ইউরোপিয়ান ফুটবলের ঝনঝনানি শেষ। তাই বলে ফুটবলের উত্তেজনার পারদও কি নিচের দিকে? না, একদমই না। লন্ডনের ওয়েম্বলিতে যে বুধবার বাংলাদেশ সময় দিবাগত রাত পৌনে ১টায় মাঠে নামছেন বিশ্ব ফুটবলের অন্যতম সেরা খেলোয়াড় লিওনেল মেসি। তার গায়ে থাকবে আর্জেন্টিনার জার্সি, যেটা পরে গত জুলাইয়ে কোপা আমেরিকা জয়ে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। জীবনের বড় আক্ষেপ ঘুচিয়েছিলেন সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়ে। চারটি গোল ও পাঁচটি অ্যাসিস্টে হয়েছিলেন টুর্নামেন্টের সেরা খেলোয়াড়।সেদিন ফাইনালে মারাকানায় ব্রাজিলকে ১-০ গোলে হারিয়ে দক্ষিণ আমেরিকার চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল আর্জেন্টিনা। তারই সুবাদে আজকের ম্যাচ তারা খেলবে ইউরোর চ্যাম্পিয়ন ইতালির বিপক্ষে। কাগজে-কলমে এই ম্যাচকে ডাকা হচ্ছে ফাইনালিসিমা বলে।এর আগে দুইবার কনমেবল ও উয়েফার যোগসাজশে আয়োজিত হয়েছিল ফাইনালিসিমা। সবশেষ ম্যাচেও ছিল আর্জেন্টিনা, ১৯৯৩ সালে তারা ঘরের মাঠে ডেনমার্ককে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয়। আর ১৯৮৫ সালে ফ্রান্স প্যারিসে ২-০ গোলে হারায় উরুগুয়েকে।এই প্রথমবার ফাইনালিসিমা হচ্ছে নিরপেক্ষ ভেন্যুতে, যে ওয়েম্বলিতে গত বছর স্বাগতিক ইংল্যান্ডকে টাইব্রেকারে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল ইতালি। আন্তর্জাতিক ফুটবলে আজ্জুরিরা অপরাজিত থাকার রেকর্ড গড়ে ইউরোপ সেরা হয়েছিল। কিন্তু গত মার্চে তাদের সেই অর্জনকে ধুয়েমুছে ফেলে আরেকটি বিশ্বকাপে না ওঠার ব্যর্থতা।রবার্তো মানচিনির দল সেই দুঃখ ভুলতেই যেন ফাইনালিসিমায় চোখ রাখছে। এই ম্যাচ খেলেই ইতালির জার্সি খুলে ফেলবেন জর্জিও কিয়েল্লিনি। ৩৭ বছর বয়সী ডিফেন্ডার আন্তর্জাতিক ফুটবলের লম্বা যাত্রা এখানেই শেষ করছেন।তবে আর্জেন্টিনার সঙ্গে ইতালির অতীত অভিজ্ঞতা ভালো নয়। শেষ তিন ম্যাচের সবগুলোই হেরেছে, সেগুলো ছিল প্রীতি ম্যাচ। শেষ প্রতিযোগিতামূলক ম্যাচে দুই দল মুখোমুখি হয়েছিল ১৯৯০ সালের বিশ্বকাপে। সেমিফাইনালে নির্ধারিত সময় ১-১ গোলে ড্র হলে পেনাল্টিতে ৪-৩ এ জেতে আর্জেন্টিনা।অবশ্য সব মিলিয়ে ১৫ ম্যাচ খেলে ইতালি জিতেছে ছয়টি, আর্জেন্টিনার জয় ৫টি। বাকি ম্যাচ হয়েছে ড্র।এবারও আর্জেন্টিনা ফর্মের তুঙ্গে থেকে ইতালির মুখোমুখি হচ্ছে। ২০১৯ সালের জুলাইয়ের পর থেকে অপরাজিত তারা। এই ফাইনালিসিমায় থাকছে না অতিরিক্ত সময়। ৯০ মিনিটেও স্কোর সমান সমান থাকলে খেলা গড়াবে টাইব্রেকারে। এখন দেখার অপেক্ষা শেষ হাসি কার? মেসি কি পারবেন দ্বিতীয় আন্তর্জাতিক ট্রফি হাতে নিতে নাকি ইতালি দক্ষিণ আমেরিকান চ্যাম্পিয়নদের হারিয়ে বিশ্বকাপ ব্যর্থতার দুঃখ ঘুচাবে?