স্টাফ রিপোর্টার:
প্রতারণার স্বীকার হয়েছে মানিকগঞ্জের একটি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৪ ছাত্রী। রবিবার বিকেলে মানিকগঞ্জ সদর উপজেলার গড়পাড়া ইউনিয়নের শাকরাইল সরকারী বিদ্যালয়ে এই ঘটনা ঘটে। প্রতারণার স্বীকার ছাত্রীরা হলেন আলীনগর গ্রামের আনোয়ার হোসেনের মেয়ে ফিরোজা আক্তার, মেহের আলীর মেয়ে মলি আক্তার, বিপ্লব হোসেনের মেয়ে ছাহেরা আক্তার ও পাঞ্জনখাড়া গ্রামের আব্দুস ছালামের মেয়ে সারিকা আফরিন। ফিরোজা আক্তার, সারিকা আফরিন ও মলি আক্তার ওই বিদ্যালয়রে ৩য় শ্রেণীর ছাত্রী এবং ছাহেরা আক্তার চতুর্থ শ্রেণীর ছাত্রী। প্রতারণার স্বীকার ওই ছাত্রীরা বলে, বেলা দুইটার দিকে টিফিনের ছুটিতে তারা বিদ্যালয়ের মাঠে গল্প করছিল। বোরকা পড়া এক মহিলা বিদ্যালয়ে প্রবেশ করে তাদের বলে তাদের পিতা-মাতা বিদ্যালয়ের বাইরে তাদের জন্য অপেক্ষা করছে। তার এই কথা শুনে ছাত্রীরা তাদের পিতা-মাতার সাথে দেখা করতে ওই মহিলার সাথে বিদ্যালয় থেকে বাইরে যায়। ওই মহিলা তাদেরকে বাইরে নিয়ে ঝালমুড়ি খাওয়ায়। এরপর সেখান থেকে হ্যালোবাইকে চড়িয়ে তাদের নিয়ে যায় ৪ কিলোমিটার দুরে মানিকগঞ্জ বাসস্ট্যান্ড সংলগ্ন জয়রা রোডের নুরজাহান ক্লিনিক এলাকায়। রাস্তায় চলাচলের সময় চুরি হতে পারে এমন কথা বলে ওই মহিলা হ্যালো বাইকে যাওয়ার সময় ছাত্রীদের কাছ থেকে সোনার তৈরী কানের দুল গলার চেইন এবং রুপার নুপুর নিয়ে নেয়। ব্যাংক থেকে টাকা তোলার কথা বলে হ্যালোবাইক থেকে নেমে ওই মহিলা ছাত্রীদের ওই ক্লিনিক এলাকায় রেখে চলে যায়। অনেক সময় অতিবিাহিত হওয়ার পর ওই মহিলা সেখানে না আসায় ছাত্রীরা কান্নাকাটি শুরু করে। শিশুদের কান্নাকাটি দেখে ওই ক্লিনিকের এক নারী কর্মচারী এগিয়ে এসে তাদের জিজ্ঞাসা করে এসব জানতে পারে। পরে তাদের পরিবারকে জানানোর পর সেখান থেকে তাদের অভিভাবকরা তাদের উদ্ধার করে নিয়ে বিদ্যালয়ে নিয়ে যায়। অভিভাবকরা এই ঘটনার জন্য বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের অবহেলাকে দায়ী করেন। তারা অবিলম্বে ছাত্রীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের দাবী জানান। এ ব্যাপারে ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ইফফাত জাহান বলেন, বিদ্যালয়ের সকল শিক্ষার্থীর অভিভাবককে তারা চিনেন না। এই কারণে বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীরা প্রবেশের পর কোন অভিভাবককে বিদ্যালয়ের ভিতরে যেতে নিষেধ করা হয়েছিল। কিন্তু তারা বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের এই নিষেধাজ্ঞা মানেননি। যদি তাদের নিষেধাজ্ঞা অভিভাবকরা মানতো তাহলে এই ঘটনা ঘটতো না বলে জানান প্রধান শিক্ষক। মানিকগঞ্জ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. রকিবুজ্জামান বলেন, এই ঘটনার পর বিদ্যালয়ে পুলিশ পাঠানো হয়েছে এবং ওই বিদ্যালয়ের পাশ্ববর্তী গড়পাড়া বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের সিসি ক্যামেরায় সার্স করে ওই দৃশ্য দেখে। ক্যামেরার মান ভাল না হওয়ায় ওই মহিলার মুখচ্ছবি পরিষ্কারভাবে বোঝা যায়নি বলে জানান তিনি।