এস এম আকরাম হোসেন : বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেছেন, ‘আমাদের কষ্টের টাকা, মাথার ঘাম পায়ে ফেলানো টাকা, ট্যাক্সের টাকা লুট করে আপনার বিদেশের ছেলেদের দামি দামি গাড়ি কিনে দেবেন। জাতীয় রাজস্ব বোর্ডে(এনবিআর) সদস্য মতিউরের ছেলে বিদেশের দামি গাড়ি চালাবে, দামি ফ্ল্যাটে থাকবে আর আমার দেশের কৃষকরা তাদের শস্যের ন্যায্য মূল্য পাবে না। দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতিতে আজকে দেশের মানুষ পাগল হয়ে গেছে। আপনারা অপকর্ম করছেন, আর সার্বজনীন পেনশন স্কিম করছেন। দেশের কোষাগারের টাকা শূণ্য হয়ে গেছে, এখন অন্যের পকেট কেটে তাদের টাকায় কোষাগার ভরতে হবে।
শনিবার(৭ জুলাই) বিকেলে মানিকগঞ্জ জেলা শহরের খন্দকার দেলোয়ার হোসেন ‘ল’ কলেজ প্রাঙ্গণে বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে জেলা বিএনপির আয়োজিত সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
মির্জা আব্বাস বলেন, ‘খালেদা জিয়াকে যে কোন মূল্যে আমাদের মুক্ত করতে হবে। তার মুক্তির উপর নির্ভর করছে এই দেশের মানুষের গণতন্ত্র, স্বাধীনতা ও স্বার্বভৌমত্ব। সুতরাং খালেদা জিয়ার মুক্তির আন্দোলনকে আরো বেগবান ও জোড়দার করতে হবে। আমরা কিছু করতে পারি আর না পারি খালেদা জিয়াকে জীবিত থাকা অবস্থায় দেখাতে চাই, আমরা আপনার মুক্তির জন্য আন্দোলন করেছি, যুদ্ধ করেছি, রাস্তায় নেমেছি। তিনি যেন বলতে না পারেন দল তার মুক্তির জন্য কিছুই করে নাই।’
দলীয় নেতাকর্মীদের উদ্দ্যেশে মির্জা আব্বাস আরোও বলেন, ‘দেশ স্বাধীনের সময় ৭১ এর যুদ্ধে যারা অংশ নিতে পারেনি নাই। তাদেরকে আবারও যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত হতে হবে। ৩০ লাখ মানুষের রক্তের বিনিময়ে এই দেশ স্বাধীন হয়েছে। এই স্বাধীনতাকে রক্ষা করার জন্য আরেক বার যুদ্ধ করতে হবে। দেশের স্বাধীনতা রক্ষার্থে ৬০ লাখ মানুষকে রক্ত দিতে হবে। বিএনপির নেতাকর্মীদের দেশের স্বাধীনতাকে রক্ষার এই যুদ্ধের জন্য প্রস্তুতি নিতে হবে।’
সম্প্রতি শিক্ষার্থীদের কোটা আন্দোলন নিয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেন, ‘ছাত্র ছিলাম লেখাপড়া করেছি। আমার বন্ধুরা লেখাপাড়া শেষে যাথারিতি চাকরি করছে। কোটার কথা কখনো শুনি নাই, কিসে কোটা, কার জন্য এই কোটা। যে লেখাপড়া ভালো করবে সে আগে যাবে চাকরি পাবে, কোটা কার জন্যে। যদি বলেন মুক্তিযোদ্ধা কোটা, তাহলে শতভাগ দেন। কিন্তু কয়জন প্রকৃতি মুক্তিযোদ্ধা জীবিত আছেন।’তিনি বলেন, ‘ভূয়া মুক্তিযোদ্ধা বানিয়ে তাদের সন্তানদের কোটা দেবেন, এটা মেনে নেবো না, এখানে আমাদের আপত্তি আছে। প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধাদের সন্তানদের কোটা দেন। এটা তাদের প্রাপ্প। আর প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধের যাথাযথ সম্মান দেওয়া হয় এটাও আমাদের কাম্য। এই কোটা ব্যতিত মেধার ভিত্তিতে চাকরি দিতে হবে। আর না হলে এই দেশ মেধা শূণ্য হয়ে যাবে। এই দেশের অফিসগুলোতে মেধাশূণ্য মাথাভারি প্রশাসন হবে এবং দেশ ভালোভাবে চলতে পারবে না। সুতরাং শিক্ষার্থীদের কোটা আন্দোলন ভূল পথে যাচ্ছে না, তারা সঠিক পথেই আছে।’
পেনশন স্কিম সম্পর্কে মির্জা আব্বাস বলেন, ‘শিক্ষকদের বলা হয়েছে, আপনাদের বেতনের এত টাকা পেনশনে রাখতে হবে আর এত টাকা আপনারা পাবেন। ভাগ করে দেওয়া হয়েছে, কেন ভাই?শিক্ষকদের বেতনের ওপর হামলা কেন? শিক্ষকদের ওরা(আওয়ামী লীগ সরকার) ট্রায়েল দিচ্ছে, সার্বজনীন পেনশন কেন কি কারণে? জনতা ব্যাংকের চার হাজার পাচ হাজার কোটি টাকা অনিয়ম আপনারা মাফ করে দিলেন। বড় বড় চোরদের বিশালা চুরি করার সুযোগ করে দিলেন। আর পেনশন স্কিম করেন, এই টাকা যায় কোথায়?
বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা ও জেলা বিএনপির সভাপতি আফরোজা খান রিতার সভাপতিত্বে সাধারন সম্পাদক এস এ জিন্নাহ কবিরের সঞ্চালনায় অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, বিএনপির ঢাকা বিভাগের নির্বাহী কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক কাজী সায়্যেদুল আলম বাবুল, সহ সাংগঠনিক সম্পাদক বেনজীর আহমেদ টিটো, নজুরুল ইসলাম আজাদ, জেলা বিএনপির সহসভাপতি এ্যাড. আজাদ হোসেন খান, পৌর বিএনপির সভাপতি নাসির উদ্দিন আহম্মেদ যাদু, জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক নুরতাজ আলম বাহার, জেলা ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি ও জেলা বিএনপি নেতা গোলাম কিবরিয়া সাঈদ, জেলা যুবদলের আহবায়ক কাজী মোস্তাক হোসেন দিপু, জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহবায়ক মোঃ জিন্নাহ খান, জেলা ছাত্রদলের সাধারন সম্পাদক সিরাজুল ইসলাম খান সজিব প্রমুখ।
এসময় উপস্থিত ছিলেন জেলা বিএনপির সহ সভাপতি আব্দুল বাতেন, যুগ্ন সম্পাদক সত্যেন কান্ত পন্ডিত ভজন, এস এম ইকবাল হোসেন, দপ্তর সম্পাদক এ্যাড. আরিফ হোসেন লিটন, যুব বিষয়ক সম্পাদক রিয়াজ মাহমুদ হারেজ, প্রচার সম্পাদক শামিম আল মামুন, জেলা যুব দলের সদস্য সচিব তুহিনুর রহমান তুহিন, সিনিয়র যুগ্ন আহবায়ক জিয়া উদ্দিন আহম্মেদ কবির, জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্য সচিব রকিবুর রহমান রাকিব, জেলা শ্রমিক দলের সভাপতি আব্দুল কাদের, সাধারন সম্পাদক আব্দুর রাজ্জাক লিটন, জেলা মহিলা দলের সভাপতি ছাবিহা হাবিব, সাধারন সম্পাদক মুন্নি, সাংগঠনিক সম্পাদক মাসুমা আক্তার মুক্তি, জেলা সড়ক পরিবহন শ্রমিক দলের সাধারন সম্পাদক আবুল কাশেম, জেলা ওলামা দলের সভাপতি কাজী আশিকুর রহমান খান রাজু, সাধারন সম্পাদক আমিনুর রহমান, জেলা ছাত্রদলের সভাপতি আব্দুল খালেক শুভ, জেলা উপজেলা ও সহযোগী সংগঠনের নেত্রীবৃন্দ ।
জেলা বিএনপির সভাপতি আফরোজা খানম রিতা বলেন, আমাদের একটাই লক্ষ বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি এ লক্ষ নিয়ে আমাদের আগাতে হবে ইনশাআল্লাহ আমরা আগামীতে দুর্বার গতিতে এগিয়ে যাব।