আমার নিউজ ডেক্স,
বাংলাদেশ-ভারতের মধ্যকার বিদ্যমান সঞ্চালন লাইন ব্যবহার করে নেপাল বাংলাদেশে দুইশ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ রপ্তানির প্রস্তাব দিয়েছে বলে বিদ্যুৎ বিভাগ সূত্রে জানা গেছে।
মঙ্গলবার (১৫ সেপ্টেম্বর) বিদ্যুৎ খাতে সহযোগিতা সংক্রান্ত বাংলাদেশ-নেপাল জয়েন্ট স্টিয়ারিং কমিটির এক ভার্চুয়াল সভায় নেপালের পক্ষ থেকে এই প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।
সভায় দুই দেশের বিদ্যুৎ খাতে সহযোগিতা বাড়ানোর বিষয়ে গুরুত্ব দেওয়া হয়। সভায় বাংলাদেশ প্রতিনিধি দলের নের্তৃত্ব দেন বিদ্যুৎ বিভাগের সচিব মো. হাবিবুর রহমান এবং নেপালের পক্ষে বিদ্যুৎ , পানি সম্পদ ও সেচ সচিব দেবেন্দ্র কাকি।
সূত্র জানায়, নেপাল থেকে বিদ্যুৎ আমদানির পাশাপাশি ভারতের জিএমআর গ্রুপের নেপালে বাস্তবায়িত নয়শ মেগাওয়াট আপার কার্নালী জল বিদ্যুৎ কেন্দ্রে উৎপাদিত বিদ্যুৎ থেকে পাঁচশ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ বাংলাদেশ আমদানির অগ্রগতি নিয়ে সভায় আলোচনা হয়। এছাড়া নেপালে জল বিদ্যুৎ কেন্দ্রে বিনিয়োগের সম্ভাবনা খতিয়ে দেখা ও বাংলাদেশের বেসরকারি খাতের পক্ষ থেকে নেপালের বিদ্যুৎ উৎপাদনে বিনিয়োগের বিষয়েও আলোচনা হয়।
নেপাল সরকার সেদেশে সম্ভাব্য যে পাঁচটি জল-বিদ্যুৎ প্রকল্প চিহ্নিত করেছে তার কোনটিতে বাংলাদেশি প্রতিষ্ঠানের বিনিয়োগের সুযোগ থাকবে সে বিষয়ে নেপালের চলমান সমীক্ষার পর সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
স্টিয়ারিং কমিটির সভায় নেপালে জল-বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপনের বিপুল সম্ভাবনা এবং উভয় দেশের বিদ্যুতের প্রয়োজনীয়তা বিবেচনায় এই সম্ভাবনা কাজে লাগানোর বিষয়ে ফলপ্রসু আলোচনা হয়েছে। উভয় দেশের মধ্যে ঋতু ভেদে বিদ্যুৎ চাহিদার তারতম্যের আলোকে পারস্পরিক বিদ্যুৎ বাণিজ্যের বিষয়টি সভায় গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করা হয়।
সভায় জানানো হয়, নেপালে বিদ্যুৎ কেন্দ্রে অর্থায়ন ও যৌথভাবে প্রকল্প বাস্তবায়নের লক্ষ্যে সম্ভাব্য প্রকল্প চিহ্নিত করা, উভয় দেশের মধ্যে বিদ্যুৎ আমদানি-রপ্তানির পন্থা নির্ধারণ এবং আন্তঃদেশীয় বিদ্যুৎ সংযোগের মাধ্যমে বিদ্যুৎ সঞ্চালনের সম্ভব্যতা যাচাইয়ের লক্ষ্যে উভয় দেশের প্রতিনিধিদের নিয়ে গঠিত জয়েন্ট টেকনিক্যাল টিম (জেনারেশন) ও জয়েন্ট টেকনিক্যাল টিম (ট্রান্সমিশন) কাজ করছে।
তবে সঞ্চালন লাইনের অংশ, বিশেষ করে ভারতের ভূখণ্ডের মধ্যে নির্মিত হবে বিধায় বাংলাদেশ-ভারত-নেপাল ত্রিপক্ষীয় সমঝোতার মাধ্যমে বিষয়টি নির্ধারণ হবে বলে সভায় মত প্রকাশ করা হয়। এছাড়া বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড, জিএমআর এবং এনডিভিএন-এর মধ্যে এ সংক্রান্ত স্বাক্ষরিতব্য চুক্তিটি চূড়ান্ত করার প্রক্রিয়ায় রয়েছে বলে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে জানানো হয়।
সভায় বাংলাদেশ ও নেপালে নবায়নযোগ্য জ্বালানির সম্প্রসারণের অভিজ্ঞতা, জ্ঞান ও দক্ষতা বিনিময়ে উভয় দেশের মধ্যে সহযোগিতার বিষয় পর্যালোচনা করা হয় । সভায় বাংলাদেশের সোলার হোম সিস্টেম কার্যক্রম ও নেট মিটারিং কার্যক্রমের অভিজ্ঞতা তুলে ধরা হয়। এ বিষয়ে পারস্পরিক সহযোগিতা ও কার্যক্রম গ্রহণের লক্ষ্যে বাংলাদেশের এবং নেপালের অল্টারনেটিভ এনার্জি প্রমোশন সেন্টারের মধ্যে একটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরের বিষয়েও আলোচনা হয়েছে ।
জেএসসি সভায় বিদ্যুৎ খাতে ক্যাপাসিটি বিল্ডিং এর কার্যক্রম গ্রহণের বিষয়ে উভয় দেশ সম্মতি প্রকাশ করে। এ সময় বাংলাদেশের পক্ষ থেকে বিপিএমআই-এর প্রশিক্ষণ সক্ষমতার বিবরণ তুলে ধরা হয়।