স্টাফ রিপোর্টার:
মানিকগঞ্জের শিবালয়ে মহাদেবপুর ইউনিয়ন সরকারি ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ মোঃ খলিলুর রহমানের বিরুদ্ধে নানা অনিয়ম, ও দুর্নীতির অভিযোগ ওঠেছে। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে প্রত্যক্ষভাবে বিরোধিতা করা এ শিক্ষক বর্তমানে রয়েছে আত্মগোপনে। ফলে জিমিয়ে পড়েছে কলেজের বিভিন্ন দাফতরিক কার্যক্রম।
সোমবার ২ সেপ্টেম্বর দুপুরে কলেজ প্রাঙ্গনে বর্তমান ও সাবেক শিক্ষকদের এক প্রেস ব্রিফিংয়ে সিনিয়র প্রভাষক আব্দুল মজিদ জানান, বাংলাদেশে দুই ধরনের আয়না ঘর ছিল একটা সরকার করেছে আর মহাদেবপুর ইউনিয়নের আয়না ঘর অধ্যক্ষ দুর্নীতিবাজ খলিলুর রহমান তিনি করেছেন। কোন শিক্ষককে একসাথে কথা বলতে দেয় নাই। সকল শিক্ষকদের বাকস্বাধীনতা রুদ্ধ করে এই জাতীয় দুর্নীতি আপনারা দেখছেন আমি ১২টি বছর বাইরে ছিলাম বার বার যখন কলেজে এসেছি শিক্ষকরা আমার কাছে বলেছে যে স্যার এই এই কাজ হচ্ছে আমরা কেউ কথা বলতে পারি না।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা জানান, এই কলেজের যে প্রিন্সিপাল সে দুর্নীতি ও অপকর্মের সাথে জড়িত। এবং তার সাথে যারা জড়িত সঠিক তদন্তের মাধ্যমে তাদের যেন আইনের আওতায় আনা হয়। এবং অবিলম্বে তার পদত্যাগ দাবি করছি। এই দাবি যদি না শোনা হয় পরবর্তিতে আমরা আন্দোলনের ডাক দিব।
জানা যায়, আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে ২০১২ সালে প্রভাষক থেকে সরাসরি অধ্যক্ষ পদে যোগদান করেন ১৯৯৩ সালে নিয়োগ পাওয়া এই প্রভাষক।
২০১৮ সালে কলেজ সরকারিকরণ হলে আরো বেপরোয়া হয়ে উঠেন তিনি। ইচ্ছামতো সরকারিকরণ বাণিজ্য, নিয়োগ বানিজ্য, ভর্তি দূর্নীতি, বিভিন্ন ভাবে ফি আদায়, ভূয়া বিল ভাউচার, বৃক্ষরোপন দুর্নীতিসহ নানা ভাবে ৮ কোটি ৮৫ লক্ষ ৭৬ হাজার টাকা হাতিয়ে নেন তিনি।
করেছেন মানিকগঞ্জ বনগ্রাম আবাসিক এলাকায় সাড়ে ৫ শতাংশ জায়গার উপর নির্মিত ৬তলা বাড়ী, দুই ইউনিটের একটি ফ্ল্যাট, মানিকগঞ্জ বাসস্ট্যান্ডে পৌর মার্কেটে নিজ নামে ১টি দোকান ও বেনামে একাধিক দোকান, দুই মেয়ের নামে ৫০ লক্ষ টাকার সঞ্চয়পত্র, স্ত্রীর নামে বেনামে বিভিন্ন একাউন্টে লক্ষ লক্ষ টাকা। যা আয়কর রিটার্নেও রাখা হয়েছে গোপন।
এছাড়াও গ্রামের বাড়িতে নামে বেনামে জমি ক্রয়, মেয়েদের ২০ লক্ষাধিক টাকা খরচ করে প্রাইভেট মেডিকেলে পড়ানো, বিয়েতে প্রচুর স্বর্ণালংঙ্কার জামাইকে নগদ অর্থ প্রদান করা হয় অবৈধ উপায়ে কামানো এসব টাকা থেকে।
পৌর আইন অমান্য করে প্রতিবেশীর জায়গা দখলের অভিযোগও রয়েছে তার বিরুদ্ধে।
সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক স্বপনের আত্মীয় ও জাবী ছাত্রলীগ নেতার পরিচয়ে করত এসব অপকর্ম। রাখতেন সব দলের সাথেই সম্পর্ক।
কলেজ সরকারিকরনের আগে যারা ম্যানেজিং কমিটিতে ছিল সরকারিকরনের পর তারাই এই কলেজ পরিচালনা করত। ছাত্র-জনতার এই গনঅভ্যুত্থানে এই সরকার পরিবর্তন না হলে তারা মৃত্যুর আগ পর্যন্ত এই কলেজ পরিচলনা করত। এই কলেজের হালুয়া রুটি তারা ভাগজোগ করে খেত। এই দুর্নীতিতে আওয়ামী লীগের কিছু লোকও জড়িত। এবং প্রিন্সিপালরে এরাই পরিচালনা করত বলে দাবি স্থানীয় ও অন্যান্য শিক্ষকদের।
অধ্যক্ষের দুর্নীতির বিষয়ে জানতে চাইলে কলেজের শিক্ষক পরিষদের সেক্রেটারি মার্কেটিং বিভাগের প্রভাষক আব্দুল মতিন বিষয়টি বার বার এড়িয়ে যান।