স্টাফ রিপোর্টার: মানহানির মামলায় সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ব্যারিস্টার মইনুল হোসেনের জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। মঙ্গলবার দুপুর ১টার দিকে তাকে আদালতে নেয়া হলে ঢাকা মহানগর হাকিম (এসিএমএম) কায়সারুল ইসলাম শুনানি শেষে তার জামিন নামঞ্জুর করে এ নির্দেশ দেন। মইনুলের জামিন শুনানি করেন খন্দকার মাহবুব হোসেন, সানাউল্লাহ মিয়া ও মাসুদ আহমেদ তালুকদার। তারা বলেন, মামলাটি জামিনযোগ্য ধারায় করা হয়েছে। এ ঘটনায় সারা দেশে একাধিক মামলা করা হয়েছে। রংপুরের যে মামলাটি করা হয়েছে সেটি অন্য একজন করেছেন। অপরদিকে ঢাকায় মাসুদা ভাট্টি নিজেই মামলা করেছেন। একই ঘটনায় একাধিক মামলা চলতে পারে না। অপরদিকে মাসুদা ভাট্টির আইনজীবী নজিবুল্লাহ হিরু বলেন, মইনুল যে বক্তব্য দিয়েছেন তার দ্বারা পুরো নারী জাতি কলঙ্কিত হয়েছেন। মামলাটি জামিনযোগ্য ধারায় হলেও সার্বিক বিবেচনায় তার জামিন নামঞ্জুর করা হোক। এ ছাড়াও মামলাটি রংপুরের হওয়ায় রংপুরে শুনানি হওয়ায়ই ভালো। উল্লেখ্য, সাংবাদিক মাসুদা ভাট্টিকে নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্য করায় ব্যারিস্টার মইনুল হোসেনের বিরুদ্ধে ঢাকাসহ দেশের বেশ কয়েকটি এলাকায় মানহানির মামলা দায়ের করা হয়। এর মধ্যে কয়েকটিতে তিনি উচ্চ আদালত থেকে আগাম জামিন নিয়েছেন। গত ১৬ই অক্টোবর একাত্তর টেলিভিশনের টক শো ‘একাত্তর জার্নাল’ এ ব্যারিস্টার মইনুল হোসেনকে সাংবাদিক মাসুদা ভাট্টি প্রশ্ন করেন, ‘জাতীয় ঐক্যফ্রন্টে আপনি যে হিসেবে উপস্থিত থাকেন- আপনি বলেছেন আপনি নাগরিক হিসেবে উপস্থিত থাকেন। কিন্তু সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অনেকেই বলছেন, আপনি কী জামায়াতের প্রতিনিধি হয়ে সেখানে উপস্থিত থাকেন।’ মাসুদা ভাট্টির এই প্রশ্নে মইনুল হোসেন বলেন, ‘আপনার দুঃসাহসের জন্য আপনাকে ধন্যবাদ দিচ্ছি। আপনি চরিত্রহীন বলে আমি মনে করতে চাই। আমার সঙ্গে জামায়াতের কানেকশনের কোনো প্রশ্নই নেই। আপনি যে প্রশ্ন করেছেন তা আমার জন্য অত্যন্ত বিব্রতকর।’ এ ঘটনার পর বিভিন্ন মহল থেকে বিষয়টি নিয়ে সমালোচনা শুরু হয়। একপর্যায়ে গত ২১শে অক্টোবর ঢাকা মহানগর হাকিম আদালতে ব্যারিস্টার মইনুল হোসেনের বিরুদ্ধে মানহানির মামলা দায়ের করেন সাংবাদিক মাসুদা ভাট্টি। পরে জামালপুর ও কুড়িগ্রামেও তার বিরুদ্ধে মামলা হয়। এর মধ্যে ঢাকা ও জামালপুরের মামলায় গত রোববার পাঁচ মাসের এবং গতকাল কুড়িগ্রামের মামলায় ছয় সপ্তাহের আগাম জামিন পান তিনি। প্রসঙ্গত, ব্যারিস্টার মইনুল হোসেন সম্প্রতি গঠিত জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের সঙ্গে জড়িত হন। তিনি ফ্রন্টের একাধিক বৈঠকেও অংশ নেন। সেই ধারাবাহিকতায় গতকাল রাতের আ স ম আবদুর রবের উত্তরার জসিম উদ্দীন রোডের বাসায় বৈঠক করেন তত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক এই উপদেষ্টা।