জুনায়েদ বাবুনগরী ও মামুনুল হক (ফাইল ফটো)
স্টাফ রিপোর্টার:
বাংলাদেশ হেফাজতে ইসলামের মূল নেতৃত্বে থাকছেন আল্লামা হাফেজ মোহাম্মদ জুনায়েদ বাবুনগরী। সংগঠনটির আমির আর মহাসচিব হিসেবে থাকছেন নুরুল ইসলাম জিহাদী। পুর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করা হচ্ছে ৩৮ সদস্যের। কমিটিতে হেফাজতের প্রতিষ্ঠাতা আমির আল্লামা আহমদ শফীর ছেলে আনাস মাদানিকে বাদ দেওয়া হলেও তার বড় ছেলে ইউসুফ মাদানিকে রাখা হচ্ছে। ইতিমধ্যে কমিটির সবকিছুই চূড়ান্ত করা হয়েছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, সোমবার (৭ জুন) বেলা ১১টায় রাজধানীর খিলাগাঁওয়ে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে বাবুনগরীর নেতেৃত্বে হেফাজতের ৩৮ সদস্যের কমিটি ঘোষণা করা হবে। কমিটি ঘোষণা করবেন মহাসচিব নুরুল ইসলাম জিহাদী।
হেফাজতে ইসলামের নেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, নতুন কমিটিতে বাদ পড়েছেন বিএনপি নেতৃত্বাধীন জোটের শরীক হেফাজত সমর্থিত রাজনৈতিক নেতারা। আগের কমিটির যুগ্ম মহাসিচিব কারাগারে আটক মাওলানা মামুনুল হক, তার বড়ভাই মাওলানা মাহফুজুল হক, নায়েবে আমির মাওলানা নূর হোসাইন কাসেমি, ঢাকা মহানগর সভাপতি মাওলানা জুনাইদ আল হাবিব, মাওলানা আব্দুর রব ইউসুফী, আহমদ আব্দুল কাদের, নাছির উদ্দিন মুনির, সাংগঠনিক সম্পাদক আজিজুল হক ইসলামাবাদী, কেন্দ্রীয় নেতা জাকারিয়া নোমান ফয়জী, খালিদ সাইফুল্লাহ আইয়ুবী, হাসান জামিল, মুফতি হারুন ইজহারসহ বিতর্কিত নেতাদেরও বাদ দেওয়া হয়েছে।
নতুন কমিটিতে ঠাঁই পাননি আল্লামা আহমদ শফীপন্থী হিসেবে পরিচিত হেফাজতের সাবেক যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা মুফতি ফয়জুল্লাহ, মাওলানা মঈনুদ্দির রুহি, মাওলানা আবুল হাসানাত আমিনীরাও।
নতুন কমিটিতে ১১ জনকে নায়েবে আমির হিসেবে রাখা হয়েছে। তারা হলেন, মাওলানা আতাউল্লাহ হাফেজ্জী, মাওলানা সালাউদ্দিন নানুপুরী, অধ্যক্ষ মিজানুর রহমান চৌধুরী, মাওলানা মুহিব্বুল হক (সিলেট), মাওলানা উবায়দুর রহমান মাহবুব (বরিশাল), মাওলানা ইয়াহয়া, মুফতি জসিম উদ্দিন, মাওলানা আব্দুল কুদ্দুস, মাওলানা তাজুল ইসলাম, মাওলানা আইয়ুব বাবুনগরী।
নতুন কমিটিতে ৫ জন যুগ্ম মহাসচিব রাখা হয়েছে। তারা হলেন, মাওলানা সাজিদুর রহমান (বি-বাড়িয়া), মাওলানা আবদুল আউয়াল (নারায়ণগঞ্জ) ও মাওলানা আরশাদ রহমানী (বসুন্ধরা), মাওলানা লোকমান হাকিম ও মাওলানা আনোয়ারুল করিম।
নতুন কমিটিতে দুজন সহকারী মহাসচিব ও একজন সাংগঠনিক সম্পাদক রাখা হয়েছে। তারা হলেন, সহকারী মহাসচিব মাওলানা আবু তাহের নদভী ও মাওলানা ইউসুফ মাদানি (আহমদ শফীর বড় ছেলে)।
গত বছরের ১৫ নভেম্বর জুনায়েদ বাবুনগরীকে আমির করে ১৫১ সদস্য বিশিষ্ট হেফাজতের কমিটি ঘোষণা করা হয়। সেখানে হেফাজতের প্রতিষ্ঠাতা আমির আহমদ শফীর ছেলে আনাস মাদানীসহ শফী অনুসারী কাউকে রাখা হয়নি।
চলতি বছর স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী ও মুজিব শতবর্ষের অনুষ্ঠান উপলক্ষে বাংলাদেশে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির আগমনের প্রতিবাদে মামুনুল হকসহ শীর্ষনেতাদের নেতৃত্বে হেফাজত নেতাকর্মীরা সহিংসতা ও তাণ্ডব চালান। এরমধ্যে সোনারগাঁও এ রিসোর্টকাণ্ডে বির্তকে জড়িয়ে পড়েন মামুনুলহসহ হেফাজত নেতৃত্ব। মামুনুল হকসহ তাদের অধিকাংশ শীর্ষনেতা কারাগারে আছেন। ধরপাকড় থেকে বাঁচতে একপর্যায়ে গত ২৬ এপ্রিল হঠাৎ করে কেন্দ্রীয় কমিটি বিলুপ্ত করে নতুন করে বাবুনগরীকে আহ্বায়ক করে পাঁচ সদস্যের আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করে হেফাজতে ইসলাম।