সোহেল হোসাইন, মানিকগঞ্জ:
মানিকগঞ্জের সাটুরিয়া উপজেলায় জনবসতি এলাকায় নির্মাণাধীন পোল্ট্রিফার্ম বন্ধের দাবিতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ করে এলাকাবাসী। এর আগে জনসাধারণের বসবাসের স্বার্থে পোল্ট্রিফার্ম নির্মাণ কার্যক্রম বন্ধের জন্য জেলা প্রশাসক, পরিবেশ অধিদপ্তর, সাটুরিয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসারসহ সংশ্লিষ্ট দপ্তরেএলাকাবাসী গণস্বাক্ষরসহ লিখিতভাবে আবেদন করেছেন।
শুক্রবার(২৮ জুন) দুপুরে উপজেলার ধানকোড়া ইউনিয়নের বরুন্ডী মাজার এলাকায় খোর্দ্দখোলা গ্রামের বাসিন্দারা এই মানববন্ধন ও বিক্ষোভ করেন। এতে ওই এলাকার শতাধিক সাধারণ মানুষ অংশ নেন।
জেলা প্রশাসক বরাবর লিখিত আবেদন সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার ধানকোড়া ইউনিয়নের ৮ নং ওয়ার্ডের খোর্দ্দখোলা গ্রামের স্থায়ীবাসিন্দা মোঃ ফজলুল হকের ছেলে মোঃ ফাইজুর রহমান বসতবাড়ির পাশেরই পোল্ট্রিফার্ম নির্মাণ করছেন। পোল্ট্রিফার্মটি করা হলে এলাকার সাধারণ জনগণের বসবাস করা খুবই কষ্টসাধ্য হবে এবং বিভিন্ন রোগবালাইয়ে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। ওই এলাকার বসবাসরত সাধারণ জনগণের স্বাস্থ্যবিধি ও পরিবেশ দূষণের কবল থেকে রক্ষার্থে পোল্ট্রিফার্মটি বন্ধের জন্য জোড় দাবি জানায় এলাকাবাসী।
মানববন্ধনের অংশ নিয়ে পোল্ট্রিফার্ম বন্ধের দাবি জানায় ৭০ বছর বয়সের বৃদ্ধা মহেলা বেগম। তিনি খোর্দ্দখোলা গ্রামের শামসুল হকের স্ত্রী। আলাপকালে মহেলা বেগম বলেন,‘জীবনের শেষ বয়সে এসে শান্তিমত একটু নিঃশ্বাস নিবো তারও কোন উপায় নেই। বাড়ির পাশেই একজন পোল্ট্রিফার্ম দিছে। দুর্গন্ধে বাড়িতে থাকাই যায় না। এর মধ্যে এলাকার আরেকজন নতুন করে আরেকটি ফার্ম দিতাছে। এটি হলে তো আমাদের এখানে থাকাই কষ্টকর হয়ে যাবে।
স্থানীয় বাসিন্দা মোঃ মোনায়েম বলেন, ‘আমার বাড়ির পাশেই পোল্ট্রিফার্ম দিতাছে ফাইজুর রহমান। তিনি স্থানীয়ভাবে প্রভাববিস্তার করে এই ফার্মটি দিচ্ছে। আমরা এলাকার লোকজন তাকে মোখিকভাবে নিষেধ করেছি, কিন্তুর তিনি আমাদের কথা শুনেনি। এ কারণে এলাকার সাধারণ মানুষের বসবাসের স্বার্থে পোল্ট্রিফার্ম বন্ধের জন্য জেলা প্রশাসক বরাবর লিখিতভাবে দরখাস্ত করেছি এবং আজকে আমরা মানববন্ধন করলাম। সাধারণ মানুষদের ভোগান্তি লাঘবে সংশ্লিষ্ট প্রশাসন এই পোল্ট্রিফার্ম বন্ধে পদক্ষেপ নিবে।
মহেলা বেগম, মোঃ মোনায়েমের মত ওই এলাকার হাসেন আলী, আবদুল মান্নান, আয়েশা আক্তার, হারুন অর রশিদ, কিরণ আক্তার, শফিকুল ইসলাম বাবুলসহ স্থানীদের দাবি দ্রুত সময়ের মধ্যে জনবসতিপূর্ণ এলাকায় নির্মাণাধীন পোল্ট্রিফার্ম বন্ধে প্রশাসন ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।
পোল্ট্রিফার্মে য়ৌথ মালিক মোঃ ফাইজুর রহমান ও হাসিব মুঠোফোনে বলেন, ‘পোল্ট্রিফার্মটি করার জন্য ধানকোড়া ইউনিয়ন পরিষদ থেকে ট্রেড লাইসেন্স, চেয়ারম্যানের অনুমতিপত্র এবং মানিকগঞ্জ পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র আছে। যিনি আমাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছেন তার সঙ্গে ব্যক্তিগতভাবে দ্বন্দ্ব রয়েছে। আর তার বাড়ি থেকে ফার্মটি অনেক দূরে আর আমার বাড়ি রাস্তার সঙ্গেই।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে মানিকগঞ্জ পরিবেশ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মোঃ ইউসুফ আলী মুঠোফোনে বলেন,‘লিখিতভাবে দেওয়া আবেদনের বিষয়ে আমরা অবগত আছি। পোল্ট্রিফার্ম স্থাপনের জন্য পরিবেশ অধিদপ্তর থেকে ছাড়পত্র দেওয়া হয়েছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন,‘ ছাড়পত্র দেওয়া হয়েছে কিনা তা আমার জানা নেই। তবে ছাড়পত্র দেওয়া হলেও যদি পরিবেশ দূষণ হয়, শর্তভঙ্গ করে এবং জনস্বার্থের ক্ষতি করে কার্যক্রম পরিচালনা করা হয় তাহলে আমরা ছাড়পত্র বাতিলও করতে পারি।
এ বিষয়ে জানতে আজকে দুপুর সোয়া ৩ টার দিকে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে জেলা প্রশাসক রেহেনা আকতার বলেন, ‘এ বিষয়ে লিখিত আবেদনটি এখনো আমার কাছে আসেনি। তবে খোঁজখবর নিয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে তিনি জানান।