অভি হাসানঃ
মানিকগঞ্জ জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনে কমিটি গঠন প্রক্রিয়াকে অবৈধ আখ্যা দিয়ে তা বাতিলের দাবিতে মানিকগঞ্জ সার্কিট হাউজে কেন্দ্রীয় নেতাদের ঘেরাও করে বিক্ষোভ করেছেন মহিলা আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা।
আজ শনিবার বিকেলে সাড়ে ৫ টার দিকে সার্কিট হাউজ গেটের সামনে কমিটি বাতিলের দাবিতে বিক্ষোভ করেন তারা। এর আগে, বিকেল ৫টার দিকে সরকারি দেবেন্দ্র কলেজ মিলনায়তনে জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক এমপি, মানিকগঞ্জ- ২ আসনের সংসদ সদস্য মমতাজ বেগম, মানিকগঞ্জ-১ আসনের সংসদ সদস্য এ এম নাঈমুর রহমান দুর্জয় জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি গোলাম মহীউদ্দীন, সাধারণ সম্পাদক আব্দুস সালাম, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সুলতানুল আজম খান আপেল সহ অন্যান্যরা।
ওই সম্মেলনে প্রথম অধিবেশন শেষ হওয়ার পর পরই দ্বিতীয় অধিবেশন না ডেকেই মৃদুলা রহমানকে সভাপতি ও আনোয়ারা বেগমকে সাধারণ সম্পাদক ঘোষনা করেন কেন্দ্রীয় কমিটির নেতৃবৃন্দ। কমিটি বাতিলের দাবিতে তাৎক্ষনিক প্রতিবাদ করেন সম্মেলনে উপস্থিত নেতাকর্মীরা। পরে কেন্দ্রীয় নেত্রীবৃন্দ সার্কিট হাউজে যাওয়ার খবর পেয়ে সেখানেই উপস্থিত হয়ে ঘন্টা ব্যাপী বিক্ষোভ করেন দলীয় নেতাকর্মীরা।
জেলা কমিটির সাবেক সভাপতি নীনা রহমান অভিযোগ করে বলেন, কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ কাউন্সিল না করে তাদের পছন্দের দুজনকে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক ঘোষণা করেছেন। নতুন সভাপতি মৃদুলা রহমান ও সাধারণ সম্পাদক আনোয়ারা বেগম মহিলা আওয়ামী লীগের সাথে জড়িত ছিলেননা। তারা এই সম্মেলনে কাউন্সিলরও ছিলেন না। তাই তাদেরকে সভাপতি সম্পাদক করা সংবিধান বহির্ভূত হয়েছে।
সদ্য বিদায়ী জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক লক্ষ্মী চ্যাটার্জি বলেন, কেন্দ্রীয় কমিটি সাধারণ সম্পাদক মাহমুদা বেগম সম্মেলনের প্রথম অধিবেশন শেষ হওয়ার পর দ্বিতীয় অধিবেশ ডাকেননি। কেন্দ্রীয় কমিটি কোন নিয়মকানুন না মেনেই ৬০ জন ডেলিগেটরের মতামত না নিয়েই অবৈধভাবে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের নাম ঘোষনা করেছেন। এর পরই সম্মেলনে উপস্থিত নেতাকর্মীরা নির্ধারিত ডেলিগেটদের ভোটে কমিটি গঠনের শ্লোগান দেন। কিন্তু কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ অবৈধ ভাবে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের নাম ঘোষনা করে চলে যান।
একাধিক মহিলা নেত্রীরা অভিযোগ করে জানান, আজ প্রায় দুই যুগ পরে জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। সকল উপজেলা থেকেই নেত্রীরা আজ সম্মেলনে এসেছেন। আজ কাউন্সিল করেই সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক নির্বাচন করার কথা ছিল। কিন্তু দু:খের বিষয় হলো কেন্দ্রীয় নেত্রীবৃন্দরা টাকার বিনিময়ে কাউন্সিল ছাড়াই সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদ ঘোষণা করেন।
নতুন এই অবৈধ কমিটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদককে আমরা মানিনা। এই কমিটিকে বিলুপ্ত করে কাউন্সিলের মাধ্যমে নতুন কমিটি দেওয়া হোক।
জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক কাজী এনায়েত হোসেন ও সাংগঠনিক সম্পাদক তায়েবুর রহমান বলেন, কেন্দ্রীয় কমিটি জেলা মহিলা আওয়ামী লীগকে কবর দিয়ে গেলেন। জেলা শহরে নেতৃত্ব দেওয়া মতো যোগ্য নেতা থাকার পরও সভাপতি করা হয়েছে মানিকগঞ্জের এক প্রান্ত হরিরামপুর ও সাধারণ সম্পাদক করা হয়েছে অপর প্রান্তের সিংগাইর থেকে। দুজনের বাড়ী প্রায় ৬০ কিলোঃ ব্যবধানে।