বিপিএলে ঢাকায় প্রথম পর্বে হয়েছে আট ম্যাচ। যেখানে স্থানীয় ব্যাটসম্যানের পারফরম্যান্স ছিল চোখে পড়ার মতো। বিশেষ করে সিলেট স্ট্রাইকার্সের তিন ব্যাটসম্যান তৌহিদ হৃদয়, নাজমুল হোসেন শান্ত ও জাকির হাসান মুগ্ধতা ছড়িয়ে নিজেদের সামর্থ্যের জানান দিয়েছেন ভালোভাবে।
শান্ত জাতীয় দলের নিয়মিত ক্রিকেটার। বিশ্বকাপে দলের প্রয়োজন মেটাতে না পারলেও রানের ধারাবাহিকতায় ছিলেন। বিপিএলেও হাসছে তার ব্যাট। জাকিরের সাদা পোশাকে অভিষেক হয়েছে, রঙিনেও কতটা কার্যকরী তা দেখিয়েছেন বিপিএল মঞ্চে। সবচেয়ে বেশি আলো ছড়িয়েছেন তৌহিদ হৃদয়। যুব বিশ্বকাজয়ী এ ক্রিকেটার এবার যেন ভিন্ন রূপে ধরা দিয়েছেন। টানা তিন ফিফটিতে নিজেকে নিয়ে গেছেন ভিন্ন উচ্চতায়। ৫৫ ও ৫৬ রানের পর গতকাল তার ব্যাট থেকে আসে ঝকঝকে ৮৪ রানের ইনিংস। সেটাও মাত্র ৪৬ বলে। তিনটি ম্যাচেই ম্যাচ সেরা। তিনটি ম্যাচেই চার ছক্কার ফুলঝুরি। স্থানীয় এ ব্যাটসম্যানদের ব্যাটিংয়ে বেশ উচ্ছ্বসিত বাংলাদেশের টি-টোয়েন্টি অধিনায়ক সাকিব আল হাসান।
ফরচুন বরিশালের অধিনায়ক নিজেও বিপিএলের শুরুটা করেছিলেন ৩২ বলে ৬৭ রানের ঝড়ো ইনিংসে। তবে নিজের পারফরম্যান্সের চেয়ে তরুণদের বিকশিত হতে দেখে বেশি খুশি বাংলাদেশের অধিনায়ক, ‘অনেকেই ভালো খেলছে, ধারাবাহিকভাবে আপনি যদি দেখেন শান্ত, জাকির, হৃদয় খুবই ভালো খেলছে এবং অন্য দলের খেলোয়াড়রাও ভালো করছে।’
৬৬ গড় ও ১৬৬ স্ট্রাইক রেটে ১৯৫ রান! সবশেষ ম্যাচে ৮৪ রানে আউট হয়েছেন হৃদয়। সিলেটের চার জয়ের তিনটিরই নায়ক এ ব্যাটসাম্যান। এছাড়া জাকির ব্যাটিং করছেন ১৭৫ স্ট্রাইক রেটে। যেখানে তার ইনিংসগুলো হচ্ছে এরকম- ২১ বলে ২৭, ১০ বলে ২০, ১৮ বলে ৪৩ রান। টি-টোয়েন্টিতে ছোট কিন্তু কার্যকরী ইনিংসগুলোই বড় পার্থক্য গড়ে দেয়। শান্ত ওপেনিংয়ে নেমে ৪৩, ৪৮, ১৯ ও ৫৭ রান করেছেন। একশরও বেশি তার স্ট্রাইকরেট। এছাড়া কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সে খেলা জাকের আলী অনিক এক ম্যাচে ৪৩ বলে ৫৭ রান তুলে নিজের সামর্থ্যের জানান দিয়েছেন।
ভালো মানের উইকেট পাওয়ায় তরুণরা শট খেলতে আত্মবিশ্বাসী হচ্ছেন। এ সুযোগগুলো কাজে লাগানোয় খুশি সাকিব, ‘সব থেকে ভালো দিক হচ্ছে স্থানীয় ব্যাটসম্যানরা এবার ভালো রান করছে, যেটা আমাদের জন্য খুবই ভালো একটা দিক। অনেক কৃতিত্ব দিতে হয় পিচ কিউরেটর গামিনি ডি সিলভাকে, কারণ পিচগুলো ভালো পাওয়া যাচ্ছে, এ কারণে আমার মনে হয় দেশীয় ব্যাটসম্যানরা রান করার সুযোগটা বাড়ছে এবং তারা সেটাকে পুঁজি করছে, সে দিক থেকে অবশ্য ভালো একটা বিষয়।’
ঢাকায় একই ম্যাচে দুটি সেঞ্চুরি হাঁকিয়েছেন আজম খান ও উসমান খান। দুজনই পাকিস্তানি। বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানরাও দ্রুত সেঞ্চুরি পেয়ে যাবে বলে বিশ্বাস সাকিবের, ‘আগে ৩০-৪০ হতো, এখন ৭০ হচ্ছে, এরপর ওটাও শিখে যাবে কীভাবে ১০০ করতে হয়।’
ব্যাটসম্যানদের ইতিবাচক পারফরম্যান্সের ভিড়ে বোলাররা আড়াল হয়ে যাচ্ছেন। এমন উইকেটে বোলারদের সফল হওয়ার পথ খুঁজতে বললেন সাকিব।