এস এম আকরাম হোসেনঃ
মানিকগঞ্জের দৌলতপুরের পংতিরছা গ্রামে স্ত্রী ও আড়াই বছরের কন্যা সন্তানকে হত্যার দায়ে স্বামী জাকির হোসেনকে ফাঁসি ও তার ছয় স্বজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত।
রবিবার (১২ সেপ্টেম্বর) বিকালে মানিকগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক উৎপল ভট্টাচার্য্য এই রায় দেন।
মামলার বিবরণে জানা যায়, ২০০০ সালে পংতিরছা গ্রামের মেয়ে লিপা আক্তারের সংগে একই গ্রামের জাকির হোসেনের পারিবারিকভাবে বিয়ে হয়।
বিয়ের আড়াই বছরের মধ্যেই লিপার ঘরে জন্ম নেয় জ্যোতি আক্তার নামের এক কন্যা সন্তান। এই সময় জাকির পাশের বাড়ির চাচাত ভাইয়ের বউ তাহমিনার সংগে পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়েন।
এরপর প্রায়ই স্বামী জাকির হোসেন স্ত্রীকে নির্যাতন করতেন। ২০০৫ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি রাতে লিপা তার স্বামীর ও তাহমিনার অনৈতিক কাজ ধরে ফেলে।
এতে জাকির লিপাকে গলা টিপে হত্যা করে। পরে তার আড়াই বছরের শিশু কন্যা ঘটনাটি দেখে ফেললে আসামি তাহমিনা, স্বপন, জাহাঙ্গীর, হাসান, আমীনূর ইসলাম, পারভেজ রানা মিলে শিশু জ্যোতিকেও গলা টিপে হত্যা করে।
এরপর মৃতদেহ পাশের বাড়ি থেকে এনে জাকিরের বাড়িতে রাখে ও ডাকাতির নাটক করতে থাকে। পুলিশ খবর পেয়ে ঘটনাস্থল থেকে মৃতদেহ উদ্ধার করে মানিকগঞ্জ সদর হাসপাতালে পাঠায়। এই সময় জাকির গা-ঢাকা দেয়। লিপার স্বজনদের বিষয়টি নিয়ে সন্দেহ হলে ২০০৫ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি নিহত লিপার পিতা আবু হানিফ বাদী হয়ে দৌলতপুর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
ওইদিনই তাহমিনাসহ অন্য আসামিদের পুলিশ গ্রেফতার করে। এতে ২৭ জন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণের পর যাবজ্জীবন হওয়া আসামিদের উপস্থিতি ও জাকির হোসেনের অনুস্থিতিতে দীর্ঘদিন পর স্বামী জাকির হোসেনকে ফাঁসি ও অন্য ৬ জন আসামির যাবজ্জীবন কারাদণ্ডাদেশ দেন বিচারক। রায়ের পর আসামি পক্ষের লোকজন কান্নায় ভেঙে পড়েন।