স্টাফ রিপোর্টার:
ডেঙ্গু থেকে যেমন মানুষ নিরাপদ নয়, তেমনই বিএনপি থেকে দেশ নিরাপদ নয় বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেছেন, ‘ডেঙ্গুর চেয়েও ভয়ঙ্কর বিএনপি থেকে সাবধান থাকতে হবে।’
শনিবার (১৯ আগস্ট) রাজধানীর রবীন্দ্র সরোবরে ডেঙ্গু প্রতিরোধে জনসচেতনতা কর্মসূচি অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন তিনি। আওয়ামী লীগের স্বাস্থ্য ও জনসংখ্যাবিষয়ক উপ-কমিটি এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘মানুষ ডেঙ্গুর হাতে নিরাপদ নয়। বাংলাদেশে গণতন্ত্র বিএনপির হাতে নিরাপদ নয়। আজকে ডেঙ্গু চেয়েও ভয়ঙ্কর বিএনপি থেকে সাবধান থাকতে হবে।’
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ শুধু কর্মসূচি পালন করে না। মানুষের প্রতি দায়িত্ববোধ থেকে আমাদেরকে এগিয়ে আসতে হয়। আমাদের বাঁচতে হলে ডেঙ্গু বিরুদ্ধে লড়াই করতে হবে। শুধু রাজনীতি করলে হবে না। মানুষকে বাঁচানোর রাজনীতি সবার আগে।
ডেঙ্গুবিরোধী অভিযান আরও জোরদার করা উচিত, উল্লেখ করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘আজকে চারদিক থেকেই বিপদ। নানা রকম বিপদ। আমাদেরকে হুমকি দিচ্ছে।’
ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আমরা এ সম্পর্কে কোনো কথা বলতে চাই না। ভারত আমাদের পরীক্ষিত বন্ধু। ১৯৭৫ সালে আমরা ক্ষমতা হারিয়েছি, তখন তো ভারত আমাদের ক্ষমতায় বসিয়ে দেয়নি। ২০০১ সালে আমাদের ক্ষমতা চলে গেছে, জনগণ চাইলে আমরা ক্ষমতা থেকে চলে গেছি। ভারত বা কোনো বিদেশি শক্তি কাউকে ক্ষমতায় বসাবে, ক্ষমতাচ্যুত করবে; যারা গণতন্ত্র বিশ্বাস করে, তাদের এ মন্তব্য করা অশোভন।’
তিনি বলেন, যারা ভারতের হস্তক্ষেপ বলেন, তাহলে একাত্তর সালে কী হয়েছিল? ভারত আমাদের সাহায্যে এগিয়ে এসেছিল, তাদের সৈন্যরা রক্ত দিয়েছে, আমাদের শরণার্থীদের আশ্রয় দিয়েছে, অস্ত্র দিয়েছে, ট্রেনিং দিয়েছে, সেটা কি অভ্যন্তরীণ ব্যাপারে হস্তক্ষেপ নয়?
সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী বলেন, ভারতের ভূখণ্ডে গিয়ে জিয়াউর রহমান মুক্তিযোদ্ধা হয়েছিলেন, সেটা কার হস্তক্ষেপ? অভিন্ন ইস্যু, আজকে আঞ্চলিক রাজনীতিতে ভারত ও আমেরিকার এই ভূখণ্ডে অভিন্ন স্বার্থ আছে। অভিন্ন স্বার্থের বিষয়ে তারা একে অন্যকে স্মরণ করিয়ে দিতে পারেন।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, আমাদের বসাবে বাংলাদেশের জনগণ। বিএনপি তাকিয়ে আছে শুধুমাত্র আমেরিকার দিকে। কখন নিষেধাজ্ঞে আসবে, কখন ভিসানীতি আসবে। ভিসানীতি আর নিষেধাজ্ঞার কথা ভেবে ভেবে আটলান্টিকের ওপারে তাকাতে তাকাতে চোখের পাওয়ার কমে গেছে। এখন আর তাকিয়ে কিছু দেখতে পায় না। কেন ভিসানীতি আসে না? কেন নিষেধাজ্ঞা দেয় না? এসব চিন্তা করে করে ফখরুলের রাতের ঘুম হারাম হয়ে গেছে। ওসব বিষয় নিয়ে আমরা মাথা ঘামাই না। আমরা পাবলিকের দিকে তাকিয়ে আছি। আমাদের পাবলিক ক্ষমতা রাখলে আমরা থাকব। পাবলিক না রাখলে আমরা চলে যাব।
ওবায়দুল কাদের বলেন, বিদেশে পাচার করা অর্থ নিয়ে চিন্তায় নাকি আমরা বিভোর। বিদেশে অর্থ পাচার কারা করেছে, সেটা ধরা পড়ে গেছে, এফবিআই সাক্ষ্য দিয়েছে। মামলায় দণ্ডিত তাদের নেতা বিদেশের পালিয়ে গেছে। কথায় কথায় পলায়নের কথা বলে ফখরুল এবং মির্জা আব্বাস। লজ্জা করে না? আপনাদের দলের এখন যিনি ভারপ্রাপ্ত প্রধান, তিনি তো দণ্ডিত পলাতক। পলাতক নেতাই হলো আপনাদের তারেক রহমান। আমরা পালাবো কেন? কোথায় পালাবো? আমরা কোথাও পালাবো না। পালিয়েছেন আপনারা, ওই কথার জবাব দেন।
তিনি বলেন, তারেক রহমানের কেন সৎ সাহস নেই, দেশে এসে আন্দোলনে করে আপনাদের এক দফার বাণী প্রচার করতে? এই কাপুরুষ, এই ভীরু, পলাতক নেতার নেতৃত্বে রিমোট কন্ট্রোলে আন্দোলন বাস্তবায়িত হয়নি, রিমোট কন্ট্রোল আন্দোলন বাংলাদেশ হয় না।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে জনসচেতনতা অনুষ্ঠানে ডা. প্রাণ গোপালের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর কবির নানক, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, স্বাস্থ্য ও জনসংখ্যাবিষয়ক সম্পাদক ডা. রোকেয়া সুলতানা, ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ বজলুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক এস এম মান্নান কচি, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবির।