1. hasanchy52@gmail.com : admin :
  2. amarnews16@gmail.com : Akram Hossain : Akram Hossain
শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ১০:৪৩ অপরাহ্ন

মানিকগঞ্জের ঘিওরে এক কলেজ শিক্ষার্থীর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার, পরিবারের অভিযোগ ইউপি সদস্যের ভয়ভীতিতে আত্মহত্যা করেছে

  • প্রকাশের সময় : রবিবার, ৩০ অক্টোবর, ২০২২
  • ১৭১০ বার দেখা হয়েছে

স্টাফ রিপোর্টার, দীপক সূত্রধর:

মানিকগঞ্জের ঘিওরের নালী ইউনিয়নের কলতা গ্রামের  এক কলেজ শিক্ষার্থীর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করেছে থানা পুলিশ। পরিবারের অভিযোগ স্থানীয় ইউপি সদস্য রাজিব মিয়ার ভয়ভীতিতে সেন্টু মিয়া আত্মহত্যা করেছে। নিহত আতিকুর রহমান সেন্টু মিয়া (২২) উফাজানি গ্রামের মো: আনিছ মিয়ার ছোট ছেলে। সে সরকারি দেবেন্দ্র কলেজের বিএ প্রথম বর্ষের ছাত্র ছিল।

আজ রবিবার (৩০ অক্টোবর) সকালে ঘিওর উপজেলার নালী ইউপি সদস্য মো: রাজিব মিয়ার কলতা এলাকার রাস্তার পাশে বাগান ভিটা থেকে তার লাশ উদ্ধার করা হয়।

নিহতের মা লিপি বেগম জানান, গত শনিবার দিনগত রাতে আমার ছেলে সেন্টু প্রতিদিনের মতো রাতের খাবার খেয়ে ঘুমিয়ে পড়ে। আমরাও একই ঘরের আলাদা চোকিতে ঘুমিয়ে পড়ি। ভোরে ঘুম থেকে উঠে সেন্টুকে বিছানায় দেখতে না পেয়ে খুজাখুজি করতে থাকি।

সকাল ৬.টার দিকে প্রতিবেশিরা নালী ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য মো: রাজিব মিয়ার বাগান ভিটা জমির আম গাছের সাথে গলায় দড়ি দেওয়া(ঝুলন্ত) অবস্থায় দেখতে পেয়ে তাদেরকে জানায়। পরে গিয়ে দেখি আমার ছেলের লাশ আম গাছে ঝুলছে। পরে তারাতারি ঝুলন্ত অবস্থা থেকে নামিয়ে দেখি সে মারা গেছে।

তিনি সাংবাদিকদের জানান, তার এই ছেলের আত্মহত্যার পিছনে্ ইউপি সদস্য মো: রাজিব মিয়ার হাত রয়েছে। এরআগে সেন্টুকে রাজিব মিয়া এলাকার কিছু বখাটে ছেলেদের দিয়ে মারধর করিয়েছে। এর কোন বিচার পায়নি। এছাড়া আমার ছেলে ব্যাংক এশিয়া ও ডাচবাংলা এজেন্ট ব্যাংকে চাকুরী করতো। আমার ছেলের চাকুরী যাওয়ার পেছনেও সে কাজ করেছে। নালী ইউনিয়ন পরিষদে উদ্যেক্তা হিসেবে চাকুরীর জন্য এই রাজিব মেম্বার আমাদের কাছে ৫০ হাজার টাকা দাবী করে। টাকা দিতে না পারায় আমাদের সাথে খারাপ আচরণ করে। আমার ছেলে নির্বাচনে তার পক্ষে কাজ না করায় বিভিন্ন সময়ে ভয়ভীতি ও হুমকি ধামকি দিয়ে আসছিলো।আমার মেয়ের কাছেও রাজিবের বিষয়ে অনেক কিছু বলে গেছে। আমি আমার ছেলের আত্মহত্যার সাথে জরিত রাজিব মেম্বারের সুষ্ঠু বিচার চাই।

