নারী ওয়ানডে বিশ্বকাপে শেষ বলে জেতার ঘটনা বিরল। ২০১৩ সালে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে শ্রীলঙ্কা এই শ্বাসরুদ্ধকর জয় পেয়েছিল। ৯ বছর পর বিশ্বকাপের ইতিহাসে কেবল দ্বিতীয়বার এমন দৃশ্যের অবতারণা হলো ক্রাইস্টচার্চে ভারত ও দক্ষিণ আফ্রিকার ম্যাচে। আর এই ম্যাচে ভারতকে ৩ উইকেটে হারিয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে সেমিফাইনালে তুলল প্রোটিয়ারা।
শেষ ওভারে দক্ষিণ আফ্রিকার প্রয়োজন ৭ রান, ফিল্ডিংয়ে থাকা ভারতের কপালে দুশ্চিন্তার ভাঁজ। একই সময়ে তাদের সঙ্গে নারী বিশ্বকাপের আরেকটি দল ড্রেসিংরুমে টেনশনে নখ কামড়াচ্ছিল। সেই দলটি ওয়েস্ট ইন্ডিজ। দক্ষিণ আফ্রিকার জয়-পরাজয়ের ওপর ঝুলে ছিল ভারত ও উইন্ডিজের সেমিফাইনাল ভাগ্য।
প্রথম বলে সিঙ্গেল নিলেন তৃষা ছেত্তি। মিগনন ডু প্রিজ পরের বলে দৌড়ে দুটি রান নিতে চাইলেন। কিন্তু তৃষা হলেন রান আউট। পরের দুটি বলে শাবনিম ইসমাইল ও ডু প্রিজ একটি করে সিঙ্গেল নিয়ে ব্যবধান কমালেন। শেষ দুই বলে দরকার ছিল ৩ রান। দীপ্তি শর্মার পঞ্চম বলে ডু প্রিজ ক্যাচ হন হারমাপ্রীত কৌরের। উইকেট উদযাপনে মেতে ওঠে দল, কিন্তু তাদের হতবাক করে দিয়ে ওভারস্টেপের নো বল দেন আম্পায়ার। এই নো বলের মাশুল ভালোভাবে দিতে হয়েছে ভারতকে। শাবনিম এক রান নিয়ে শেষ বল খেলার দায়িত্ব দিলেন ডু প্রিজকে, মিডউইকেট দিয়ে বল ঠেলে একটি রান নেন তিনি। এই রানটি দেখার জন্য তখন উইন্ডিজের ক্রিকেটারদের সবার চোখ টিভির পর্দায়, ব্যস হয়ে গেল এবং তাদের আনন্দ দেখে কে!
কারণ এই ম্যাচ ভারত হেরে যাওয়ায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ সেমিফাইনালে উঠল। ৬ পয়েন্ট নিয়ে বিশ্বকাপ থেকে ছিটকে গেল ভারতীয়রা। আর এক পয়েন্ট বেশি নিয়ে শেষ চারে ক্যারিবিয়ানরা। আগেই সেমিফাইনালে পা রাখা দক্ষিণ আফ্রিকা ১১ পয়েন্ট নিয়ে রাউন্ড রবিন পর্ব শেষ করল।
সেমিফাইনাল চূড়ান্ত হলো চার দল অস্ট্রেলিয়া, দক্ষিণ আফ্রিকা, ইংল্যান্ড ও ওয়েস্ট ইন্ডিজের।
হ্যাগলি ওভালে রাউন্ড রবিনের শেষ ম্যাচে ডু প্রিজ ৬৩ বলে ৫২ রানে অপরাজিত ছিলেন, ২ রানে খেলছিলেন শাবনিম। ৭ উইকেটে দক্ষিণ আফ্রিকা করে ২৭৫ রান। ডু প্রিজ ছাড়া প্রোটিয়াদের পক্ষে সর্বোচ্চ ৮০ রান করে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন লরা উলভার্ডট। ৪৯ রান করেন লারা গুডঅল। ৩০ বলে ৩২ রানের দারুণ ইনিংস খেলেন মারিজান্নে ক্যাপ।
এর আগে ভারত তিন ফিফটিতে বড় স্কোরের চ্যালেঞ্জ দিয়েছিল দক্ষিণ আফ্রিকাকে। স্মৃতি মান্ধানা সর্বোচ্চ ৭১ রান করেন। এছাড়া শেফালি ভার্মা (৫৩) ও মিতালি রাজ (৬৮) হাফ সেঞ্চুরি করেন। হারমানপ্রীত কৌর (৪৮) ২ রানের জন্য ইনিংসের চতুর্থ হাফ সেঞ্চুরিয়ান হতে পারেননি। ৭ উইকেটে ভারত করে ২৭৪ রান।
সর্বোচ্চ দুটি করে উইকেট নেন শাবনিম ও মাসাবাতা ক্ল্যাস।