ করা হয়।
পর্যটন করপোরেশনের ওয়েবসাইট থেকে জানা যাচ্ছে, ১৮৯০ সালের দিকে দ্বীপটিকে বসতি স্থাপন করে কিছু মৎস্যজীবী। যাদের মধ্যে কিছু বাঙালি এবং কিছু রাখাইন সম্প্রদায়ের লোক ছিল। তবে ধীরে ধীরে দ্বীপটি বাঙালি অধ্যুষিত হয়ে ওঠে।
ইতিহাস থেকে জানা যায়, মিয়ানমারের আগের নাম ছিল ব্রহ্মদেশ বা বার্মা। দেশটি ব্রিটিশ শাসনের অধীনে ছিল। তবে ১৯০০ সালে ভূমি জরিপের সময় ব্রিটিশ শাসকরা বার্মা থেকে মাত্র ৮ কিলোমিটার দূরের সেন্ট মার্টিন দ্বীপটিকে ভারতের অন্তর্ভুক্ত করে নেয়।
গবেষক অধ্যাপক মোস্তফা কামাল পাশা বলেন, সেই সময়ে বার্মা ব্রিটিশ শাসনের আওতায় থাকলেও সেন্ট মার্টিন দ্বীপকে ব্রিটিশ-বার্মার অন্তর্ভুক্ত না করে তারা ব্রিটিশ-ভারতের অন্তর্ভুক্ত করেছিল। তবে দ্বীপটির সঙ্গে বার্মার একটা সম্পর্ক রয়েই গিয়েছিল।
সেই ঘটনার কয়েক দশক পর ভারতীয় উপমহাদেশে ব্রিটিশ শাসনের অবসান ঘটে। এক পর্যায়ে ১৯৭১ সালে এসে বাংলাদেশও স্বাধীন হয়। সেই স্বাধীনতার প্রায় অর্ধশতক পর ২০১৮ সালে এসে মিয়ানমার সরকার তাদের প্রণয়ন করা জনসংখ্যাবিষয়ক একটি মানচিত্রে সেন্ট মার্টিন দ্বীপকে সে দেশের অংশ হিসেবে দেখায়। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে অভিযোগ জানায় বাংলাদেশ সরকার। ঢাকায় নিযুক্ত মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূতকে তলব করে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।