1. hasanchy52@gmail.com : admin :
  2. amarnews16@gmail.com : Akram Hossain : Akram Hossain
শনিবার, ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ০২:৫৭ পূর্বাহ্ন

গরম থেকে বাঁচতে চীনাদের ‘ফেসকিনি’ অস্ত্র

  • প্রকাশের সময় : শনিবার, ২৬ আগস্ট, ২০২৩
  • ১৭৬ বার দেখা হয়েছে

আক্ষরিক অর্থে বিশ্ব এখন আগুনে জ্বলছে। কারণ আমেরিকা, ইউরোপ এবং এশিয়ায় অভূতপূর্ব তাপপ্রবাহ; যার ফলে থার্মোমিটারের পারদ এখন সর্বোচ্চ উচ্চতায় অবস্থান করছে। রেকর্ড-ব্রেকিং তাপমাত্রার সঙ্গে মানুষ লড়াই করে ক্লান্ত। আমেরিকার বেশ কয়েকটি রাজ্যে চলছে তীব্র দাবানল।

বৈশ্বিক জলবায়ু তার আসল রূপ দেখাতে শুরু করেছে। ফলে একটি ভীতির আভাস দিচ্ছে কয়েকটি দেশের বর্তমান তাপমাত্রা। যদিও এ অবস্থা কিছু লোকের জন্য আশীর্বাদ হয়ে এসেছে। কারণ তাদের ব্যবসার নতুন ক্ষেত্র তৈরি হয়েছে। যেমন— বৈদ্যুতিক পাখা তৈরি প্রতিষ্ঠান এবং পানীয় কোম্পানি।

এদিকে তীব্র গরমে পুড়ছে চীন। চারদিকে যেন লু হাওয়া বইছে। কেউ যদি জিনজিয়াং অঞ্চলের পর্বতগুলো অতিক্রম করেন, তখন তার মনে হবে জলন্ত অগ্নিকুণ্ড অতিক্রম করছেন! চীনে বাতাসের তাপমাত্রা ৩৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছাড়িয়ে গেছে। দেশটির কিছু অঞ্চলে ভূ-পৃষ্ঠের তাপমাত্রা ৮০ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত ছুঁয়েছে। দেশটির বাসিন্দা, ভ্রমণার্থীরা ছোট ছোট পোর্টেবল ফ্যান নিয়ে ঘুরছেন। রোদের তীব্রতা থেকে শরীর বাঁচাতে গা ঢেকে চলাফেরা করছেন; কেউ কেউ পরছেন হ্যাট।

চীনে রোদ ও তীব্র গরম থেকে বাঁচতে ‘ফেসকিনি’ নামে এক ধরনের পোশাক পরছেন স্থানীয় মানুষ। দিনদিন এই ফেসকিনি পোশাক ফ্যাশন হিসেবে জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। এই পোশাকে চোখ-মুখের জন্য সামান্য অংশ কাটা থাকে। আর পুরো মুখ ঢেকে রাখার জন্য ফ্যাশনেবল ডিজাইন করা হয়েছে।

তা ছাড়া দুই হাত ঢাকার জন্য থাকে আলাদা হাতা। চওড়া কোণাওয়ালা হ্যাট ও অতিবেগুনি রশ্মি-নিরোধক কাপড়ে তৈরি জ্যাকেট। জ্যাকেটও ফেসকিনির অংশ। এই পোশাকে ক্ষতিকারক রশ্মিকে আটকে দেয়ার মতো সক্ষমতা রয়েছে। এটি পূর্ব এশিয়ায় অত্যন্ত জনপ্রিয়। বিশেষ করে মধ্যপ্রাচ্যে এমন পোশাকের প্রচলন আগে থেকেই ছিল। তবে সেগুলো চীনের তৈরি ফেসকিনির মতো কার্যকরী ছিল না।

