স্টাফ রিপোর্টার:
মানিকগঞ্জে সেনা সদস্য বুদ্দু (৪০) ও তার পরিবারের বিরুদ্ধে গৃহবধূ নাছরিন আক্তারকে (৩০) নির্যাতনের অভিযোগ ওঠেছে। নাছরিন ঘিওর উপজেলার শোলধারা গ্রামের আইয়ুব আলীর মেয়ে।
গত মঙ্গলবার (৩১ ডিসেম্বর) ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেলা হাসপাতালে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায় ছেলে আসাদুল্লাহ (৮) ও মেয়ে ফাতেমাকে (৬)নিয়ে স্বামী বুদ্দুর উস্কানিতে শশুর শাশুরি ও ননাসের নির্যাতনের শিকার হয়ে হাসপাতালের বিছানায় কাতরাচ্ছেন নাছরিন।
এবিষয়ে দৌলতপুর উপজেলার ইসলামপুর গ্রামের মো. নওশাদের ছেলে অভিযুক্ত বুদ্দু ও তার বাবাকে আসামী করে ঘিওর জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে গত ৫ই জানুয়ারি মামলা দায়ের করেন ভূক্তভোগী নাছরিন আক্তার।
ভূক্তভোগী নাছরিন ও মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, ২০১২ সালে দুইপরিবারের সম্মতিতেই বিয়ে হয় নাছরিন বুদ্দু দম্পতির। বিয়ের দুই বছরের মাথায় পরকিয়ায় জড়িয়ে পড়ে সেনা সদস্য বুদ্দু। এরপর থেকেই অন্ধকার নেমে আসে নাছরিনের জীবনে। সন্তান হলে সব ঠিক হয়ে যাবে এমন আশা করলেও ঘটে তার বিপরীত। বুদ্দু বউ বাচ্চার ভরণপোষণ বন্ধ করে দিলে বাবা আইয়ুব আলীর তিন মেয়ে এক ছেলের সংসারে একমাত্র উপার্জনে সক্ষম অল্প বেতনে বেসরকারি চাকরি করা সবার ছোট ভাই আপেলের দেয়া কিছু টাকায় কোনমতে দিন পার করছিলেন বোনদের মধ্যে ছোট নাছরিন।
সবার অনুরোধে চাকরির পোস্টিংয়ের সুবাধে ময়মনসিংহ নিয়ে রাখলেও থেমে ছিল না শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের মাত্রা। সেখানেও মারধরের শিকার হলে পাশের রুমের অন্য সেনা পরিবারের লোকজনের সহায়তায় সিএমএইচের ভর্তি করলে কোনমতে বেচে যায় সেযাত্রায়। এক পর্যায়ে বাধ্য হয়ে সেনা ক্যাম্পে অভিযোগ করলে ২৮ দিনের কারা ভোগ করতে হয় অভিযুক্ত বুদ্দুকে।
পরকিয়ায় এতোটাই আসক্ত ছিল বুদ্দু যে তার সন্তারদের ভরণপোষণ তো দুরের কথা স্কুলেও ভর্তি করেনি আসাদুল্লাহ ও ফাতেমাকে।
পরবর্তীতে দুই সন্তানের মুখের দিকে তাকিয়ে অসহায় নাছরিন সবকিছু মেনে নিলেও সব কিছু স্বাভাবিক ভাবে নেয়নি বুদ্দু। এরই মধ্যে কালামপুরের কেনা জমিতে বাড়ি বানানোর জন্য ৫ লক্ষ টাকা এনে দিতে বলে বাবার বাড়ি থেকে। কর্মঅক্ষম বৃদ্ধ আইয়ুব আলী টাকা দিতে অপারগতা প্রকাশ করলে অসহায় নাছরিন আবারো রোষানলে পড়ে স্বামী শশুর শাশুরির।
ফলে বাধ্য হয়েই বাবার সংসারেই পড়ে আছেন দুই সন্তানের জননী নির্যাতিত নাছরিন।