1. hasanchy52@gmail.com : admin :
  2. amarnews16@gmail.com : Akram Hossain : Akram Hossain
শুক্রবার, ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ০৮:৪৪ অপরাহ্ন

হরিরামপুরে ভাইরাসজনিত রোগে মরছে গরু, দুঃশ্চিন্তায় খামারীরা

  • প্রকাশের সময় : রবিবার, ২০ আগস্ট, ২০২৩
  • ১৩৯ বার দেখা হয়েছে

স্টাফ রিপোর্টার:মানিকগঞ্জের হরিরামপুর উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় বাড়ছে ল্যাম্পিং স্ক্রিন ডিজিজ (এলএসডি) রোগে আক্রান্ত গরুর সংখ্যা। খামারিদের আঞ্চলিক ভাষায় গুটি রোগ হিসেবে ধারণা তাদের, তবে প্রাণীসম্পদ কর্মকর্তারা বলছেন, এটা ভাইরাস জনিত রোগ। ভাইরাসজনিত এই রোগ ইতিমধ্যে গ্রামে গ্রামে ছড়িয়ে পড়েছে। ফলে হতাশা আর দুশ্চিন্তায় রয়েছেন খামারিরা। ইতিমধ্যে ব্যপক ক্ষতিও হয়েছে অনেকের। খামারিদের অভিযোগ, ডেকেও তাদের দুঃসময়ে পাওয়া যায় না। অতিরিক্ত অর্থ আদায় করার অভিযোগ রয়েছে উপজেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিরুদ্ধে।

উপজেলা প্রাণীসম্পদ দপ্তরের কর্মকর্তা ও খামারিদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, এই রোগটি গ্রীষ্মের শেষ ও বর্ষার শুরুতে মশা-মাছি বিস্তারের সময় ব্যপক আকার ধারণ করে। মশা মাছি ও খাবারের মাধ্যমে এক গরু থেকে অন্য গরুতে রোগ ছড়ায়। টিকার মাধ্যমে গরুকে রক্ষা করা সম্ভব। এ রোগের লক্ষন, গরুর শরীরের চামড়ার বিভিন্ন স্থানে ছোট ছোট গুটি উঠে, অনেকটা আচিলের মত, গরুর শরীর প্রচুর গরম হয়, চামড়া ফুলে গুটি গুটি ক্ষতের সৃষ্টি হয়, পা এবং ঘাড়ে বেশি ওঠে, চোখ দিয়ে পানি পরে, এক সময় খাওয়া দাওয়া বন্ধ করে মারাও যেতে পারে। এমতাবস্থায় গরুকে মশারির ভেতর রেখে চিকিৎসা করার পরামর্শ দিয়েছেন চিকিৎসকরা।

দড়িকান্দি গ্রামের খামারি মোঃ সিকান্দার জানান, আমার ৬ টা গরুর মধ্যে বর্তমানে তিনটার অবস্থা খুবই খারাপ। পশু হাসপাতালের কর্মকর্তারা গত দশ বারোদিন পুর্বে এসে ১৫০০ টাকার বিনিময়ে ইনজেকশন দিছে, এরপর প্রেসক্রিপশন লিখে দিছে, মশারির ভেতর রেখে চিকিৎসা করে যাচ্ছি, এখন পর্যন্ত অবস্থার অবনতি ছারা উন্নতি হয়নি।

খালপাড় বয়ড়া গ্রামের খামারি মোঃ মজলিশ জানান, আমার ১১ মাসের ষাঁড় বাছুরটি মাসখানেক পূর্বে হঠাৎ পুরো শরীর জুড়ে গুটি উঠে, সাথে জ্বর আর ঠান্ডায় গরুটি অসুস্থ্য হয়ে পরে। পশু হাসপাতালে ২ দিন নিয়ে দেখাইছি, তারা গরুকে সুই দিয়ে দিছে, কিছু ঔষুধ দিয়ে বলছে- সেরে যাবে। সাথে আরও বলে, এই রোগের চিকিৎসা নাই, আর টাকা চায়। টাকা না দিলে আসতেও চায় না। পরে তাদের অবহেলার কারণে প্রাইভেট চিকিৎসা দিয়েও গরুটি রক্ষা করতে পারলাম না। মারাই গেলো।

দড়িকান্দি গ্রামের খামারি নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জানান, আমার গরুটির বয়স প্রায় এক বছর। গত দেড়মাস আগে হঠাৎ একদিন দেখি গরুর পুরো শরীরে গোটাজাতীয় কি যেন উঠছে, সাথে প্রচুর জ্বর। কয়েকদিনপর গরু খাওয়া দাওয়া বন্ধ করে দেয়। রোগ হওয়ার ১৫ দিনের মধ্যে আমার গরুটি মারা যায়। প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তাদের হাতে পায়ে ধরে, জোর করে আনতে হয়। পশু হাসপাতাল থেকে কোন ঔষুধ তো দেয় ই না, তারা দেখতে আসলে উল্টো তাদের ভিজিট দেয়া লাগে। পুরো এলাকাজুরে খামারিদের অবস্থা খুব খারাপ। আমার গ্রামেই প্রায় শতাধিক গরুর একই অবস্থা।

আন্ধারমানিক গ্রামের মোঃ মজনু জানান, আমার গরুর গতরের সব জায়গায় গুটি গুটি উঠে প্রচুর জ্বর আইছিলো। অসুখের প্রথমদিন ১২০০ টাকা দিয়ে পশু হাসপাতালের ডাঃ এর কাছ থেকে ইনজেকশন কিনে দেয়া হয়। তারপর প্রেসক্রিপশন লিখে দিতো,সেই ঔষুধ এনে প্রতিদিন দিতো। আর ১২/১৩ দিনের মাথায় আমার চারমাসের গরুটি মারা যায়। আমার ভাই সামছুল হকের আরেকটি গরু মারা যায়।

হরিরামপুর উপজেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা মোঃ জহুরুল ইসলাম জেপি নিউজকে বলেন, এই রোগটি ভাইরাসনিত। এর নাম ল্যাম্পিং স্ক্রিন ডিজিজ (এলএসডি), এই রোগটি গত ৩/৪ বছর যাবৎ সারা দেশেই ছড়িয়ে পরেছে। ডেঙ্গুর মতই মশামাছিবাহিত রোগ। এই রোগটি গরুর স্ক্রীনেই বেশি দেখা যায়। মাঝে মাঝে শ্বাস কষ্ট দেখা দিতে পারে। এই রোগের কোন ভ্যাকসিন আমাদের দেশে নেই। এই উপজেলায় আনুমানিক প্রায় ২ থেকে ৩% গরু আক্রান্ত হয়েছে। এই রোগ থেকে পুরোপুরি সুস্থ্য হতে প্রায় ১ থেকে দেড় মাস সময় লাগে। অতিরিক্ত অর্থ আদায়ের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমার অফিস থেকে একের অধিকবার কেউ সেবা দিতে গেলে ভুক্তভোগীরা বিরক্ত হতে পারে। দু এক জায়গায় এ রকম হতে পারে বলেও স্বীকার করেন তিনি।

শেয়ার করুন

এ বিভাগের আরও খবর
© All rights reserved © 2014 Amar News
Site Customized By Hasan Chowdhury