স্টাফ রিপোর্টার:
মানিকগঞ্জ শহরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন এ গুরুতর আহত হয়েছে শিক্ষার্থী, সাংবাদিক এবং সাধারন মানুষ।
গত ১৮ই জুলাই এবং ৪ই আগস্ট মানিকগঞ্জে বৈষম্য বিরোধী শান্তিপূর্ণ আন্দোলন করতে গেলে বাধা দেয় আওয়ামী লীগ এর নেতা কর্মী এবং পুলিশবাহিনী।এই ঘটনায় গুরুতর আহত হয় একাধিক শিক্ষার্থী,গণমাধ্যম কর্মী,সাধারণ জনগণ।
এই আন্দোলনে আহত গণমাধ্যম কর্মী দেওয়ান সাদমান শাওন বলেন, গত ৪ তারিখ সংবাদ সংগ্রহের জন্য আমি আন্দোলনের স্থানে অবস্থান নেই। এসময় মানিকগঞ্জের সিনিয়র সাংবাদিকবৃন্দ এবং দৈনিক আমার নিউজ এর প্রকাশক ও সম্পাদক আকরাম হোসেনও উপস্থিত ছিলেন। সংবাদ সংগ্রহের সময় মানিকগঞ্জ থেকে সঠিক সংবাদ প্রকাশ করায় আমি সাধারণ শিক্ষার্থীদের থেকে অনেক ভালোবাসা ও সম্মান পাই। কিন্তু অতর্কিতভাবে একদল আমার উপর হামলা চালায়।এতে আমি গুরুতর আহত হয়।আমার মাথায় ৬টি সেলাই লাগে।এছাড়া একজন শিক্ষার্থী হিসেবে আন্দোলনের সাথে আমি শুরু থেকেই জড়িত।
সরকারি দেবেন্দ্র কলেজ প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী আরমান হোসেন বলেন, গত ১৮ই জুলাই আমরা শান্তিপূর্ণভাবে আন্দোলন করতে গেলে আমাদের উপর হামলা করে। আমাকে তারা অনেক মারধর করে। আমার মাথায় আঘাত করলে আমি অজ্ঞান হয়ে যাই এবং মাথায় ৮টি সেলায় লাগে। পায়ে কয়েকটি কুপ দেয়।কুপের ফলে আমার পায়ের বাটি কেটে দুইভাগ হয়ে যায়। আমার স্বপ্ন ছিল বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে ভালো পদে যুক্ত হব।কিন্তু আমার পায়ের যে আঘাত পেয়েছি তার ফলে আমার আর সেই স্বপ্ন পূরণ হবে না।
পশ্চিম সেওতার দিনমজুর মোহাম্মদ নয়ন মিয়া বলেন,আমি শুরু থেকেই ছাত্র আন্দোলনের পাশেই আছি।গত ৪তারিখ আন্দোলনে সময় বাসস্ট্যান্ডে যখন পুলিশ এবং আন্দোলনকারীদের মাঝে ঝামেলা হয় তখন পুলিশ টিয়ারগ্যাস মারে। টিয়ারগ্যাসে আমি অসুস্থ হয়ে পরি। পরে পুলিশ গুলি করলে আমার গায়ে গুলি লাগে।আমার আশেপাশের লোকজন ধরাধরি করে হাসপাতালে নিয়ে যায়। ৪তারিখেই আমাকে মুন্নুতে রেফার করে।এবং সেখানে জেলা বিএনপির সভাপতি আফরোজ খান রিতা আপা আমার চিকিৎসার ব্যাবস্থা করে দেন।তার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ জানাই তাকে।
সরকারি দেবেন্দ্র কলেজের স্নাতক ১ম বর্ষের শিক্ষার্থী হাসনাহেনা বলেন, গত ১৮ই জুলাই কোর্ট চত্ত্বর থেকে আমরা বিক্ষোভ মিছিল বের করি। খালপার পৌছালে আওয়ামিলীগ,যুবলীগ সহ সকলে আমাদের উপর আক্রমণ করে।আমার কোমরে কোপ দেয়।কোপ দেওয়ার পরে মহিলা নেত্রীরা আমাকে মারধর করতে থাকে।আমি সেখান থেকে দৌরে পালিয়ে যায়।আমার সব থেকে খারাপ লেগেছে আমাকে যখন আঘাত করে পুলিশ সেখানে দাঁড়িয়ে তামাশা দেখতেছিল।তারা কোন ব্যাবস্থায় নেয় নি।
সাটুরিয়া উপজেলার এসএসসি শিক্ষার্থী সজিব বলেন, গত ৪ই আগস্ট আমরা বাসস্ট্যান্ডে পৌর মার্কেটের সামনে আসলে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা আমার মাথায় কোপ দেয় এবং হাতের আঙুলে গুলি করে। পরে আমি সেন্সলেস হয়ে পরি।
তিনি আরও বলেন,আমার বড় হয়ে খেলোয়াড় হওয়ার স্বপ্ন ছিল কিন্তু সেটি এখন আর সম্ভব না।
সরেজমিনে দেখা যায় সজিবের মাথায় এবং হাতে একাধিক কোপের চিহ্ন এবং আঙ্গুলে গুলি লাগে।তার আঙ্গুল অংশ কেটে ফেলা হয়।
জেলা বিএনপির সভাপতি ও বিএনপির চেয়ারপার্সন এর উপদেষ্টা আফরোজা খানম রিতা বলেন,আহতদের পাশে মুন্নু গ্রুপ এবং জেলা বিএনপি আছে। আহত সাংবাদিকসহ আন্দোলনকারীদের মুন্নু মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে সর্বোচ্চ চিকিৎসার ব্যাবস্থা করে দিব আমরা মুন্নু গ্রুপ।