মানিকগঞ্জ জাতীয়পার্টিতে নতুন মেরুকরণ সৃস্টি হয়েছে। জাতীয়পার্টিতে যোগ দিয়েছেন সাবেক শিক্ষা উপমন্ত্রী ও মানিকগঞ্জ জেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান এবং বিকল্পধারার প্রেসিডিয়াম সদস্য থেকে পদত্যাগকারী গোলাম সারোয়ার মিলন। ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহে রওশন এরশাদের মাধ্যমে জাতীয়পার্টিতে যোগদান করলেও মঙ্গলবার তার সিংগাইর বাসভবণে সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময় সভায় যোগদানের বিষয়টি প্রকাশ করেন। সেই সাথে জাতীয়পার্টির হয়ে মহাজোট তাকে প্রার্থী দিলে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি প্রার্থী হবে বলে জানান। তবে তার এই যোগদান মেনে নিতে পারেনি বর্তমান কমিটি। তাদের দাবি মিলনের যোগদান দলের জন্য হট্টগোল সৃস্টি হবে।
মতবিনিময় সভায় গোলাম সারোয়ার মিলন বলেন, রাজনৈতিক বিভিন্ন কারণে আমি একাধিকবার দল পরিবর্তন করেছি। রাজনৈতিক মারপ্যাচে পরে আমি দীর্ঘদিন জাতীয় পার্টি থেকে দুরে ছিলাম। গত ৩ ডিসেম্বর আনুষ্ঠানিকভাবে আমি আবার জাতীয় পার্টিতে যোগাদান করি। জাতীয় পার্টিই আমার শেষ ঠিকানা। আমৃত্যু জাতীয় পার্টির সাথে রাজনীতি করবো। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জাতীয় পার্টি থেকে সংসদ নির্বাচনে অংশ গ্রহণ করার আশা প্রকাশ করেন সাবেক এই সাংসদ।
তিনি সরকারের উন্নয়নের প্রশংসা করলেও পাশাপাশি জবাবদিহিতা ও দুর্নীতি বন্ধে সরকার ব্যর্থ বলে মন্তব্য করেন। জেলা কমিটির বর্তমান নেতৃবৃন্দ অনুপস্থিতির কারন সম্পর্কে তিনি বলেন, সিংগাইর পৌর জাতীয়পার্টির আয়োজনে আজ কর্মী সম্মেলন হচ্ছে। জেলা কমিটির অনেকেই জানানো হয়েছিলো। তারা অনেকেই আসেনি। অচিরেই মানিকগঞ্জ জাতীয়পার্টিকে এককাতারে নিয়ে আসা হবে। দ্বন্দ্ববিভেদ ভুলে দলকে শক্তিশালি করে আগামীতে জাতীয়পার্টিকে এরশাদের শাসন আমলে মতো একটি শক্তিশালি দলের পরিনত করা হবে।
সিঙ্গাইর উপজেলা জাতীয় পার্টির সাবেক সভাপতি আবুল বাশারের সভাপতিত্বে এসময় বক্তব্য রাখেন সাবেক সাংসদ ও জাতীয় পার্টির রওশন এরশাদ ঘোষিত কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক এসএম গোফরান, যুগ্ম আহ্বায়ক ইকবাল হোসেন রাজু, কেন্দ্রীয় কমিটির নির্বাহী সদস্য আজিজ চৌধুরী, গোলজার হোসেন, সাবেক সচিব ও জাতীয় পার্টির নেতা হাবিবুল্লাহ, ইউনিয়ন সদস্য সংস্থা বইসস এর সহসভাপতি হাসান রাকিব, সদস্য সচিব সাইদুল ইসলাম মোয়াজ্জেম, মানিকগঞ্জ জেলা জাতীয় পার্টির সহসভাপতি ও কেন্দ্রীয় সদস্য নোয়াব আলী সিংগাইর উপজেলা জাতীয়পার্টির সাবেক সাধারণ সম্পাদক বীরমুক্তিযোদ্ধা আবুল কালাম আজাদ, সিংগাইর পৌর জাতীয়পার্টির সাধারণ সম্পাদক সালাউদ্দিন খোকা প্রমুখ।
জেলা জাতীয় পার্টির সাধারণ সম্পাদক হাসান সাঈদ বলেন, গোলাম সারোয়ার মিলন জাতীয়পার্টির মূলধারায় যোগদান করেনি। রওশন এরশাদের কাছে যোগদান বিধি সম্মত ভাবে হয়নি। গোলাম সারোয়ার মিলনের যোগদান দলের জন্য কোন উপকার হবে না বরং দলের ভিতরে হট্টগোল সৃস্টি হবে।
উল্লেখ্য যে গোলাম সারোয়ার মিলন ১৯৮১ থেকে ১৯৮২ মেয়াদের জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের প্রথম নির্বাচিত সভাপতি ছিলেন। তিনি এরশাদ সরকারবিরোধী আন্দোলনের অভিযোগে কারাবরণ করেন। ১ জানুয়ারি ১৯৮৬ সালে জাতীয় পার্টিতে যোগদান করে প্রেসিডিয়াম সদস্য মনোনীত হয়ে ছিলেন। এর জাতীয়পার্টি ক্ষমতায় থাকাকালিন সময় শিক্ষা উপমন্ত্রী ও মানিকগঞ্জ জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ছিলেন। গত সংসদ নির্বাচনের আগ মুহুর্তে তিনি জাতীয়পার্টি থেকে বিকল্পধারা যোগ দেন। কিন্তু মহাজোট থেকে তিনি মনোনয়ন পাননি। গত জুলাই মাসে তিনি বিকল্পধারা থেকে পদত্যাগের ঘোষনা দেন। সে সময় তিনি উল্লেখ করেন বিকল্পধারা তার সাথে বেইমানী করেছে। মহাজোট ক্ষমতায় গেলেও তার দল বিকল্পধারা ও মহাজোটের তার কোন খোঁজ নেয়নি।