বোর্ডার-গাভাস্কার ট্রফিতে ভারতের বিপক্ষে অস্ট্রেলিয়ার বড় মাথাব্যথা ছিল স্টিভেন স্মিথের রানখরা। যদিও তাকে নিয়ে আশা হারাননি অনেকে। অস্ট্রেলিয়ার সাবেক অলরাউন্ডার টম মুডি বলছিলেন, ‘স্মিথ হলো খাঁচায় বন্দি সিংহ, যে ভারতীয় বোলারদের ছিুঁড়েখুঁড়ে দিতে প্রস্তুত।’ বিশ্বজয়ী অধিনায়ক রিকি পন্টিং তো এক মুহূর্তের জন্যও হতাশ হননি। দুই টেস্টের একটিতেও রান এক অঙ্ক ছাড়াতে ব্যর্থ হওয়া স্মিথ শিগগিরই বড় রান করে ফেলবেন, এমন বিশ্বাস ছিল তার।
শেষ পর্যন্ত এলো সেই মাহেন্দ্রক্ষণ। নভদ্বীপ সাইনির বলে ব্যাকওয়ার্ড পয়েন্ট দিয়ে দৌড়ে নিলেন তিনটি রান। তারপর ড্রেসিংরুমের দিকে তাকিয়ে করলেন উদযাপন, হেলমেট খুলে, ব্যাট ঘুরিয়ে, বুক চাপড়ে জানান দিলেন ফিরেছেন তিনি। ২০১ বলে ১৩ চারে করলেন অনেক প্রশ্নের সমাধান দেওয়া এক শতক। ৪৯০ দিনের খরা কাটিয়ে দেখা পেলেন প্রথম টেস্ট সেঞ্চুরির।
প্রথম দুই টেস্টে ১, ১*, ৮ ও ০ রান, অস্ট্রেলিয়াও পারেনি কোনও ইনিংসে দুইশ পার করতে। স্মিথের রানখরা যেন স্বাগতিকদের ব্যাটিংয়ের প্রতিচ্ছবি। তা উপলব্ধি করতে পেরেছিলেন সাবেক অধিনায়ক। মেলবোর্ন ক্রিকেট গ্রাউন্ডে হার আর সিডনি ক্রিকেট গ্রাউন্ডে নামার মাঝে যে ৮ দিন সময় পেয়েছেন, দিনরাত বের করার চেষ্টা করেছেন ভারতীয় বোলারদের ওপর ছড়ি ঘুরানোর উপায়। হোটেল রুমেও করেছেন শ্যাডো ব্যাটিং। কতটা দৃঢ়চেতার পরিচয়!
এবার মাঠেও তার ফল মিললো। বৃষ্টিবিঘ্নিত প্রথম দিনের খেলা স্মিথ শেষ করেন ৩১ রানে অপরাজিত থেকে। শুক্রবার মাঠে নেমে মার্নাস লাবুশানের সঙ্গে ১০০ রানের জুটি গড়লেন। এরপর মিচেল স্টার্ককে সঙ্গে নিয়ে দলীয় স্কোর তিনশ পার করানোর পথে করলেন অনেক স্বস্তির সেঞ্চুরি। ৯৯ রান করার পর তিন অঙ্কের ঘরে যেতে লেগেছে ২০ মিনিট। এটি ছিল তার ক্যারিয়ারের ২৭তম শতক এবং ভারতের বিপক্ষে সাত টেস্টে অস্ট্রেলিয়ার প্রথম। সেঞ্চুরির হিসাবে দেশের সর্বকালের সেরার তালিকায় ষষ্ঠ স্থানে থাকা অ্যালান বোর্ডারকে ছুঁলেন স্মিথ।
এই ডানহাতি ব্যাটসম্যানকে ফিরিয়ে অস্ট্রেলিয়ার ইনিংসের সমাপ্তি ঘটায় ভারত। রবিন্দ্র জাদেজার দুর্দান্ত সরাসরি থ্রোতে স্মিথ রান আউট হন দ্বিতীয় রানটি নেওয়ার সময়। ২২৬ বলে ১৩১ রানে থামেন সাবেক অজি অধিনায়ক। ভারত গুটিয়ে যায় ৩৩৮ রানে।
/মহিদ