স্টাফ রিপোর্টার
মানিকগঞ্জের ঘিওরে অগ্নিদগ্ধ হয়ে গুরুতর আহত এক হত-দরিদ্র সালমা বেগম(২৫)এর চিকিৎসার দায়িত্ব নিলেন মানিকগঞ্জ-১ আসনের সংসদ সদস্য এএম নাঈমুর রহমান দুর্জয় এমপি।
সালমা ঘিওর উপজেলার আশাপুর গ্রামের আব্দুল মজিদ মিয়ার পুত্র দিন মজুর রুবেলের স্ত্রী।
শনিবার রাতে এমপি দুর্জয়ের পক্ষে তার সহধর্মীনি ফারহানা রহমান হ্যাপী অগ্নিদগ্ধ সালমাকে দেখতে যান তার গ্রামের বাড়ি ঘিওরের গোলামনগর গ্রামে।
এসময় তিনি অগ্নিদগ্ধ সালমার সাথে কথা বলেন ও পরিবারের খোজ- খবর নেন এবং তাকে উন্নত চিকিৎসার মাধ্যমে দ্রুত সুস্থ্য করার দায়িত্বভার গ্রহন করেন। পরে এমপি পত্নী সালমার পরিবারের নিকট তার চিকিৎসা বাবদ নগদ ত্রিশ হাজার টাকা তুলে দেন এবং জরুরী ভিত্তিতে রোগীকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ণ ইউনিটে ভর্তি করার পরামর্শ দেন।
এসময় উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক আব্দুল আলীম মিন্টু,যুগ্ম-সাধারন সম্পাদক আতোয়ার রহমান,উপজেলা পরিষদের মহিলা ভাইস-চেয়ারম্যান জ্যোৎস্না শিকদার, ইউপি চেয়ারম্যান অহিদুল ইসলাম টুটুল,উপজেলা যুবলীগের আহবায়ক বাবুল বেপারীসহ আ’লীগ ও এর সকল সহযোগী সংগঠনের নেতৃস্থানীয় ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য গত ৬ ফেব্রুয়ারী বুধবার সকালে নিজ বাড়িতে মাটির চুলায় রান্না করতে গিয়ে নিজের অজান্তেই পরনের কাপড়ে আগুন লেগে অগ্নিদগ্ধ হয় এক সন্তানের জননী ও ৩ মাসের অন্ত:স্বত্তা সালমা বেগম।
গুরুত্বর অবস্থায় তাকে স্থানীয় স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করার পর অবস্থা অবনতি হলে জরুরী ভিত্তিতে তাকে মানিকগঞ্জ সদর হাসপাতালে প্রেরন করে। এসময় কর্তব্যরত ডাক্তার উন্নত চিকিৎসার জন্য সালামকে তাৎক্ষনিকভাবে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে স্থানান্তর করেন।
চিকিৎসরা জানান, সালমার শরীরের দুই-তৃতীয়াংশ অগ্নিদগ্ধ হওয়ায় সেরে উঠতে বেশ কিছু সময় প্রয়োজন। তবে তার গর্ভে সন্তানের নিরাপত্তার বিষয়টি নিশ্চিত করতে পারেনি তারা।
এদিকে, বার্ন ইউনিটে চিকিৎসা ব্যয়বহুল হওয়ায় হতাশা হয়ে পড়েন ওই রোগীর পরিবার। টাকার অভাবে ৫ দিন পর বাড়ীতে ফিরতে হয় সালমাকে।
এ ব্যাপারে মানবিক আবেদনময় “টাকার অভাবে চিকিৎসা হচ্ছেনা সালমার” শিরোনামে ’ ব্রেকিং নিউজে সংবাদ প্রকাশের পর স্থানীয় সংসদ সদস্য এএম নাঈমুর রহমান দূর্জয় সালমার চিকিৎসার যাবতীয় দায়িত্ব নেয়া হয়।
এছাড়াও মানিকগঞ্জের ২৫ জন ছাত্র-যুবকের সম্মিলিত উদ্যোগে অগ্নিদগ্ধ ওই নারীর চিকিৎসা সেবার জন্য হেল্প ডেক্স নিয়ে শহরের পথে প্রান্তরে আর্থিক সহায়তা সংগ্রহ করেছে। প্রথম দিনে প্রায় দশ হাজার টাকা সংগ্রহ করে ওই নারীর বাড়িতে তার স্বজনদের হাতে তুলে দেন। যুবকদের এই মহতি কাজকে সাধুবাদ জানিয়েছেন সবাই।
সালমার ভাই আলামিন মিয়া জানান, আমরা দরিদ্র মানুষ টাকার অভাবে চিকিৎসা না করিয়ে সালমাকে ঢাকা মেডিক্যাল থেকে বাড়ি নিয়ে আসি। পুণরায় চিকিৎসার জন্য সালমাকে ঢাকা নিয়ে যাবো সে টাকাও আমাদের কাছে নেই। এমতবস্থায় এমপি সাহেব আমার বোনের চিকিৎসার দায়িত্ব নেওয়ায় আমরা তার কাছে চির কৃতজ্ঞ। এদিকে বার্ন ইউনিটের প্রধান সম্বয়কারী সামান্ত লাল সেন সালমার এই অবস্থা জানতে পেরে তাকে আবার ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যেতে বলেন। তার আশ্বাসে এবং এমপি সাহেবের সহযোগীতায় আজ রবিবার সালমাকে আবার ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।