স্টাফ রিপোর্টারঃ
কেন্দ্রীয় কারাগারের হিসাব রক্ষক হত্যার ঘটনায় দুজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
গাজিপুরের কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগারের হিসাব রক্ষক মো. শহিদুল ইসলাম হত্যার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে দুজনকে গ্রেপ্তার করেছেন মানিকগঞ্জ সদর থানা-পুলিশ। গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন, জেলার সিঙ্গাইর উপজেলার শায়েস্তা ইউনিয়নের শ্যামনগর গ্রামের আনিস শেখের ছেলে মিস্টার আলী (২৩) ও একই গ্রামের মো. এখলাছ শেখের ছেলে মো. শাহীন (৪০) ।
আজ রোববার দুপরের দিকে পুলিশ সুপারের কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন পুলিশ সুপার মোহাম্মদ গোলাম আজাদ খান।
পুলিশ সুপার বলেন, গ্রেপ্তারকৃত আসামি মিস্টার আলী শুকতারা পরিবহন নামে একটি বাসের চালক এবং শাহীন ওই পরিবহনের সহকারী হিসেবে কাজ করেন। ডাকাতির পরিকল্পনা নিয়ে আরও তিনজনসহ গত রোববার ঈদের আগের দিন রাত ১০টার পরে ঢাকার গাবতলী থেকে বেশ কিছু যাত্রী নিয়ে শুকতারা পরিবহনে তুলে মানিকগঞ্জে রওনা হন তারা। এরপর বাসটি নবীনগর এলাকায় এলে মানিকগঞ্জ আসার জন্য মো. শহিদুল ইসলাম ওই বাসে ওঠেন।
বাসটি মানিকগঞ্জে পৌঁছানোর আগেই বাসে থাকা যাত্রীরা বিভিন্ন স্টেশনে নেমে যান। এ সময় বাসে মো. শহিদুল ইসলাম ছাড়া আর যাত্রী না থাকায় তাঁকে ভয়ভীতি দেখিয়ে টাকা-মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নেন তারা। একপর্যায়ে শহিদুল ইসলামের পরিচয় জানতে পাড়েন আসামিরা। এরপর তাঁকে বেধরক মারধর করে আহত অবস্থায় ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের মানিকগঞ্জ সদর উপজেলার জাগীর ব্রিজ থেকে নিচে ফেলে দেন। পরে ঈদের দিন সকালে শহিদুল ইসলামের মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. হাবিল হোসেন বলেন, ঈদের দিন সকালে নিহতের পরিবার থেকে মৌখিক অভিযোগ দেওয়া হয়। এরপর সকাল ৯টার দিকে স্থানীয়দের কাছে খবর পেয়ে জাগীর ব্রিজের নিচ থেকে কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগারের হিসাব রক্ষক মো. শহিদুল ইসলাম খানের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। পরে নিহত ব্যক্তির বড় মেয়ে মাহিশা মালিহা বিভা হত্যা মামলা দায়ের করেন।ওসি বলেন, তদন্ত কর্মকর্তারা মহাসড়কের বিভিন্ন স্থানের সিসি ক্যামেরা দেখে ডাকাতির কাজে ব্যবহৃত গাড়ি শনাক্ত করেন। এরপর গতকাল শনিবার দিনগত রাতে হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত সন্দেহে দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে জিজ্ঞাসাবাদে মো. শহিদুল ইসলাম খানকে ব্রিজ থেকে ফেলে দেওয়ার কথা স্বীকার করেন তাঁরা।
ওসি আরও বলেন, আসামিদের কাছ থেকে মো. শহিদুল ইসলামের মোবাইফোনসহ তিনটি ফোন ও ৪ হাজার টাকা জব্দ করা হয়েছে। এ ঘটনায় জড়িত থাকায় আরও তিনজনকে গ্রেপ্তারের অভিযান অব্যাহত আছে। আদালতের নির্দেশে আসামিদের কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
জানা গেছে, গাজিপুর জেলার কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগারের হিসাব রক্ষক মো. শহিদুল ইসলামের বাড়ি সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার ভাজনদাসগাথী এলাকায়। মানিকগঞ্জ জেলা কারাগারে চাকরি করা অবস্থায় মানিকগঞ্জ শহরের গঙ্গাধর পট্টি এলাকায় ভাড়া বাসায় পরিবার নিয়ে থাকতেন। পরে তিনি মানিকগঞ্জ থেকে বদলি হয়ে কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগারে যান। কিন্তু তাঁর পরিবার মানিকগঞ্জে থাকাতে পরিবারের সঙ্গে ঈদ করতে মানিকগঞ্জে আসছিলেন তিনি।