স্টাফ রিপোর্টার:
বাংলাদেশে-ভারত সীমান্তে ফেনী নদীর ওপর নির্মিত মৈত্রী সেতু দুই দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে বলে প্রত্যাশা ব্যক্ত করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
মঙ্গলবার (৯ মার্চ) দুপুরে অনলাইনে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে যৌথভাবে সেতু উদ্বোধন অনুষ্ঠানে এ কথা বলের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
এ সময় ত্রিপুরাবাসীর প্রতি শুভেচ্ছা জানিয়ে তিনি বলেন, এই সেতু আমাদের দুই দেশের মধ্যে শুধু সেতুবন্ধন রচনা করবে না, বরং ব্যবসা-বাণিজ্য এবং অর্থনৈতিক উন্নয়নের ক্ষেত্রে বিরাট অবদান রাখবে।
শুধু চট্টগ্রাম পোর্ট নয়, চট্টগ্রাম আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরও ত্রিপুরাবাসী ব্যবহার করতে পারবে বলেও জানান তিনি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা ভুলি নাই একাত্তরে কিবাবে আমাদের জনগণকে আপনারা আশ্রয়, সমর্থন ও সহযোগিতা করেছিলেন এবং আমরা মুক্তিযুদ্ধে বিজয় অর্জন করেছিলাম। কাজেই আজকে সবাই আজকে আন্তরিক শুভেচ্ছা জানাচ্ছি।’ এ সময় ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রীকে আন্তরিক শুভেচ্চা ও অভিনন্দন জানান শেখ হাসিনা।
২০১০ সালে ত্রিপুরার তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী আমাকে ফেনী নদীর ওপর একটি সেতু নির্মাণ করার প্রস্তাব রেখেছিলেন উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, তিনি বলেছিলেন চট্টগ্রাম বন্দর ব্যবহার করতে ভারতের উত্তর-পূর্ব অঞ্চলের ব্যবসায়ীদের জন্য এই ব্রিজটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আমরা অনুরোধটি ইতিবাচকভাবে বিবেচনা করি। তারপর থেকে বাংলাদেশ সরকার ভারতীয় পক্ষকে সেতু নির্মাণে প্রয়োজনীয় সব সহযোগিতা করে আসছে।
তিনি বলেন, এই সেতুটি উত্তর-পূর্ব ভারতের জন্য একটি বাণিজ্য লাইফলাইন হবে। আপনারা সবাই জানেন পণ্য পরিবহনের জন্য ইতোমধ্যে বাংলাদেশ ভারতকে চট্টগ্রাম ও মোংলা বন্দর ব্যবহারের অনুমতি দিয়েছে। ফেনী সেতু চালুর মধ্য দিয়ে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ এবং উত্তর-পূর্বের ল্যান্ডলকড রাজ্যগুলো বাংলাদেশের মধ্য দিয়ে পণ্য পরিবহন করতে পারে।
ভারতকে কানেকটিভিটি দেওয়ার মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ দক্ষিণ এশিয়ায় একটি নতুন যুগের সৃষ্টি করেছে উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, আমরা বিশ্বাস করি ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের আন্তঃসীমান্ত পরিবহন ব্যবস্থার উন্নয়ন একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ এবং এটি আঞ্চলিক ব্যবসা-বাণিজ্য বাড়াতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
ফেনী মৈত্রী সেতু ত্রিপুরা এবং আশপাশের ভারতের উত্তর-পূর্বের রাজ্যগুলোর জনগণের আর্থ-সামাজিক অবস্থার উল্লেখযোগ্য উন্নতি করবে বলে আশা প্রকাশ করে শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, আমরা মৈত্রী সেতু এমন এক সময় উদ্বোধন করছি যখন আমরা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী, বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী এবং বাংলাদেশ-ভারত কূটনৈতিক সম্পর্কের ৫০তম বর্ষ উদযাপন করছি।
অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব।