আমার নিউজ ডেস্ক,
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের চূড়ান্ত প্রচারণার মাত্র ৪৮ ঘণ্টা বাকি থাকতে দোদুল্যমান রাজ্যগুলোতে (সুইং স্টেট) নতুন করে তৎপরতা চালাচ্ছেন মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিস এবং সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ এই নির্বাচনে নিজেদের অবস্থান শক্তিশালী করতে তারা শেষ মুহূর্তের প্রচারণায় ঝাঁপিয়ে পড়েছেন। ফরাসি বার্তা সংস্থা এএফপি এ খবর জানিয়েছে।
ইতোমধ্যে ৭ কোটি ৫০ লাখের বেশি ভোটার আগাম ভোট দিয়েছেন। মঙ্গলবার চূড়ান্ত ভোট গ্রহণের আগে এ মুহূর্তে একাধিক রাজ্যের জরিপে দুই প্রার্থীর ব্যবধান খুবই সামান্য। যা এই নির্বাচনের ইতিহাসে বিরল।
নির্বাচনি প্রতিদ্বন্দ্বিতার অপ্রত্যাশিত মোড়গ বিশেষভাবে নজর কেড়েছে। একদিকে কমলা হ্যারিসের আচমকা প্রচারণায় অংশগ্রহণ, অন্যদিকে একটি ব্যর্থ হত্যাচেষ্টার পর আবার মাঠে নামার মতো ঘটনাগুলো এই প্রতিদ্বন্দ্বিতাকে আরও উত্তপ্ত করে তুলেছে। নির্বাচন ব্যবস্থাপনা এবং ভবিষ্যৎ দৃষ্টিভঙ্গির ক্ষেত্রে দুই প্রার্থী একে অপরের সম্পূর্ণ বিপরীত হলেও উভয়ের প্রচারাভিযানই এই শেষ সপ্তাহে নতুন মোড় নিচ্ছে।
রবিবার নিউইয়র্ক টাইমস ও সিয়েনার জরিপে সুইং স্টেটগুলোতে কিছু সামান্য পরিবর্তন লক্ষ্য করা গেলেও ফলাফলগুলো এখনও মুলত ‘মার্জিন অব এরর’-এর মধ্যে রয়েছে।
ডেমোক্র্যাটিক প্রার্থীর পক্ষে জরুরি হিসেবে বিবেচিত গ্রেট লেক অঞ্চলের রাজ্যগুলোতে সমর্থন নিশ্চিত করতে কমলা হ্যারিস রবিবার তার প্রচারণা শুরু করেছেন মিশিগানে। দিনটি শুরু হবে ডেট্রয়েটে, তারপর পন্টিয়াকে একাধিক সমাবেশ এবং মিশিগান স্টেট ইউনিভার্সিটিতে সন্ধ্যায় একটি সমাবেশ।
অন্যদিকে, ডোনাল্ড ট্রাম্পের রবিবারের কার্যসূচিতে রয়েছে পেনসিলভেনিয়া, নর্থ ক্যারোলাইনা এবং জর্জিয়া; তিনটি বড় রাজ্য যেখানে ইলেক্টোরাল কলেজে সর্বাধিক প্রভাব রয়েছে। তবে ট্রাম্পের প্রচারণা বিতর্কিত সমাবেশ এবং বিভেদমূলক বক্তব্যকে কেন্দ্র করে বিরোধিতার সম্মুখীন হয়েছে। নিউ ইয়র্কের ম্যাডিসন স্কয়ার গার্ডেনে অনুষ্ঠিত একটি সমাবেশের বক্তারা বর্বাদী ৌনতাবাদী মন্তব্যের ম্যমে নারী ও হিসপ্যানিক ভোটারদের ক্ষুব্ধ করেছেন। প্রচারণার কর্মকর্তারা এই অপ্রত্যাশিত ভুলকে ‘অত্যন্ত অপেশাদার’ হিসেবে অভিহিত করেছেন। যা কমলা হ্যারিসের উচ্ছ্বসিত ও সমর্থনপূর্ণ সমাবেশের বিপরীতে দুর্বল হিসেবে প্রতীয়মান হয়েছে।
চূড়ান্ত জরিপ ও ভোটের পূর্বাভাস
মিশিগান রাজ্য বর্তমানে সাতটি সুইং স্টেটের মধ্যে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ একটি। ২০১৬ সালে ডোনাল্ড ট্রাম্প এখানে ডেমোক্র্যাটিক ভোট কেড়ে জয়ী হলেও ২০২০ সালে জো বাইডেন তা ডেমোক্র্যাটদের ঘরে ফিরিয়ে আনেন। তবে এই বছর, বাইডেন প্রশাসনের গাজা সংঘাত ইস্যুতে আরব-আমেরিকানদের ২ লাখ সদস্যের সমর্থন হারানোর শঙ্কায় রয়েছেন হ্যারিস।
তবে হ্যারিসের প্রচারণা নারীদের অধিকার রক্ষার বিষয়কে একটি বড় ইস্যু হিসেবে সামনে নিয়ে আসছে। আগাম ভোটারদের মধ্যে নারীদের উচ্চ উপস্থিতি তার জন্য আশার সঞ্চার করছে। সম্প্রতি, হ্যারিস ‘স্যাটারডে নাইট লাইভ’-এ অংশগ্রহণ করে একটি তার প্রতিদ্বন্দ্বী ডোনাল্ড ট্রাম্পকে নিয়ে ব্যঙ্গ করেন। যা নির্বাচনি প্রচারণায় ব্যাপক আলোচনার জন্ম দেয়। এছাড়া রবিবারের এনএফএল ম্যাচের বিরতিতে তার নির্বাচনি বার্তা প্রচার করা হয়। সেখানে তিনি ‘সব মার্কিনির প্রেসিডেন্ট’ হওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন।
চূড়ান্ত ভোট গ্রহণের আগে সর্বশেষ ডেস মোইনস রেজিস্টার রিপেও হযারিসের পক্ ফলাফল এসেছে। ই রিপে সেপ্টেম্বরে ট্রাম্পের চেয়ে ৪ পয়েন্ট পিছিয়ে থাকা হ্যারিস এখন ৩ পয়েন্ট এগিয়ে রয়েছেন।