ওয়াং নামে একজন ফেসকিনি বিক্রেতা ব্রিটিশ গণমাধ্যম রয়টার্সকে বলেন, ‘দুই-তিন বছর আগের মহামারির তুলনায় এখন বিক্রি অনেক ভালো। এ বছর বিক্রির পরিমাণ অনেক বেড়েছে। পূর্ব এশিয়ার অনেক নারী ভোক্তা ফর্সা ত্বক পছন্দ করেন। দক্ষিণ কোরিয়াসহ এ অঞ্চলে রোদ থেকে সুরক্ষা প্রদানকারী পণ্য ফেসকিনি ব্যাপক জনপ্রিয় হচ্ছে।

বেইজিংয়ের পর্যটন এলাকায় মায়ের সঙ্গে বেড়াতে এসেছে লি জুয়ান। তাদের দুজনের পরনেই ফেসকিনি। তাদের চেহারা প্রায় পুরোটাই ঢাকা। ১৭ বছর বয়সী শিক্ষার্থী লি জুয়ান বলেন, ‘আমার মূল উদ্বেগের বিষয় হলো চর্মরোগ বা সূর্যের আলো থেকে মুখে দাগ পড়ে যাওয়া। আর এ থেকে বাঁচতে আমারা দুজনে ফেসকিনি পড়েছি। এতে বেশ সুফলও পাচ্ছি। এই পোশাকে সম্পূর্ণ শরীর আবৃত থাকলেও বিশেষ ধরনের কাপড়ের কারণে আরামদায়ক এবং গরম থেকে বাঁচার অস্ত্র।’

রাজধানী বেইজিং-এর ৩৪ বছর বয়সী এক টুপি ব্যবসায়ী জানান, রোদের কারণে এখন মুখ ঢেকে চলতে হচ্ছে। তিনি বেইজিংয়ের শহরতলির পর্যটন এলাকায় ঘুরে ঘুরে টুপি এবং পোশাক বিক্রি করছিলেন। তিনি বলেন, ‘পূর্ব এশিয়ার অনেক মহিলা গ্রাহক ফর্সা ত্বকের জন্য এবং সূর্যের রশ্মি থেকে সুরক্ষা পাওয়ার জন্য আমার কাছ থেকে টুপি ও হাত ঢাকার পণ্যগুলো ক্রয় করছেন। এখন আমার এই টুপি ও হাত ঢাকার পণ্যগুলো ব্যাপক বিক্রি হচ্ছে।’

বিশ্লেষকরা বলছেন যে এই বছর চীনে সত্যিই এই পোশাকের দারুণ প্রচলনে শুরু হয়েছে। আলিবাবা গ্রুপের শপিং প্ল্যাটফর্মের তথ্য থেকে জানা যায়, গত মাসে অনুষ্ঠিত এই বছরের ৬১৮টি শপিং ফেস্টিভ্যালের সময় ‘নতুন প্রজন্মের সূর্য সুরক্ষা’ নামের এই ফেসকিনি পোশাকের বিক্রি বছরে ১৮০% বৃদ্ধি পেয়েছে। সূর্য সুরক্ষার টুপি ও অংশগুলোসহ আগের বছরের তুলনায় দুই থেকে তিনগুন বেশি গ্রাহক কিনছেন।

পোশাক বিশেষজ্ঞ টিম্যাল বলেন, ‘‘সানস্ক্রিন ব্লাশ মাস্ক’ বিশেষভাবে জনপ্রিয় হয়েছে। মুখোশের নিচের অর্ধেক সাদা এবং উপরে গোলাপী থাকায় দূর থেকে মনে হয়, পরিধানকারী মেকআপ করেছেন।’’

২৬ বছর বয়সী বেইজিংয়ের বাসিন্দা লি হংমেই বলেন, ‘‘এই জাতীয় মুখোশের ভক্ত এবং বাইরে যাওয়ার সময় সূর্য সুরক্ষা জ্যাকেটও পরি। মহামারী চলাকালীন আমি মেকআপ করিনি বললেই চলে! কারণ আমি একটি মুখোশ পরতাম। এখন আবার মেকআপে ফিরে আসতে ইচ্ছা করছে না। আমি বরং সূর্য সুরক্ষা মাস্ক ‘ফেসকিনি’ পরে বাইরে যেতে চাই।

শেয়ার করুন

এ বিভাগের আরও খবর
© All rights reserved © 2014 Amar News
Site Customized By Hasan Chowdhury