নিউজ ডেস্ক:
মানুষ সুখ প্রত্যাশী, সবাই সুখী হতে চায়। তারপরও অনেকেই সুখের নাগাল খুঁজে পান না। মানুষের এই চাওয়াকে গুরুত্ব দিয়ে প্রতিবছর ২০ মার্চ আন্তর্জাতিক সুখ দিবস পালনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে জাতিসংঘ।
২০১২ সালের ২৮ জুন জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের এক অধিবেশনে এই সিদ্ধান্তটি নেওয়া হয়। অধিবেশনে জাতিসংঘের ১৯৩টি দেশের প্রতিনিধিরা দিবসটিকে স্বীকৃতি দেন। এরপর থেকে প্রতিবছর বিশ্বের একাধিক দেশ নানা আয়োজনে দিনটি পালন করে আসছে।
জাতিসংঘ সাধারণ অধিবেশনের প্রস্তাবে বলা হয়, মানুষের জীবনের মূল উদ্দেশ্য সুখে থাকা। ভারসাম্যপূর্ণ অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির মাধ্যমে টেকসই উন্নয়ন, দারিদ্র্য দূরীকরণসহ পৃথিবীর প্রতিটি মানুষের সুখ-সমৃদ্ধি নিশ্চিতে দিবসটি পালন করা হবে। এ ছাড়া সদস্যভুক্ত দেশগুলোর ওপর পূর্ণ এক বছর জরিপ পরিচালনা করে এই দিবসে সুখী দেশের তালিকা প্রকাশ করে থাকে জাতিসংঘ।
দিবসটির প্রতিষ্ঠাতা জাতিসংঘের উপদেষ্টা এবং শান্তি ও নিরাপত্তা অর্থনীতিবিদদের প্রতিনিধি জেম এলিয়েন। তবে আন্তর্জাতিক সুখ দিবস প্রচলনের প্রচারটি শুরু হয় মূলত আমাদের প্রতিবেশী দেশ ভুটানের হাত ধরে। দেশটিতে ইতিমধ্যে সুখ-সূচকের ভিত্তিতে জাতীয় সমৃদ্ধির পরিমাপের প্রচলন করা হয়েছে। তারা জাতিসংঘের কাছে বছরের একটি দিন সুখ দিবস হিসেবে পালনের আহ্বান জানায়। এই প্রস্তাবের পরিপ্রেক্ষিতে জাতিসংঘের পক্ষ থেকে ‘আন্তর্জাতিক সুখ দিবস’ পালনের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়।
সুখী হওয়াটা এমন একটা ব্যাপার নয় যে, এটা এমনি এমনি ঘটে গেল। আপনাকে এজন্য অভ্যাস করে করে দক্ষ হয়ে উঠতে হবে- বলেছেন, লুরি স্যান্তোস নামে মনোবিদ্যার একজন অধ্যাপক। মনোবিদ্যার এই নারী অধ্যাপক সুখী হওয়ার কিছু গুরুত্বপূর্ণ টিপস দিয়েছেন। বিবিসি সংবাদমাধ্যমে তা অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে প্রকাশ করা হয়েছে। স্যান্তোস যে বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ান তার নাম ইয়েল বিশ্ববিদ্যালয়। ইয়েলের ৩ শতকের ইতিহাসে তার ক্লাস ‘মনোবিদ্যা এবং সুখী জীবন’ হচ্ছে সবচেয়ে জনপ্রিয় কোর্স, যেখানে বিশ্ববিদ্যালয়ের তালিকাভুক্তির রেকর্ড ভেঙে ১২০০ শিক্ষার্থী নিজেদের নাম লিখিয়েছেন।
স্যান্তোস বলেন, খারাপ লাগা বা দুঃখের বিষয়গুলোকে ভুলে যেতে হবে। সুখী হতে হলে অব্যাহতভাবে চেষ্টা করে যেতে হবে। এটা সহজ কাজ নয়, সেজন্য সময় দরকার। তবে এটা করা সম্ভব।
অধ্যাপক স্যান্তোসের সেরা পাঁচটি পরামর্শ তুলে ধরা হলো, যা অনুসরণ করার জন্য তিনি বলে থাকেন।
১. প্রাপ্তির একটি তালিকা করুন। অপ্রাপ্তির কথা না ভেবে জীবনের প্রাপ্তির জন্য ধন্যবাদ জানান এবং কৃতজ্ঞ হোন।
২. বেশি ঘুমান আর ভালো থাকুন। যিনি নিয়মিত পরিপূর্ণ বিশ্রাম পান, তার মন ভালো থাকে।
৩. ধ্যান করুন। কোন স্পা-তে যাওয়ার দরকার নেই, ঘরের কোন নীরব কোণে প্রতিদিন অন্তত ১০ মিনিট ধ্যান করুন।
৪. পরিবার ও বন্ধুদের সঙ্গে আরো বেশি সময় কাটান। প্রিয় মানুষদের সঙ্গে কিছু একান্ত সময় কাটান।
৫. সামাজিক মাধ্যমে কম সময় দিন আর বাস্তব যোগাযোগ বাড়ান। ফোনকে দূরে সরিয়ে রেখে শারীরিকভাবে সক্রিয় হোন।
অর্থাৎ আপনি যদি জীবনে সত্যিই সুখী হতে চান, তাহলে প্রাপ্তির হিসাব দিয়ে শুরু করুন। রাতে চমৎকার একটি ঘুম দিন। মনকে বিক্ষিপ্ত অবস্থা থেকে সরিয়ে মনোযোগী করুন। যেসব মানুষকে পছন্দ করেন, তাদের সঙ্গে বেশি সময় কাটান আর সামাজিক মাধ্যম থেকে কিছুদিন বিরতি নিন।