স্টাফ রিপোর্টার:
বিএনপির সরকারবিরোধী আন্দোলনসহ সব কর্মসূচি ব্যর্থ হয়েছে দাবি করে আন্দোলনকে ‘ভুয়া’ বলে আখ্যায়িত করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ ঐক্যবদ্ধ। কোনও বিরোধী শক্তি আর মাথা চাড়া দিয়ে উঠতে পারবে না। মাথা চাড়া উঠলে কঠোরভাবে দমন করা হবে।
বুধবার (১১ জানুয়ারি) রাজধানীর বঙ্গবন্ধু এভিনিউতে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগ আয়োজিত সমাবেশে বক্তব্য রাখতে গিয়ে এ কথা বলেন তিনি। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষে এই সমাবেশের আয়োজন করা হয়।
ওবায়দুল কাদের বলেন, পল্টনে মোটামুটি একটা সমাবেশ হয়েছে। ১২ দলীয় জোট দেখলাম বিজয় নগরে সমাবেশ করছে, সব মিলিয়ে ২৪ দল। ৭ দলীয় জোট প্রেসক্লাবের সামনে চেয়ার পেতে বসে আছে, মঞ্চে ২০ জন সামনে সাংবাদিকসহ আরও ১৫ জন। ১টা পর্যন্ত ৩ দল উপস্থিত ছিল, চার দল নেই। ৭ দলীয় ঐক্যজোট তারপর সমমনা ১২ দল বিএনপির সমমনারা দেখলাম। ঐ এলাকাজুড়েই (পল্টন) আছে।
‘তারা বসে আছে ফুটপাতের ওপর, মঞ্চও সেটা স্রোতাও সেখানেই, সবাই ফুটপাত-কেন্দ্রিক। তারপরে এলডিপি দেখলাম সেই দৃশ্যপট, কয়েকজন হাতেগোনা বসে আছে। ৫৪ দল আজকে একজন শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে। কী হবে? ঘোড়ার ডিম পাড়বে। ৫৪টা ঘোড়ার ডিম পাড়বে। ৫৪টি ঘোড়ার ডিম পাড়বে ৫৪টি বিরোধী রাজনৈতিক দল। ভুয়া…ভুয়া… ভুয়া… এটা গরুর হাট।’
বিএনপিকে বাংলার মাটিতে আর ক্ষমতায় আসতে দেওয়া যেতে পারে না মন্তব্য করে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, রাষ্ট্রকে মেরামত করবে? রাষ্ট্রকে আবার ক্ষমতা পেলে তারা ধ্বংস করবে। এই দেশের গণতন্ত্র বাঁচবে না, তারা ক্ষমতায় আসলে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাঁচবে না। তারা ক্ষমতায় আসলে স্বাধীনতার আদর্শ বাঁচবে না। তারা ক্ষমতায় আসলে গণতন্ত্রের বস্ত্রহানী ঘটবে। এই অপশক্তি জঙ্গিবাদের পৃষ্ঠপোষক, সাম্প্রদায়িকতার পৃষ্ঠপোষক।
‘বিএনপি নামক এই অপশক্তিকে বাংলার মাটিতে… এদের হাতে ক্ষমতা আমরা তুলে দিতে পারি না। বাংলাদেশের জনগণ শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ঐক্যবদ্ধ। কী দেখাবেন আপনারা? মুখে মিথ্যাচার আর বিষোদগার। আপনাদের নেই মেট্রোরেল, নেই পদ্মা সেতু, নেই বঙ্গবন্ধু টানেল; নেই উড়াল সেতু, নেই আন্ডার পাস, নেই এক দিনে শত সেতু, কে করেছে? শেখ হাসিনা।’
এ সময় গণমাধ্যমের সমালোচনা করে ওবায়দুল কাদের বলেন, আমাদের ঢাকা মহানগর দক্ষিণ এবং উত্তর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভা করছে। আমি কোন কোন অনলাইনে দেখলাম যে পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি দিয়েছে আওয়ামী লীগ। পাল্টাপাল্টি কেন? ১০ জানুয়ারি তো বিএনপির হৃদয়েও নেই, চেতনাতেও নেই। ১০ জানুয়ারি তারা করেনি।
