স্টাফ রিপোর্টার: ঈদকে সামনে রেখে পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া ও আরিচা-কাজিরহাট নৌরুটে যাত্রী ও কোরবানির পশুবাহী যানবাহন নির্বিঘ্ন পারাপার নিশ্চিত করতে প্রস্তুতি নিয়েছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। তাদের দাবি, বাড়তি চাপ সামাল দিতে সব প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। পশুবাহী ট্রাকগুলো যাতে ঘাটে এসে কোনো দুর্ভোগের শিকার না হয়ে সরাসরি ফেরিতে উঠতে পারে সে বিষয়ে বিশেষ নজর রাখা হবে। গত কয়েকদিনের বৃষ্টিতে ঘাটের পন্টুনে পানি উঠায় যাত্রী ও যানবাহনের কিছুটা সমস্যা হচ্ছে।
ঈদকে সামনে রেখে পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া নৌরুটে ১৭টি ফেরি ও ২০টি লঞ্চ চলাচলের সিদ্ধান্ত নিয়েছে কর্তৃপক্ষ। আরিচা-কাজিরহাট নৌরুটে পাঁচটি ফেরি ও ১৩টি লঞ্চ চলাচল করবে। মহাসড়ক ও নৌরুটে নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে স্থানীয় প্রশাসনের পাশাপাশি মাঠে থাকবে সেনবাহিনী।
পাটুরিয়া লঞ্চ ঘাটের ব্যবস্থাপক পান্না লাল নন্দী বলেন, “ঈদুল আজহা উপলক্ষে পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া নৌপথে ২০টি এবং আরিচা-কাজিরহাট রুটে ১৩টি লঞ্চ চলাচল করবে। লঞ্চ ঘাটগুলোতে সব ধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে।”
বিআইডব্লিউটিসি আরিচা ফেরি ঘাটের ব্যবস্থাপক আবু আবদুল্লাহ বলেন, “আরিচা-কাজিরহাট নৌরুটে পাঁচটি ফেরি দিয়ে যানবাহন ও যাত্রী পারাপার করা হচ্ছে। বাড়তি চাপ বাড়লে আরো একটি ফেরি সংযোজন করা হবে।”
এছাড়া পল্টনে পানি উঠায় কিছুটা যাত্রী ও যানবাহন উঠা নামায় কিছুটা সমস্যা হচ্ছে। তবে খুব শীঘ্রই পন্টুন উচু করে সমস্যা সমাধান করা হবে।
বাংলাদেশ নৌপরিবহন করপোরেশন (বিআইডব্লিউটিসি) আরিচা কার্যালয়ের সহকারী মহাব্যবস্থাপক (বাণিজ্য) মো. সালাম হোসেন বলেন, “ঈদুল আজহার বাড়তি চাপ সামাল দিতে সব প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া নৌরুটে ৯টি রো রো (বড়), তিনটি মাঝারি ও পাঁচটি ইউটিলিটি (ছোট) ফেরি প্রস্তুত রাখা হয়েছে। পশুবাহী ট্রাকগুলো যাতে ঘাটে এসে কোনো দুর্ভোগের শিকার না হয়ে সরাসরি ফেরিতে উঠতে পারে সে বিষয়ে বিশেষ নজর রাখা হবে।”
মানিকগঞ্জ সেনা ক্যাম্পের মেজর রাফিউল চৌধুরী বলেন, “ঈদের আগে চারদিন ও ঈদের পরের তিনদিন সেনাবাহিনী সড়ক ও নৌপথে দায়িত্ব পালন করবে। ঈদযাত্রা নির্বিঘ্ন রাখা এবং অতিরিক্ত ভাড়া আদায় বন্ধে কঠোর নজরদারি চলবে। যাত্রাপথে যাত্রীদের নিরাপত্তা, যান চলাচলের শৃঙ্খলা রক্ষা এবং দালালচক্র বা অসাধু পরিবহন মালিকদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
মানিকগঞ্জের পুলিশ সুপার মোছা. ইয়াছমিন খাতুন বলেন, “ঈদুল আজহা উপলক্ষে পাটুরিয়া ও আরিচা ঘাট এলাকায় নিরাপত্তা ব্যবস্থা থাকবে। থানা পুলিশ, সাদা পোশাকে পুলিশ, ডিবি পুলিশসহ একাধিক টিম থাকবে। নৌ পুলিশ, হাইওয়ে পুলিশ আমাদের সঙ্গে সমন্বয় করে কাজ করবে। যাত্রীদের নিরাপত্তার স্বার্থে জেলা পুলিশ সর্বদা মাঠে থাকবে।”
মানিকগঞ্জের জেলা প্রশাসক ড.মানোয়ার হোসেন মোল্লা বলেন, “ঘরমুখো মানুষের স্বস্তিতে বাড়ি ফেরা নিশ্চিত করতে প্রশাসন সর্বাত্মক প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে। পাটুরিয়া ও আরিচা ঘাট এলাকায় ঈদের আগে ও পরে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট থাকবেন। যাত্রীদের থেকে যেন অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করা না হয় সেজন্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পাশাপাশি জেলা প্রশাসনের মোবাইল কোর্ট থাকবে।”