1. hasanchy52@gmail.com : admin :
  2. amarnews16@gmail.com : Akram Hossain : Akram Hossain
রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৮:৫৬ পূর্বাহ্ন

বোল্যান্ডের জন্য রূপকথার রূপকথা

  • প্রকাশের সময় : মঙ্গলবার, ২৮ ডিসেম্বর, ২০২১
  • ৪৩০ বার দেখা হয়েছে

ব্রিসবেন ও অ্যাডিলেডে ইংল্যান্ডের ব্যাটিং দুর্দশা ফুটে উঠেছিল বেশ ভালোভাবে। তাই বলে মেলবোর্ন ক্রিকেট গ্রাউন্ডে এমন হাল হবে, কেউ কী জানতেন! মাত্র ৬৮ রানে দ্বিতীয় ইনিংসে অলআউট হয়ে ইনিংস ও ১৪ রানে হার। মাত্র ১০৮৪ বলেই শেষ হয়ে গেল বক্সিং ডে টেস্ট, ৭০ বছরে অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে সবচেয়ে সংক্ষিপ্ত টেস্ট। অ্যাশেজও নিশ্চিত হয়ে গেল স্বাগতিকদের। জয়ের নায়ক স্কট বোল্যান্ডের মুখে চওড়া হাসি।

নিজের অনুভূতি ব্যক্ত করতে গিয়ে ডানহাতি ফাস্ট বোলার ভাষা খুঁজে পাচ্ছিলেন না, ‘আমি নির্বাক। এমন কিছু হতে পারে আমার ধারণাই ছিল না। এটাই আমার সেরা বোলিং ফিগার, এত দ্রুত কোনো কিছু ঘটেনি। (দর্শক) ছিল অসাধারণ, তাদের সামনে খেলা আপনাকে সত্যিই উজ্জীবিত করে।’ বোল্যান্ড তার বোলিং শেষ করেছেন ৪ ওভারে ৭ রান দিয়ে ৬ উইকেট নিয়ে, এর মধ্যে একটি মেডেনও রয়েছে!

দ্বিতীয় দিন ১১তম ওভারে বল হাতে নিয়ে প্রথম দুই বলে ডট দেন। তারপর তিন বলের মধ্যে হাসিব হামিদ ও জ্যাক লিচকে ক্রিজছাড়া করেন। তৃতীয় দিনও ১১তম ওভারে বল হাতে পেলেন। ৩২ বছর বয়সী ফাস্ট বোলার প্রথম বলেই জনি বেয়ারস্টোকে ফেরাতে পারতেন, কিন্তু গালিতে ক্যামেরন গ্রিন ক্যাচ ছাড়লেন। তবে পঞ্চম বলেই উইকেটটি পেলেন এলবিডব্লিউ করে। পরের ওভারে জো রুটকে বানালেন ডেভিড ওয়ার্নারের ক্যাচ, মেডেন উইকেট। তৃতীয় দিন নিজের তৃতীয় ওভারে মার্ক উড ও ওলি রবিনসনকে তিন বলের মধ্যে বিদায় করলেন। মাত্র ২১ বলের মধ্যে ৬ উইকেট নিয়ে অবিশ্বাস্য বোল্যান্ড।

ম্যাচ শেষে সেরা খেলোয়াড়ের পুরস্কার মুলাঘ মেডেল পেলেন তিনি। প্রথম টেস্টেই চমক দেখানো বোল্যান্ডের ব্যাগি গ্রিন ক্যাপ পাওয়াটা আকস্মিক। অ্যাডিলেডে ৫ উইকেট নেওয়া ঝাই রিচার্ডসন পায়ের ছোটখাটো ইনজুরিতে পড়েন, তাকে নিয়ে ঝুঁকি নিতে চাননি অধিনায়ক প্যাট কামিন্স। ডাক পড়ে বোল্যান্ডের। ২০১৬ সালে ১৪ ওয়ানডে ও তিনটি টি-টোয়েন্টি খেলা এই পেসারকে ডাকার কারণ, মেলবোর্ন ক্রিকেট গ্রাউন্ডে তার পরিসংখ্যান ঈর্ষণীয়। ভিক্টোরিয়ার হয়ে এই মাঠে ২৭টি প্রথম শ্রেণির ম্যাচ খেলে ২৫.৫৬ গড়ে ৯৬ উইকেট নিয়েছেন। শেফিল্ড শিল্ডে এই মৌসুমে ১০.৮০ গড়ে ১৫ উইকেট নিয়ে অ্যাশেজের আগে ঢুকে পড়েন অস্ট্রেলিয়া ‘এ’ দলে। ব্যস, হোম গ্রাউন্ড স্পেশালিস্ট হিসেবে রিচার্ডসনের জায়গায় ঢুকেই বাজিমাত।

ফাইথ থোমাস, জেসন গিলেস্পি ও অ্যাশলেইঘ গার্ডনারের পর চতুর্থ আদিবাসী অস্ট্রেলিয়ান হিসেবে টেস্টে বোল্যান্ডের আবির্ভাব রূপকথার মতো বললে ভুল হবে না। ১৭ বছর বয়সে ফ্রাক্সস্টোন-পেনিনসুলার হয়ে খেলা শুরু করেন তিনি। কিন্তু তাকে পাঠিয়ে দেওয়া হয় দ্বিতীয় বিভাগে। ক্লাবটির ভাইস প্রেসিডেন্ট ডেনিস প্রেনডেরগ্যাস্ট জানান, তাকে আরেকটু খাটতে হবে। মূল সমস্যা ছিল তার শারীরিক ফিটনেস। ডেনিস বলেন, ‘কোচিং প্যানেলের পরামর্শ হলো, তাকে তার খেলা নিয়ে আরেকটু কাজ করতে হবে এবং শরীরকে আরো ভালো গড়নে আনতে হবে। অনেক খেলোয়াড়ই হয়তো এটা মেনে নিতে চাইত না, কিন্তু স্কট নিয়েছিল।’

বোল্যান্ড একজন রানিং কোচকে পেলেন এবং ডায়েটিশিয়ানের সঙ্গে আলাপ করলেন। ফল, দ্রুত পারফরম্যান্সে উন্নতি। বছরখানেক পর ভিক্টোরিয়ার সঙ্গে শিক্ষানবিশ চুক্তি এবং আরো কয়েক বছর যেতেই পূর্ণ চুক্তি। লক্ষ্যে পৌঁছাতে যতপ্রকারের অধ্যাবসায় করতে হয়, সব করেছেন। জাতীয় নির্বাচক টনি ডোডেমেইড বলেছেন, ‘বোল্যান্ড এলিভেটর নয়, সিঁড়ি বেছে নিয়েছে। স্কটের কী দারুণ রূপকথা!

অস্ট্রেলিয়ান ক্রীড়া সাংবাদিক মেলিন্ডা ফারেল তো দারুণ বিশেষণ দিলেন, ‘স্কট বোল্যান্ডের জন্য রূপকথার রূপকথা। এমসিজিতে অভিষেকে ইনিংসে পাঁচ উইকেট, তাও আবার অ্যাশেজে যেদিন অস্ট্রেলিয়া সিরিজ নিশ্চিত করল। এক কথায় অসাধারণ। আমি আশা করি এটা অনেক আদিবাসী শিশুকে টেস্ট ক্রিকেট খেলার স্বপ্ন দেখতে অনুপ্রাণিত করবে।

শেয়ার করুন

এ বিভাগের আরও খবর
© All rights reserved © 2014 Amar News
Site Customized By Hasan Chowdhury