নিউজ ডেস্ক:
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যার হুমকি দেওয়ার মামলায় গ্রেপ্তার আবু সাঈদ চাঁদকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আবারও তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।
পাঁচ দিনের রিমান্ড শেষে মঙ্গলবার (৩০ মে) দুপুরে রাজশাহী জেলা বিএনপির আহ্বায়ক চাঁদকে আদালতে তোলে পুলিশ।
এ সময় তাকে আরও জিজ্ঞাসাবাদের প্রয়োজন জানিয়ে ফের ১০ দিনের রিমান্ডের আবেদন করে পুলিশ। পরে রাজশাহীর জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের (৪) বিচারক মাহবুব আলম তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
রাজশাহী জেলা পুলিশের কোর্ট পরিদর্শক পরিমল কুমার এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, পাঁচ দিনের রিমান্ড শেষে বিএনপি নেতা আবু সাঈদ চাঁদকে আজ দুপুরে আদালতে হাজির করা হয়। এরপর আরও জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ১০ দিনের রিমান্ডের আবেদন করা হয়। তবে শুনানি শেষে আদালত তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। মামলাটি বর্তমানে জেলা গোয়েন্দা শাখা (ডিবি) পুলিশ তদন্ত করছে। তাই জেলা ডিবি পুলিশই বিএনপি নেতা চাঁদকে জিজ্ঞাসাবাদ করবে বলেও উল্লেখ করেন এই পুলিশ কর্মকর্তা।
গত ২৫ মে (বৃহস্পতিবার) বেলা ১১টার দিকে নগরীর ভেড়িপাড়া মোড় থেকে বিএনপি নেতা আবু সাঈদ চাঁদকে গ্রেপ্তার করে রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশ (আরএমপি)। এরপর প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ শেষে বিকেলে তাকে এই আদালতে হাজির করে পুলিশ। এর আগে চাঁদকে রাজশাহীর পুঠিয়া থানায় দায়ের করা প্রথম মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়।
পুঠিয়ার শিবপুরে বিএনপির বিক্ষোভ সমাবেশ থেকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যার হুমকি দেওয়ার অভিযোগে আবু সাঈদ চাঁদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছিল গত ২১ মে রাতে। স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা আবুল কালাম আজাদ বাদী হয়ে সন্ত্রাস দমন আইনে পুঠিয়া থানায় এই মামলাটি দায়ের করেছিলেন।
প্রথমবার এই মামলায় আদালতে ১০ দিনের রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন করেন আগের তদন্ত কর্মকর্তা পুঠিয়া থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) সুজন আলী। পরে তাকে পাঁচ দিনের রিমান্ডে পাঠায় আদালত। তবে পুঠিয়া থানায় চাঁদের বিরুদ্ধে দায়ের করা সন্ত্রাস দমন আইনের মামলাটি বৃহস্পতিবার দুপুরেই পুঠিয়া থানা থেকে জেলা গোয়েন্দা শাখা পুলিশে স্থানান্তর করা হয়। জেলা ডিবি পুলিশ পরিদর্শক আতিকুর রেজা সরকারকে মামলার নতুন তদন্ত কর্মকর্তা নিযুক্ত করা হয়েছে। ওই রিমান্ড শেষ হওয়ার পর মঙ্গলবার আবারও তাকে আদালতে তোলা হয়৷ তবে আজ তিনদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত।
এর আগে গত শুক্রবার (১৯ মে) রাজশাহীর পুঠিয়ার শিবপুরে বিএনপির বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। ওই সমাবেশে প্রধান অতিথি ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সেলিমা রহমান। সমাবেশ শেষে সভাপতির বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রীকে ‘কবরস্থানে’ পাঠানোর হুমকি দেন জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আবু সাইদ চাঁদ।
তার এই বক্তব্যের ভিডিও পরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হলে রাজশাহীসহ দেশজুড়ে প্রতিবাদের ঝড় ওঠে। চাঁদকে যেখানে পাওয়া যাবে সেখানেই গণধোলাইয়ের ঘোষণা দেন আওয়ামী লীগের কর্মী ও সমর্থকরা। রাজশাহীতে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করে তার কুশপুতুল দাহ করা হয়।
বিএনপির বিক্ষোভ সমাবেশ থেকে রাজশাহী জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আবু সাঈদ চাঁদ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে কবরস্থানে পাঠানোর হুমকির ঘটনায় তার বিরুদ্ধে সন্ত্রাস দমন আইনে পুঠিয়া থানায় প্রথম মামলা হয়।
তবে এর আগেও বিএনপি নেতা আবু সাঈদ চাঁদ প্রধানমন্ত্রীকে নিয়ে কটূক্তি করেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে কটূক্তির অভিযোগে গত বছরের ২৬ জুলাই রাজশাহী জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আবু সাঈদ ওরফে চাঁদের বিরুদ্ধে মানহানির মামলা হয়েছিল। ওই মামলায় জামিনে ছিলেন এই বিএনপি নেতা।