স্টাফ রিপোর্টার:
মানিকগঞ্জে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে হামলা ও মারধরের ঘটনায় দায়ের করা মামলায় স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের দুই নেতাকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গতকাল সোমবার রাতে সদর উপজেলায় নিজ বাড়ি থেকে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তার দুই নেতা হলেন, সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের শ্রমবিষয়ক সম্পাদক ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি আবুল কাশেম (৪৮) এবং সদর উপজেলার জাগীর ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মো. হৃদয় (২৭)।
এজাহার এবং স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গত ১৮ জুলাই সকালে আসামিরা পিস্তল, শর্টগান, এ কে ৪৭ এবং রাম দা, ছ্যান, চাপাতি, সামরাই, চৌশিরা কাঠের বাটাম সহ বিভিন্ন দেশীয় মারাত্বক প্রাণ নাশক অস্ত্র-শস্ত্রে সজ্জিত হইয়া বি, এন, পির নেতা-কর্মীদে ্া করার উদ্দেশ্যে মানিকগঞ্জ খাল-পাড় মোড়ে জড়ো হতে থাকেন। সকাল সাড়ে ১০টার দিকে জেলা শহরের খালপাড় মোড় এলাকায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্রআন্দোলনে সাধারণ ছাত্র-ছাত্রীদের কর্মসূচি সফল করার লক্ষ্যে জেলা বিএনপি ও এর অঙ্গসংগঠনের নেতা-কর্মীরা একত্রিত হয়ে বিএনপির কার্যালয়ে যাচ্ছিলেন বাদি আজাদ হোসেন। দলের নেতা-কর্মীদের একটু আগে তিনি বের হলে পথে খাল মোড় এলাকায় আসামি কাজী এনায়েত হোসেনের নির্দেশে আসামি সিফাত কোরাইশী, জুয়েল ও ইমন বাদির গতিরোধ করেন।
এ সময় অন্যান্য আসামিদের মদদে সিফাত কোরাইশী তাঁর হাতে থাকা শর্টগান দিয়ে জেলা বিএনপির সহসভাপতি আজাদ হোসেন খানকে হত্যার উদ্দেশে গুলি করেন। গুলি লক্ষভ্রষ্ট হলে আবারও গুলি করলে তা বের না হওয়ায় অপর আসামির হাতে থাকা কাঠের বাটাম নিয়ে সিফাত কোরাইশী বাদিকে এলোপাথারি পেটান। এর অন্যান্য আসামিরা তাঁদের হাতে থাকা বিভিন্ন ধরণের আগ্নেয়াস্ত্র এবং রাম দা, ছোরা ও লোহার রড নিয়ে বিএনপির নেতা-কর্মীদের ওপর একযোগে হামলা করেন। আগ্নেয়াস্ত্রের গুলিতে জেলা ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি রেজাউর রহমান খান ওরফে সজিব গুরুতর আহত হন।
এ ঘটনায় গত ৮ সেপ্টেম্বর আজাদ হোসেন খান বাদি হয়ে আওয়ামী লীগ এবং এর অঙ্গসংগঠনের ২০ জন নেতা-কর্মীর নামসহ অজ্ঞাত আরও ১০০ থেকে ১৫০ জনকে আসামি করে সদর থানায় মামলা করেন।
মামলায় আসামিদের মধ্যে রয়েছেন জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি গোলাম মহীউদ্দীন, সাধারণ সম্পাদক আবদুস সম, যু্ন সাধারণ সম্পাদক সুলতানুল আজম খান, কাজী এনায়েত হোসেন, জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি সিফাত কোরাইশী ওরফে সুমন, জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি আবু বকর সিদ্দিক খান, সাধারণ সম্পাদক আবুল বাশার, জেলা যুবলীগের আহ্বায়ক আবদুর রাজ্জাক ওরফে রাজা, পৌর আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক মাহিদুল ইসলাম, যুবলীগের কর্মী ইরাদ কোরাইশী ওরফে ইমন, জুয়েল ভুঁইয়া ও মো. সানি এবং পৌর ছাত্রলীগের সভাপতি অভিজিৎ সরকার।
সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এস এম আমান উল্লাহ বলেন, গতকাল সোমবার রাতে সদর উপজেলার পাথরাইল গ্রাম থেকে আসামি কাশেম এবং জয়রা গ্রাম থেকে হৃদয়কে গ্রেপ্তার করা হয়। আজ মঙ্গলবার দুপুরে তাঁদেরকে আদালতে পাঠানো হয়েছে। অন্যান্য আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।