 

নিহতের বোন বীথী আক্তার জানান, গত কয়েকদিন আগে আমার বড় ভাই সেন্টু আমাকে বলে রাজিব মেম্বার আমাকে বাচতে দিবে না। কারণ জানতে চাইলে আমার ভাই বলে আমি বলতে পারবো না। আমি যদি মারা যায় তাহলে ঐ রাজিব মেম্বারের বাগান ভিটা জমির আম গাছ অথবা নিম গাছের সাথে ফাঁস নিব। আমার মৃত্যুর জন্য রাজিব মেম্বার দায়ী থাকবেন। আমার বিশ্বাস হয়নি আসলে এভাবে আত্মহত্যা করবে আমার ভাই।

 

নিহতের মামা হারুন বলেন, রাজিব মিয়া একটি খারাপ প্রকৃতির লোক। সে কয়েক মাস আগে রাজিব তার স্ত্রী বিলকিস বেগমকে ফুসলিয়া আমার কাছ থেকে ভাগিয়ে নিয়ে সভারের ফ্লাট বাসায় নিয়ে রেখেছে। আমি স্থানীয় চেয়ার‌ম্যান ও থানায় বিচার দিয়েও কোন প্রতিকার পায়নি।আমি আমার তিনটি সন্তান নিয়ে অনেক কষ্টে আছি। রাজিব মেম্বার এভাবে কয়েটা বিবাহ করেছে।  আমার ভাগিনা তার কথামতো না চলায় রাজিব বিভিন্ন সময়ে মেরে ফেলার ভয়ভীতি দেখাইতো।এছাড়া রাজিব মেম্বার সহ একটি চক্র এলাকায় দীর্ঘদিন যাবৎ মাদক ব্যবসা করে অনেক টাকা পয়সার মালিক হয়েছে। সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে রাজিব মিয়া দৃষ্টন্তমূলক বিচার দাবী করেছি।

 

এবিয়য়ে নালী ইউপি সদস্য মো: রাজিব মিয়া জানান, আমি দুই দুইবারে নির্বাচন করে বিপুল ভোটে মেম্বার নির্বাচিত হয়েছে। আমার নির্বাচনে যারা প্রতিদ্বন্দ্বি প্রার্থীরা সেন্টুর পরিবারকে উস্কানি দিয়ে এই অভিযোগ করিয়াছে। সেন্টু খুব ভালো ছেলে বিধায় আমি অকে খুবই পছন্দ করতাম। আমার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ করছে তা সত্য নয়। আমি ষড়যন্তের স্বীকার।সুষ্ঠু তদন্ত করলে মুলঘটনা বেড়িয়ে আসবে।

নালী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল কুদ্দুস মধু বলেন, আতিকুর রহমান সেন্টু এলাকায় একটি ভালো ছেলে হিসেবে পরিচিত ছিল।  এ ধরনের আত্মহত্যার ঘটনা কেন ঘটালো তা প্রশাসনকে খতিয়ে দেখতে হবে।

 

ঘিওর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো: আমিনুর রহমান বলেন, প্রাথমিকভাবে ধারনা করা হচ্ছে পারিবারিক কলহের জেরে আত্মহত্যা করছে। এছাড়া দুই দুই জায়গা থেকে চাকুরী চলে যাওয়া ও নালী ইউনিয়ন পরিষদে উদ্যেক্তার চাকুরী না পাওয়ার কারনে এই আত্মহত্যা করে থাকতে পারে। লাশ ময়নাতদন্তের জন্য লাশ ২৫০ শয্যা জেলা হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। ময়নাদদন্তের রিপোর্ট হাতে পেলে মারা যাওয়ার মূল কারন জানা যাবে।

শেয়ার করুন

এ বিভাগের আরও খবর
© All rights reserved © 2014 Amar News
Site Customized By Hasan Chowdhury