মো: মহিদ: মানিকগঞ্জ জেলা প্রতিনিধি:
মানিকগঞ্জের সাটুরিয়ায় প্রতারণার মাধ্যমে গ্রামাঞ্চলের সহজ সরল নারীদের ব্যবহার করে বিভিন্ন এনজিও প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে ৩০ লক্ষাধিক টাকা হাতিয়ে নেওয়া অভিযোগে বুলবুলি আক্তার ভুলিসহ তার সহযোগীদের গ্রেফতারের দাবিতে মানববন্ধন করেছে ভোক্তভোগীেরা।
আজ (১৫ নভেম্বর) শুক্রবার দুপুরে সাটুরিয়া উপজেলার দিঘুলিয়া ও বরাই ইউনিয়নের ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্যরা প্রতারক বুলবুলি আক্তার ভুলি ও তার সহযোগীদের গ্রেফতার করে আইনের মাধ্যমে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবী তুলে স্থানীয় দিঘুলিয়া বাজারের সামনে ঘন্টাব্যাপী এই মানববন্ধন পালন করেন ভুক্তভোগীরা। এর আগে প্রতারক চক্রের সদস্যদের আইনগত ব্যবস্থায় প্রশাসনের সার্বিক সহযোগিতা কামনা করে বিক্ষোভ মিছিল করেন তারা।
মানববন্ধনে দেলুয়া এলাকার ফাতেমা বেগম, নাসিমা আক্তার, আলো বেগম, ইতি আক্তার ও আশিকুর রহমানসহ ভুক্তভোগীরা বক্তব্য রাখেন।
দেলুয়া এলাকার ভুক্তভোগী ফাতেমা বেগম বলেন, সংসারে অভাব-অনটন ও ব্যবসার কথা বলে আমার কাছে টাকা ধার চায় প্রতিবেশী বুলবুলি আক্তার ভুলি। কিন্তু টাকা ধার দিতে না পারায়, সে আমাকে আমার নামে স্থানীয় এনজিওর মাধ্যমে টাকা তুলে দিতে বলে এবং প্রতিমাসে এনজিওর টাকা,সে শোধ করার কথাও বলে। পরে আমি স্থানীয় গ্রামীণ ব্যাংক, আশা ও স্বপ্নের আলো এনজিও থেকে ৮ লাখ টাকা উত্তোলন করে বুলবুলি আক্তার ভুলি। এর পর কয়েকমাস এনজিওর কিস্তির টাকা দেয়। তারপর থেকে সে আর কিস্তির টাকা দেয়না এবং আমাকে কিস্তির টাকা দিতে বলে।
দেলুয়া এলাকার আলো বেগম বলেন,এমনিতে বুলবুলি আক্তার ভুলি আমাদের এলাকার মেয়ে। তারমধ্যে সে আমার ভাইয়ের বাসায় ভাড়া থাকতো। বুলবুলি তার স্বামীর ব্যবসার ও ছেলের বিদেশ যাওয়ার কথা বলে প্রথমে ১০ লাখ টাকা ধার নেয়। এরপর গোপনে আমাকে দিয়ে বিভিন্ন ব্যাংক ও এনজিও থেকে ১২ লাখ টাকা ঋণ উত্তোলন করে। প্রথমে কয়েকমাস ঋণের কিস্তির টাকা পরিশোধ করেছে। তারপর সে গতমাসে এলাকা ছেড়ে পালিয়ে গেছে। আমাদের দেলুয়া ও বরাইদ সাভার এলাকার প্রায় ২৫জন নারী ও পুরুষকে দিয়ে বিভিন্ন এনজিও থেকে ৩০ লক্ষাধিক টাকা তুলে সে পালিয়ে গেছে।
আরেক ভুক্তভোগী নাসিমা আক্তার জানান, মাসিক সুদের কথায় আমি বুলবুলি আক্তার ভুলির কাছ থেকে আড়া্ই লাখ টাকা আনি। এরপর তার আড়া্ই লাখ টাকার পরিবর্তে আমার কাছ থেকে ৭ লাখ টাকা নিয়েছে। সে এখনও আমার কাছে টাকা দাবী করছে। এর আগ টাকার জন্য আমার বাড়ির গরু ও আমার গলার স্বর্ণের চেইন নিয়ে গেছে ভুলি। এছাড়া বিভিন্ন সময়ে পুলিশ নিয়ে বাড়িতে এসে হুমকি দিতো। আর আমার স্বামীকে হুমকি দিয়ে আসতো। আমরা বুলবুলিসহ তার সহযোগীদের গ্রেফতার ও শাস্তি চাই।
অভিযুক্ত বুলবুলি আক্তার ভুলি সাটুরিয়া উপজেলার দিঘুলিয়া ইউনিয়নের দেলুয়া এলাকার টেইলার্স গিয়াস উদ্দিনের স্ত্রী।
তবে এবিষয়ে বুলবুলি আক্তার ভুলি বলেন, আলো বেগম আমার বিরুদ্ধে টাকা আত্মসাতের অভিযোগ সত্য নয়। আমার ছেলেকে চাকুরি দেওয়ার কথা বলে দুই কিস্তিতে ১১ লাখা টাকা নিয়েছে। আমার স্বামী ঢাকার একটি জমি বিক্রি করে টাকাগুলো দেওয়া হয়েছে। কিন্তু চাকুরি দেওয়ার খবর নাই। আমার টাকাও ফেরত দেয়নি। তিনি উল্টো আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ করে যাচ্ছে।
সাটুরিয়া থানার ওসি মো.শাহিনুল ইসলাম জানান,বিষয়টি প্রতারণা হলে, ভুক্তভোগীদের আদালতের আশ্রয় নিতে হবে। বাকিটা আমরা দেখবো।