মাসখানেক আগেও বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মতো বাংলাদেশেও করোনার প্রকোপ কমে এসেছিল। কিন্তু বর্তমানে করোনার দক্ষিণ আফ্রিকান ভ্যারিয়েন্ট ওমিক্রনের হানায় পরিস্থিতি ফের অবনতির দিকে।
ওমিক্রনে আক্রান্তের সংখ্যা হু হু করে বেড়েই চলেছে। এই ভ্যারিয়েন্টের লক্ষণগুলো হালকা হলেও, এটি খুব দ্রুত ছড়িয়ে পড়তে পারে, এমনটাই মত বিশেষজ্ঞদের। তাই করোনা থেকে রক্ষা পেতে টিকা গ্রহণ ও রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা (ইমিউনিটি) শক্তিশালী করার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। আর ইমিউনিটি শক্তিশালী করার জন্যস্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়া খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, কোভিড সংক্রমণ প্রতিরোধে বা নিরাময়ে কোনো নির্দিষ্ট ডায়েট বা খাবার সাহায্য করতে পারে না ঠিকই, তবে ইমিউনিটিকে শক্তিশালী করে সংক্রমণের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে অবশ্যই সাহায্য করতে পারে। এখানে ইমিউন সিস্টেম বা শরীরের রোগপ্রতিরোধ তন্ত্রকে শক্তিশালী করতে পারে এমনকিছু খাবার দেয়া হলো।
জিংকসমৃদ্ধ খাবার: বেশি করে জিংকসমৃদ্ধ খাবার খেতে চেষ্টা করুন। গবেষণায় ধারণা পাওয়া গেছে, জিংক মানুষের কোষে ভাইরাসের প্রতিলিপি তৈরিতে বাধা দিতে পারে। ইউনিভার্সিটি অব টাম্পার নিউট্রিশন অ্যান্ড কাইনসিওলজির অধ্যাপক মেলিসা মরিস রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে পারে এমন খাবারের তালিকায় জিংক উপরের দিকে রেখেছেন। জিংকের কিছু উৎস হলো- গরুর মাংস, কাজু বাদাম, কাঠবাদাম, চিনাবাদাম, মসুর ডাল, ছোলা, মিষ্টি কুমড়ার বীজ ও ডিম।
ভিটামিন ‘এ’ সমৃদ্ধ খাবার: খাদ্যতালিকায় ভিটামিন ‘এ’ সমৃদ্ধ খাবারও অন্তর্ভুক্ত করুন। গবেষণা বলছে, ভিটামিন ‘এ’ ও জিংকের সমন্বয়ে ভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধ হতে পারে অথবা মারাত্মক পরিণতির ঝুঁকি কমতে পারে। মিষ্টি আলু, গাজর, গাঢ় সবুজ শাকসবজি, লাল ক্যাপসিকামে ভিটামিন ‘এ’ পাবেন।
ভিটামিন ‘সি’ সমৃদ্ধ খাবার: যুক্তরাষ্ট্রের পুষ্টি বিশেষজ্ঞ জেনিফার টাইলার লির মতে, ভিটামিন সি ভাইরাস সংক্রমণের অসুস্থতা থেকে সুস্থ হতে সাহায্য করে। অনেকেই ভিটামিন ‘সি’ বলতে কেবল লেবু ও কমলা বুঝে থাকেন, কিন্তু কাঁচা মরিচ, ক্যাপসিকাম, আম, পেয়ারা, লিচু, পেঁপে ও স্ট্রবেরিতেও ভালো পরিমাণে ভিটামিন ‘সি’ রয়েছে।
ভিটামিন ‘ডি’ সমৃদ্ধ খাবার: করোনাভাইরাসের নতুন-পুরোনো ধরন থেকে সুরক্ষা পেতে খাদ্যতালিকায় ভিটামিন ‘ডি’ রাখতে হবে। এ জন্য সমুদ্রের তৈলাক্ত মাছ, কলিজা, ডিমের কুসুম, পনির ও ভিটামিন ডি ফর্টিফায়েড খাবার খেতে পারেন। চিকিৎসকদের মতে শুধু খাবার খেয়েই ভিটামিন ‘ডি’-এর চাহিদা মেটানো কঠিন। তাই শরীরে ভিটামিন ‘ডি’ পাওয়ার জন্য দিনের কিছু সময় (১৫ থেকে ৩০ মিনিট) রোদ পোহাতে হবে।
গ্রিন টি: এই পানীয়তে অ্যান্টিঅক্সিড্যান্টের পাশাপাশি এমন কিছু উপাদান রয়েছে যা ভাইরাসের সংক্রমণ দুর্বল করতে পারে। চিকিৎসকদের মতে, দিনে ৫ কাপের বেশি গ্রিন টি পান না-করাই ভালো। একসঙ্গে আদা, রসুন, লবঙ্গ ও চা পাতা সহকারে পানি ৫-৭ মিনিট ফুটিয়ে রঙ চা বানিয়ে পান করতে পারেন। একাধিক গবেষণায় আদা ও রসুনের রোগ প্রতিরোধী গুণ প্রমাণিত হয়েছে। আদা-রসুন রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে বুস্ট করতে সাহায্য করে। তুলসি পাতা, তিল, হলুদ, লবঙ্গ ও কালোজিরা প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার কাজে সাহায্য করে থাকে।