চাল, ডাল, তেল, চিনি, ডিম, মুরগি ও ওষুধসহ সব পণ্যের মূল্যবৃদ্ধিতে জনজীবনে হাহাকার। দেশের ৪২ শতাংশ অর্থাৎ প্রায় ৪ কোটি মানুষ দারিদ্র্যসীমার নিচে বাস করছেন। অথচ, সরকার দলীয় লোকজন হাজার কোটি টাকা লোপাট করে বিদেশে পাচার করেছে।
মঙ্গলবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে রাজধানীর গুলশানে বিএনপির চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
বিদ্যুৎ নিয়ে ভারতের আদানি গ্রুপের সঙ্গে বাংলাদেশের হওয়া চুক্তি অপ্রয়োজনীয় ও অসম বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
তিনি বলেন, এই যে বিদ্যুৎ নিয়ে আদানি গ্রুপের সঙ্গে একটা চুক্তি হয়েছে। সেই চুক্তি নিয়ে দেশি-বিদেশি বিশ্লেষকরা বলছেন, এটা একটা অপ্রয়োজনীয় ও অসম চুক্তি। যেখানে বাংলাদেশ শুধু পয়সা দিয়ে যাবে। কোনো লাভ পাবে না।
‘দেশে মূল্যস্ফীতি, ডলার সঙ্কট, ব্যাংকিং সেক্টরে চরম নৈরাজ্য, ঋণ খেলাপি হচ্ছে। ১৫ থেকে ১৬ বিলিয়ন ডলার পাচার করা হয়েছে; যার বেশিরভাগই করা হয়েছে হুন্ডির মাধ্যমে। অথচ, ডলার সঙ্কটের কারণে তেল, গম, চাল, চিনি, ওষুধের কাঁচামালসহ অনেক নিত্যপণ্য আমদানি করা যাচ্ছে না’।
মির্জা ফখরুল বলেন, গত ৬ বছরে সরকারের বিদেশি ঋণের পরিমাণ বেড়েছে প্রায় দ্বিগুণ। অথচ, সরকার নানা ধরনের আর্থিক চুক্তি করছে, যার কুফল ভোগ করছে সাধারণ জনগণ। সরকার গত ১০ বছরে বিদ্যুৎ খাতে দলীয় ব্যবসায়ীদের ৯০ হাজার কোটি টাকা পাইয়ে দিয়েছে।
গত ২ মাসে সরকার ৫০ হাজার কোটি টাকা নতুন করে ছাপিয়েছে, উল্লেখ করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, প্রতি মাসে ১ বিলিয়ন ডলার রিজার্ভ পতন হচ্ছে। টাকার মূল্যমান চরম কমেছে। অথচ, সরকার দলীয় লোকজন বিভিন্ন দেশে টাকা পাচার করে গাড়ি-বাড়ি করছে।
ওবায়দুল কাদেরের কথার প্রসঙ্গ ধরে মির্জা ফখরুল বলেন, তিনি বলেছেন দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির দায় নাকি বিএনপির। তার পরিপ্রেক্ষিতে আমরা স্পষ্ট বলতে চাই, দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির দায় পুরোটাই বর্তমান সরকারের। এর মধ্যে কোনোভাবেই বিএনপির কোনো দায় নেই। আওয়ামী সিন্ডিকেটের কারণেই এ দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি, বাজারে অস্থিরতা এবং সাধারণ মানুষের জীবনে হাহাকার।
সবশেষে বিএনপি মহাসচিব বলেন, বর্তমান সরকার সম্পূর্ণ লুটপাট করে দেশের অর্থনীতিকে ধ্বংস করে দিয়েছে। মোটকথা, এই সরকার যেহেতু জনগণের ভোটে নির্বাচিত নয়, তাই জনগণের প্রতি তাদের কোনো দায়বদ্ধতা নেই। তাই তারা লাগামহীন দুর্নীতি করেই যাচ্ছে।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে মির্জা ফখরুল বলেন, আমরা পরিপূর্ণভাবে দেশনেত্রী খালেদা জিয়ার মুক্তি চাই। তিনি মুক্ত হবার পরই তার রাজনীতি করা বা না করার প্রশ্ন।
সংবাদ সম্মেলনে আরও—উপস্থিত ছিলেন বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ইসমাইল জবিউল্লাহ এবং বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক ও ভারপ্রাপ্ত দপ্তর সম্পাদক সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স।