আমার নিউজ ডেস্ক,
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ বিলুপ্ত ঘোষণার এক মাস পরও স্বাভাবিক হয়নি সংসদ সচিবালয়ের দাপ্তরিক কাজকর্ম। গত ৫ আগস্ট জাতীয় সংসদ সচিবালয়ে ব্যাপক ভাঙচুর হয়। এরপর ৪৫ দিন পার হলেও সংস্কারের কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি জাতীয় সংসদ ভবনের।পাশাপাশি কাজ না থাকায় নিয়মিত অফিস করতে পারছে না অধিকাংশ কর্মকর্তা-কর্মচারী।
সংসদ সূত্র জানায়, জাতীয় সংসদ সচিবালয়ে প্রায় ১ হাজার ১৫০ জন কর্মকর্তা ও কর্মচারী রয়েছেন। ডিজিটাল হাজিরার সিস্টেম ভাঙচুর করে নষ্ট করে ফেলায় অনেকে আসছেন না সংসদ সচিবালয়ে।সংসদের ভেতরে কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের বসার চেয়ার, টেবিলও ভেঙে ফেলাসহ নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
অধিকাংশ দরজা ও জানালা ভাঙা। সংসদে থাকা কয়েকশ কম্পিউটার ও ল্যাপটপ খোয়া গে। দিন পার হলেও েরামতেরও কোনো উদ্যোগ নেই।এ কারণে সংসদ সচিবালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা অজুহাত দেখিয়ে ঠিকমতো অফিস করছে না। আবার অনেকে অফিস করলেও সংসদ বিলুপ্ত-পরবর্তী রুটিন কার্যক্রম তারা চালিয়ে নিতে পারছেন না।
এ বিষয়ে সংসদ সচিবালয়ের একজন কর্মকর্তা বলেন, সংসদ ভবন ২১৫ একর জায়গার ওপর অবস্থিত। ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর জাতীয় সংসদ ভবন চত্বর ও ভবনের ভেতরে প্রবেশ করে হাজার হাজার মানুষ। এ সময় তারা প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর, বিরোধীদলীয় সংসদ নেতা, স্পিকার, ডেপুটি স্পিকার, চিফ হুইপ, হুইপদের কক্ষসহ ৯ তলা ভবনের অধিকাংশ কক্ষ ভাঙচুর করা হয়।
সংসদ সচিবালয়ের একাধিক কর্মকর্তা বলেন, সংসদের আসবাবপত্র, জানালাসহ বিভিন্ন জিনিসপত্র ভেঙে ফেলা হয়েছে। সংসদের কিছু রুটিন ওয়ার্ক আছে যা এখনও শুরু করতে পারিনি। সচিব স্যার দায়িত্ব নিয়েছেন। তিনি ক্ষতিপূরণ নির্ধারণসহ সংস্কারের কাজ দ্রুত শুরু করবেন।
সংসদে ভবনে দায়িত্বপালকারী নিরাপাত্তাকর্মী বলেন, ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা পালিয়ে যাওয়ার পর সংসদ ভবনের গেটে প্রথমে দায়িত্বে থাকা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী প্রবেশে বাধা দেন। হাজার হাজার মানুষ সংসদ ভবন চত্বরের দক্ষিণ প্লাজা, খেজুরবাগান মাঠ, ট্যানেলে ঢুকে পড়ে হাজারো মানুষ।
তারা আরও বলেন, বিকাল থেকে সার এক মানুষ সংসদ ভবনের ্রায় সব কক্ষেই লুটপাট চালায়।আবার অনেকেই ৬ আগস্ট তালা ভেঙে ল্যাপটপ, কম্পিউটার, টিভি, ফ্রিজসহ মূল্যবান কাগজ নিয়ে যায়। বেলা সাড়ে ১১টার দিকে সেনাবাহিনী সংসদ ভবনের নিরাপত্তার কাজ শুরু করে। সেনাবাহিনী সচিবালয়ের কর্মচারী-কর্মকর্তা ছাড়া অন্য কাউকে প্রবেশ করতে দেয়নি। ছাত্রদের পক্ষ থেকে মালপত্র ফেরত দেওয়ার অনুরোধ জানালে কিছু মালামাল কেউ কেউ নিয়ে আসলে সংসদের গোডাউনে রেখে দেওয়া হয়।
জাতীয় সংসদের অতিরিক্ত সচিব জেবুন্নেসা করিম বলেন, জরুরি ভিত্তিতে সংসদ ভবনের মেরামত কাজ করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। সংসদ ভবন দাপ্তরিক ও ব্যক্তিগত মোট ৯০ লাখ টাকা হারিয়ে গেছে।সংসদ ভবনের বিভিন্ন কার্যালয়, অধিশাখা ও শাখার হারানো ও ক্ষতিগ্রস্ত মালামালের তালিকা এ সপ্তাহে জমা হবে এবং দ্রুত কাজ শুরু করা হবে।
তিনি বলেন, জাতীয় সংসদ ভবনে ক্ষতিগ্রস্ত কম্পিউটার, প্রিন্টার, স্ক্যানার, ইন্টারনেট সংযোগ, টেলিফোন এক্সচেঞ্জ, লাইন ও সেটসমূহ জরুরি ভিত্তিতে মেরামত করার প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে।