হাসান শিকদার,বিশেষ প্রতিবেদক:
রাজধানী ঢাকার পাশাপাশি পার্শবর্তী জেলা মানিকগঞ্জের বিভিন্ন স্থানে বিক্রি হচ্ছে অত্যন্ত সুস্বাদু তালের শাঁস। ভ্রাম্যমাণ দোকান বসিয়ে এই তালের শাঁস বিক্রি করছেন ব্যবসায়ীরা। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে অল্প টাকায় তালের শাঁস ক্রয় করে বেশি দামে বিক্রি করছেন ব্যবসায়ীরা।
গাছের মালিকরা ভালো দাম পাওয়ায় পাকার আগেই গাছ থেকে তাল বিক্রি করে দিচ্ছেন। তালগাছ মালিকদের সাথে কথা বলে জানা যায়, এক সময় তালের শাঁসের চাহিদা খুবই কম ছিলো তাই অধিকাংশ ক্ষেত্রেই গাছেই তাল পেকে যেতো আর সকলে পাকা তালই বেশি খেতেন। কিন্তু বেশ ভালো মূল্য পাওয়ায় বর্তমানে অধিকাংশ গাছ মালিকরা তালের শাঁস আগেই বিভিন্ন ব্যবসায়ীদের কাছে বিক্রি করে দিচ্ছে। ফলে পাকা তালের অভাবে বীজ সংকটে পড়ে তাল গাছের বংশ বৃদ্ধি ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কা করছেন বৃক্ষপ্রেমীরা।
মানিকগঞ্জেের বিভিন্ন হাট-বাজার, বাসস্ট্যান্ড বিভিন্নস্থানে ভ্রাম্যমান দোকান নিয়ে বসছেন ব্যবসায়ীরা তালের শাঁস বিক্রি করতে ।
শিবালয় উপজেলার তেওতা এলাকার এক তালের শাস ব্যবসায়ী হায়দার আলী জানান, প্রথম দিকে তালের শাঁস ছিল ৬ টাকা এখন দশ টাকা। আমাদের এলাকায় তেমন তাল গাছ নেই, যা আছে সেই সকল তাল গাছের তাল এক সাপ্তাহে বিক্রি হয়ে গেছে।
সদর উপজেলায় অসংখ্য দোকান রয়েছে যারা এখন হরিরামপুর ও দৌলতপুর অঞ্চল থেকে পাইকারি তাল কিনে আনা হয়।
মানিকগঞ্জের বালিয়াখোড়া ইউনিয়নের বাসিন্দা মোঃ রনি, ফাহিম শিকদার জানান, এক সময় তালের বিভিন্ন পিঠা, পাকা তালের রস দিয়ে সকার নাস্তা রুটি খেতাম। মানুষের প্রয়োজনে সবরকম গাছের সাথে তাল গাছ কেটে ফেলেছে,এখন আগের মতো তাল পাওয়া যায় না। এখন তালের শাঁস খেতে পারছি। কিছুদিন পর হয়তো এটিও আর খেতে পারবো কিনা সন্দেহ আছে।
মানিকগঞ্জ বাস স্ট্যান্ড ও শহরের বিভিন্ন এলাকায় ভ্রাম্যমান তালের শাঁস বিক্রেতারা জানান, দৈনিক ৪’শ থেকে ৫’শ তালের শাঁস বিক্রি করি। প্রতি পিস শাস২০ টাকা করে, বেশি নিলে ১০-২০ টাকা কম রাখি।
তাল গাছের বংশবৃদ্ধি কমে যাওয়া রোধের বিষয়ে বেসরকারি গবেষণা সংস্থা বারসিক এর আঞ্চলিল সমন্বয়কারী বিমল রায় বলেন:’ তালের শাঁস আমাদের শরীরের জন্য যেমন উপকারী তেমনি অধিকাহারে তালের শাঁস বিক্রির ফলে পরিবেশের মারাত্মক বিপর্যয় হতে পারে তাই প্রতিটি তাল গাছের অন্তত একটি বাধি রেখে দেওয়া উচিত।যে বাধির তাল পাকার পরে তালগাছের বংশবৃদ্ধিতে কাজে লাগবে। এ বিষয়ে তালগাছ মালিকদের সহ সকলকে আরও বেশি সচেতন হতে হবে।
উল্লেখ্য, বজ্রপাত জনিত মৃত্যুর হার কমানোর প্রধান সহায়ক হল তালগাছ। কিন্তু অধিক পরিমান তালের শাঁস বিক্রি ও খাবার হিসেবে গ্রহনের ফলে দিন দিন পাকা তালের সংখ্যা কমে যাচ্ছে। ফলে তালের বংশবৃদ্ধিও হুমকির মুখে পড়েছে।