স্টাফ রিপোর্ট ার:
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল ও সাবেক সংসদ সদস্য অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেছেন, আওয়ামী লীগ সরকার শুধু ফ্যাসিস্টই নয়। ফ্যাসিস্টের পাশাপাশি তাদের আমি আরেকটা নতুন টাইটেল দিয়েছি স্যাডিস্ট। স্যাডিস্ট হচ্ছে মানুষের দুঃখ, কষ্ট, নির্যাতন, নিষ্ঠরতা ও বর্বরতা দেখে যারা আনন্দ পায়, এদেরকে বলে স্যাডিস্ট। খুন করা, হত্যা করা, মানুষ পুড়িয়ে ছাই করা, হত্যার পরে লাশের ওপর দাঁড়িয়ে আনন্দ করা, এরাই তো স্যাডিস্ট। আওয়ামী লীগকে শুধু ফ্যাসিস্ট বললে হবে না। ফ্যাসিস্ট তো শুধুমাত্র স্বৈরশাসককে বোঝায়। এর সাথে আরেকটি এডজেক্টিভ যোগ হয়েছে স্যাডিস্ট।
২৩ নভেম্বর শনিবার সকালে মানিকগঞ্জের বিজয় মেলার মাঠে জেলা জামায়াতে ইসলামীর আয়োজনে ঐতিসি র্মী সভায় ্রধান অতিথি হিসেবে তিনি এসব কথা বলেন।
মানিকগঞ্জ জেলা জামায়াতে ইসলামীর আমীর হাফেজ কামরুল ইসলামের সভাপতিত্বে তিনি আরও বলেন, গত ৫ আগস্টের চার দিন আগে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীকে সন্ত্রাসী দল হিসেবে চিহ্নিত করে নিষিদ্ধ ঘোষণা করেন শেখ হাসিনা। শেখ হাসিনা চেয়েছিলেন জামায়াতকে এদেশ থেকে নিশ্চিহ্ন করতে। কিন্তু না শেখ হাসিনার সে স্বপ্ন পূরণ হয়নি। আল্লাহুপাক রব্বুল আলামীন তার ইচ্ছাকে পূরণ করেনি। জামায়াতকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করার ৪ দিন পরেই শেখ হাসিনাকে দেশ ছেড়ে পালাতে হয়েছে। বিদেশে পালিয়ে গিয়েও গণতন্ত্রের দুশমন, মাস্টার মাইন্ড শেখ হাসিনা বিদেশে বসেও ষড়যন্ত্রের জাল বুনে চলছে। ওখানে বসেই নানা ধরনের ষড়যন্ত্র করছে। ছাত্র জনতার বিপ্লবের পরপর তিনি পাল্টা বিপ্লবের জন্য চক্রান্ত করলেন। পালিয়ে যাওয়ার কিছুদিনপরেই জুডিশিয়াল ক্র্যু করার চেষ্টা করল। সুপ্রীম কোর্টের প্রধান বিচারপতিসহ হাইকোর্টের কয়েকজন বিচারপতি নিজেরা শপথ বাক্য পাঠ করে রাজনীতির পরিচয় দিল। এই দলবাজ বিচারকরা গোপনে মিটিং করে তারা আজকের এই অর্নৃতবর্তীকালীন সরকারকে আইনের দৃষ্টিতে তার অবৈধ সরকার ঘোষনা করার পায়তারা করেছিল। কিন্তু এই খবর প্রকাশ হওয়ার পরে ছাত্র জনতা হাইকোর্ট ঘেরাও করে এবং দেশ প্রেমিক সেনাবাহিনী ও যুগপৎকারী ছাত্রদের আন্দোলনের মুখে প্রধান বিচারপতি সহ দলবাজ বিচারপতিরা পদত্যাগ করতে বাধ্য হয়।
ছাত্র জনতার আন্দোলনে নতুন ে স্বাধীন হয়। তারপরেই জুাই আগস্টে আমাদের যাদেরকে মিথ্যা মামলা দিয়ে আটক করা হয়েছিল তারপর দিন আমাদের জামিন দিয়ে মুক্তি দেয়া হলো। গুম হওয়া আমাদের ভাইদের একে একে ফেরত পেলাম। বাঁধাহীনভাবে দেশে মানুষের কাছে ইসলামের আদর্শের সুমহান দাওয়াত পৌঁছে দেয়ার জন্য একটি চমৎকার পরিবেশ সৃষ্টি হলো।
তিনি আরও বলেন, বৈষম্য বিরোধী ছাত্র- জনতার আন্দোলনে মানিকগঞ্জের রফিক- সাদসহ হাজারো ছাত্র জনতার রক্তের ওপর দাঁড়িয়ে আমরা আজকে মুক্তির সেই উচ্ছ্বাস এবং আনন্দের স্বাদ গ্রহণ করছি। এই স্বাধীনতা, এই রক্তদান নতুন বাংলাদেশের বিজয় অংশীদার হলেন আপনারা। তাদের সেই রক্তদানের ঋণ শোধ করতে একটি সুখি, সমৃদ্ধশালী নিরাপদ শান্তিপূর্ণ চমৎকার একটি বাংলাদেশ গড়তে হবে। এটাই হলো শহীদের রক্তের ঋণ। এই রক্তের ঋণ শোধ করার জন্য আপনারা প্রস্তুত থাকতে হবে।
এ সময় তিনি মানিকগঞ্জবাসীর পক্ষ থেকে সমাবেশে পাঁচ দফা দাবি তুলে ধরেন। ১. মানিকগঞ্জে উচ্চ শিক্ষা বিস্তারের জন্য একটি পূর্ণাঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন, ২. পাটুরিয়া ও দৌলতদিয়া দ্বিতীয় পদ্মা সেতু, ৩. রাজধানী ঢাকার সাথে যোগাযোগ ব্যবস্থা সহজ করার জন্য ঢাকা হতে পাটুরিয়া- দৌলতদিয়া রেলপথ নির্মাণ, ৪. ঢাকা আরিচা মহসসড়কের মানিকগঞ্জ পুলিশ লাইনস হতে মানরা কাঁচাবাজার আড়ৎ পর্যন্ত একটি ফ্লাইওভার নির্মাণসহ জেলার প্রতিটি ঘরে ঘরে গ্যা সরাহর জ দাবি জানান।
সায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, জামায়াতের কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য অধ্যক্ষ ইজ্জত উল্লাহ, ঢাকা উত্তর অঞ্চলের টিম সদস্য অধ্যক্ষ দেলোয়ার হোসেন।
জেলা জামায়াতের সেক্রেটারী মাওলানা নূরুল ইসলামের সঞ্চালনায় এ সময় আরো বক্তব্য রাখেন, জেলা জামায়াতের আইন বিষয়ক সম্পাদক এডভোকেট আনোয়ার হোসেন, জেলা সূরা ও কর্ম পরিষদ সদস্য ইঞ্জিনিয়ার মুসলিম উদ্দিন, তরবিয়ত সেক্রেটারি মাওলানা ওমর ফারুক, ন্যাশনাল ডক্টরস ফোরামের সভাপতি ডাঃ মোসলেম উদ্দিন, ছাত্রশিবিরের জেলা সভাপতি মোঃ বাবুল হোসেন , ওলামা বিভাগের সভাপতি মাওলানা জাকিরুল ইসলাম খান, শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের সভাপতি আবু তাহের, সদর জামায়াতের আমীর ফজলুল হক, সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট সালাহ উদ্দিন, শিবিরের সাবেক জেলা সভাপতি আবুল কালাম আজাদ, মোঃ আব্দুল মজিদ, শিবালয় উপজেলা জামায়াতের আমির হাফেজ হাতেম আলী, সিংগাইর উপজেলা জামায়াতের আমির মাওলানা আব্দুল মান্নান, সাটুরিয়া উপজেলা জামায়াতের আমির আবু সাইদ বিএসসি ও কাজী নূর মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর প্রমুখ।