‘গতকাল আমাদের কেন্দ্র করেছে, আজকে মহানগর এবং অন্যান্য সংগঠন করছে। এটা আমাদের কর্মসূচি, এখানে পাল্টাপাল্টির কোনও বিষয় নেই। কার সাথে পাল্টাপাল্টি করবো। কীসের পাল্টাপাল্টি করবো। ১০ ডিসেম্বর তো এই নগরীতে বিজয় মিছিল হবে। ১০ জানুয়ারি তো এমনও কথা ছিল তারেক রহমান এসে নেতৃত্ব দেবেন। ১০ ডিসেম্বর এমনও কথা ছিল, বেগম জিয়া জেল থেকে এসে বিজয় মিছিলের নেতৃত্ব দেবেন, সরকারের পতন অনিবার্য। কী হলো? ১০ ডিসেম্বর ভুয়া, ৩০ ডিসেম্বর ভুয়া।’
আওয়ামী লীগ সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বলেন, যারা স্বাধীনতাকে নিয়ে শেখ হাসিনার উন্নয়নকে নিয়ে ষড়যন্ত্র করবে তাদের রাজপথে দাঁতভাঙা জবাব দেওয়া হবে। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জনগণের ভোটের মাধ্যমে পঞ্চম বারের মত শেখ হাসিনাকে আবারও প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নির্বাচিত করবো।
সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য কামরুল ইসলাম বলেন, সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা সৃষ্টি করতে চেষ্টা করছে বিএনপি। তারা অনির্বাচিত সরকার চায়। তাদের প্রতিহত করা হবে।
সভাপতিমণ্ডলীর আরেক সদস্য আব্দুর রহমান বলেন, বাংলাদেশে কোনও অপশক্তির জায়গা হবে না। বিএনপির সঙ্গে দেশের জনগণ নেই, তাদের প্রত্যাখ্যান করেছে। বিএনপি হলো সাম্প্রদায়িক অপশক্তি।
বিএনপি নতুন করে আবার দেশে বিশৃঙ্খলা করার ষড়যন্ত্র করছে মন্তব্য করে আওয়ামী লীগ যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ বলেন, কোনও বিরোধী শক্তি বাংলাদেশে আর মাথা চাড়া দিয়ে উঠতে পারবে না। কেউ মাথা চাড়া উঠলে আমরা তাদের কঠোরভাবে দমন করবো।
‘বিএনপির লজ্জা থাকা উচিত, তারা কী করে আবার গণতন্ত্রের কথা বলে। এই স্বাধীন দেশে বিএনপি হলো সাম্প্রদায়িক দল। বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে এখন বাংলাদেশ ঘুরে দাঁড়িয়েছে। এখন আবার বিএনপি ষড়যন্ত্র শুরু করছে।’
যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক দীপু মনি বলেন, আজকে বাংলাদেশের যে অগ্রযাত্রা, সেই অগ্রযাত্রায় সারা বিশ্বে যখন প্রশংসায় পঞ্চমুখ; তখনই এই দেশে যারা স্বাধীনতার বিরোধিতা করেছেন যারা যুদ্ধাপরাধীদের দোসর, যারা ২০১৩-১৪-১৫ সালে অগ্নি-সন্ত্রাস করেছে, মানুষ হত্যা করেছে- সেই অপশক্তি আবারও মাঠে নেমেছে। আসুন আমরা সবাই জাতির পিতার সোনার বাংলার স্বপ্নকে বুকে নিয়ে বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে এই অগ্রযাত্রাকে অব্যাহত রাখতে অপশক্তিকে প্রতিহত করি। আজকে আমাদের এই প্রত্যয় হোক।